জেনে নিন ভয়ংকর সব মাথাব্যথার কথা
ঘুম থেকে উঠেই মাথাব্যথা শুরু। এমনকি ঘুমোতে যাওয়ার আগেও। একটু পড়তে বসেছেন কি বসেননি। হঠাত্ করেই সেই মাথাব্যথার প্রকোপ। কিন্তু কেন এমন হুটহাট মাথাব্যথা হয়? কারণ তো নিশ্চয়ই আছে। আর এই কারণের ওপর ভিত্তি করেই মাথাব্যথাকে চিকিৎসকেরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন । চলুন জেনে আসি সেগুলো সম্পর্কে।
১. চিন্তাজনিত মাথাব্যথা
এই রকমের মাথাব্যথা থেকে কম-বেশি আমরা সকলেই ভুগে থাকি। সারাদিনের নানাবিধ দুঃশ্চিন্তা, পরিবেশ দূষণ, টিভি বা কম্পিউটারের সামনে বেশি সময় বসে থাকা বা পানি কম খাওয়া হতে পারে এই ব্যথার কারণ। মাথার চারপাশে একটু একটু থাকা এই ব্যথা ভয়াবহ কিছু নয়। এরকমটা হলে শান্ত থাকুন। এটি প্রায়ই হতে পারে। স্থায়ীও হতে পারে কয়েক সপ্তাহ। এই ধরণের মাথাব্যথার হাত থেকে মুক্তি পেতে-
ক. পানি পান করুন বেশি করে
খ. টিভি বা কম্পিউটার ব্যবহারে নিয়ম মেনে চলুন
গ. ব্যায়াম করুন নিয়মিত
ঘ. চিন্তা কমিয়ে দিন এবং দরকারে ঔষধ সেবন করুন
২. মাইগ্রেনের ব্যাথা
মাইগ্রেনের ব্যথা সম্পর্কে কম-বেশি সবাই-ই জানেন। এই ব্যথায় আক্রান্ত মানুষেরা তাদের মাথার খানিকটা অংশ জুড়ে ব্যথা অনুভব করে থাকেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে। সেইসাথে থাকে বমিভাবও। সাধারণত খাবার আর মানসিক চাপের কারণে মাইগ্রেন তৈরি হয়। মাইগ্রেনের ব্যথা থাকাকালীন মানুষ আলো সহ্য করতে পারে না। ফলে অন্ধকার ঘরে থাকতে দেখা যায় তাদের। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে-
ক. ক্যাফেইনজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন
খ. চিকিৎসকের পরামর্শমতন ঔষধ সেবন করুন
গ. সেসব খাবার থেকে দূরে থাকুন যেগুলো খাওয়ার ফলে আপনার মাইগ্রেন সৃষ্টি হয়
৩. ট্রিগেমিনাল নিউরালজিয়া
আমাদের মুখের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া স্নায়ুগুলোতে এই ধরণের ব্যথা অনুভব করি আমরা। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। স্নায়ুতন্তুগুলোর ভেতরে হওয়া সংক্রমণ আর ব্যাধির কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। ঠান্ডা কোন কিছু খাওয়া, ছোঁয়া বা পান করার কারণে হতে পারে এই ব্যথা। এছাড়াও নির্দিষ্ট স্থানে খানিক আঘাতেও তৈরি হতে পারে এই ব্যথা। সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট অব্দি এই ব্যথা অনুভূত হলেও এটি দিনে বেশ কয়েকবার হয়ে থাকে। এই ব্যথার মোকাবেলা করতে-
ক. ইঞ্জেকশন বা এ ধরণের কিছু নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন
খ. ঔষধ সেবন করুন
গ. ব্যথা উদ্রেককারী খাবার ও পানীয় থেকে দূরে অবস্থান করুন
৪. ক্লাস্টার হেডেক
মাইগ্রেন নিউরালজিয়া বলে অনেকে মনে করলেও আসলে এটি একেবারে অন্য রকমের মাধাব্যথা। যার শুরুটা হয় ৩০ বছর বয়সের পরপর। আবার ৩৫ এ এসে এর প্রকোপ নেই হয়ে যায়। নারী- পুরুষভেদে এর আনুপাতিক সংখ্যা অনেকটা ৫:৩। অতিরিক্ত মদ্যপান আর ধুমপানের ফলে হয়ে থাকে ব্যাপারটি। বেশকিছু চিহ্ন আছে এর। এই যেমন- হঠাৎ করে চোখের চারপাশে প্রচন্ড ব্যথা করে ওঠা কিংবা অনিদ্রা, বমিভাব আর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। ১৫ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত এই ব্যথা থাকতে পারে। ক্লাস্টার হেডেককে দূর করতে-
ক. ঔষধ সেবন করুন। তবে একটু দেখে শুনে। কারণ, ঔষধে থাকা লিথিয়াম কার্বোনেট এই ব্যথা দূর করলেও যথেষ্ট পাশ্বপ্রতিক্রিয়া রেখে যায় শরীরে।
খ. সুস্থ বাতাসে নিঃশ্বাস নিন
গ. নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন ও থাইরয়েড ও কিডনি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা দেখুন।