দিবানিদ্রার ক্ষেত্রে কতক্ষণ ঘুম উপকারী
দিবানিদ্রা বাঙালির প্রিয় বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। সারা সপ্তাহ পরিশ্রমের পরে ছুটির দিনের দুপুরে ভাত ঘুমের মতো লোভনীয় কাজ আর কীই বা হতে পারে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন অনেকেই দিবানিদ্রাকে এড়িয়ে চলেন শরীরে ক্ষতিকর প্রভাবের ভয়ে। কিন্তু ডাক্তাররা বলছেন, দিবানিদ্রা শরীরের পক্ষে কোনো ক্ষতিকর বিষয় নয়। আসলে কোনো ধরনের ঘুমই শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। বরং দুপুরের ঘুমে উপকারই হয়। এবং সেই উপকারিতা অনেকখানি নির্ভর করে কতক্ষণ ঘুমনো হচ্ছে তার উপর। কতক্ষণ ঘুমোলে ঠিক কী ধরনের উপকার পাওয়া যায়? আসুন, জেনে নিই কী বলছেন ডাক্তাররা—
১০ থেকে ২০ মিনিটের ঘুম : এই ঘুম আপনার সচেতনতা এবং এনার্জি বাড়ানোর পক্ষে আদর্শ। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ঘুমের সময় চোখের র্যাপিড আই মুভমেন্ট হয় খুব কম। ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর মনোযোগ সহকারে কোনো কাজ করা সহজ হয়।
আধ ঘণ্টার ঘুম : সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে এই ধরনের ঘুম ঘুমনোর পরে এক ধরনের জড়তা গ্রাস করে মানুষকে। কারণ আধ ঘণ্টা ঘুমের ফলে শরীরে ঘুমের প্রয়োজন পুরোপুরি মেটে না। ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুক্ষণ কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না।
এক ঘণ্টার ঘুম : স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির পক্ষে এই ঘুম একেবারে উপযুক্ত। এই ধরনের ঘুম সাধারণত প্রকৃতির দিক থেকে গভীর প্রকৃতির হয়। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর সাধারণত কাজে কর্মে এক ধরনের শিথিলতা অনুভূত হয়।
দেড় ঘণ্টার ঘুম : একেবারে পূ্র্ণ দৈর্ঘ্যের ঘুম। এই ধরনের ঘুমের সময় র্যাপিড আই মুভমেন্ট ঘটে, ফলে স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনা থাকে। এই জাতীয় ঘুমের ফলে আবেগের উজ্জীবন ঘটে এবং প্রক্রিয়ামূলক কাজের দক্ষতা (যেমন বাইক চালানো, গিটার বাজানো ইত্যাদি) বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি বাড়ে সৃজনক্ষমতাও। তাছাড়া এই জাতীয় ঘুমের আর একটা ভালো দিক হলো, ঘণ্টা দেড়েক ঘুমের পর জেগে ওঠার সময় সাধারণত কোনও জড়তা অনুভূত হয় না।
দিবানিদ্রা শরীরের পক্ষে নিশ্চয়ই ভালো, কিন্তু ডাক্তাররা সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, খেয়ে ওঠার পরে-পরেই ঘুমোতে শুয়ে পড়া একেবারেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টার ব্যবধান রেখে তবেই ঘুমনো উচিৎ। রাত্রেও এই নিয়ম মেনে চলাই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।