প্লাস্টিক বোতলে বারবার পানি পানে লিভার-কিডনি বিকল
দোকানে মিনারেল ওয়াটার, কোকা-কোলা, সেভেনআপ, স্প্রাইট, আরসি কোলা ইত্যাদি পানীয় এবং বিভিন্ন ফলের জুস পাওয়া যায় প্লাস্টিকের বোতলে। এ বোতলগুলো পলিইথিলিন টেরেপথেলেট নামের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। যা একবার ব্যবহার্য। কিন্তু এ বোতলগুলো হরহামেশাই একাধিকবার ব্যবহার হচ্ছে। আমরা প্রায় সবাই এগুলো সপ্তাহ বা মাস ধরে বারবার ব্যবহার করি। বস্তুত যতোদিন নষ্ট না হচ্ছে, ততোদিনই ব্যবহার করি।
বাইরে বের হলে সঙ্গে পানি বহন বা ফ্রিজে রাখার জন্য এই প্লাস্টিকের বোতলই ভরসা। কারণ আলাদা করে পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে না। আমরা ভেবে থাকি, বোতলে পানিই তো ছিল, ময়লা হওয়ার সুযোগ কোথায়। কিন্তু আসলেই কি তাই? তাহলে সাবধান। প্লাস্টিক বোতলের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে মহাবিপদ। একই প্লাস্টিক বোতল বারবার ব্যবহারের ফলে শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে বাইরে থেকে পানি কিনে খান অনেকে। আবার সেই পানির বোতলেই পানি ভরে ব্যবহার করেন। বারবার এই প্লাস্টিক বোতল ব্যবহারের ফলে জন্ডিসসহ বিভিন্ন পেটের সমস্যাজনিত রোগ দানা বাঁধছে শরীরে।
যাদবপুরের কেমিক্যাল ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, ‘বাজারে যেসব প্লাস্টিকের বোতল বিক্রি হয়, সেগুলো নষ্ট হয় না। বহুদিন থেকে যায়। আর এই প্লাস্টিকের বোতল বারবার ব্যবহার করলে তার মধ্যে প্যাথজেনিক ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।’
সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, ‘আমরা পানি পান করি। তারপর সেই বোতলের মুখ ভালো করে বন্ধ করি না। বোতলে আবার পানি ভরলে, চিনি বা গ্লুকোজ জাতীয় তরল ভরলে তা থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। এর থেকে জন্ডিস, লিভার ও কিডনির সমস্যা হতে পারে।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গবেষণার এক সদস্য উত্তরীয় রায় বলেন, ‘প্লাস্টিকের বোতল ভালো করে না ধুয়ে আবার পানি পান করলে ব্যাকটেরিয়া শরীরে যেতে পারে। তবে যে ব্যাকটেরিয়া সবচেয়ে বেশি শরীরে ঢোকে তা হল কে টেরিজেনা।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিশুদের যেভাবে প্লাস্টিকের ফিডিং বোতলে দুধ খাওয়ানো হয়, তাতে শিশুদের শরীরেও ব্যাকটেরিয়া যায়। যার ফলে শিশুদের ফুসফুসের সমস্যা হতে পারে। এই বিপদ থেকে বাঁচতে প্লাস্টিকের বোতল ভালো করে ধুয়ে পানি পান করতে হবে।’ পারলে প্লাস্টিকের বোতল বারবার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।