জেনে নিন হৃৎপিন্ডকে সুস্থ রাখার ৬টি উপায়
প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন। রোগটি ভয়ংকর জেনেও অনেক সময় আসচেতনভাবে আমরা নিজেরাই নিজেদের নিয়ে যাই হৃদরোগের ঝুকির মুখে। দৈনন্দিন জীবনের কিছু স্বাস্থ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আমাদের রাখতে পারে সুস্থ, বাড়াতে পারে আয়ু এবং রক্ষা করতে পারে মোটা অংকের চিকিৎসার খরচ থেকে। আসুন জেনে নিই, হৃৎপিন্ডকে সুস্থ রাখার ৬টি উপায় যা আছে আপনার হাতের নাগালেই।
* নিজের ডায়েট এবং ওয়েট ম্যানেজ করুন
খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম শরীরে বাড়তি মেদ এবং স্থূলতা তৈরি করে। এর ফলে হৃৎপিন্ডের উপর চাপ পড়ে। হতে পারে করনারি আর্টারি ডিজিজ, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ এবং স্ট্রোকসহ নানান ব্যাধি। তাই নিজের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান। নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। চিকিৎসকের পরামর্শে ঠিক করুন আপনার নিজস্ব ডায়েট চার্ট।
* শরীরচর্চা করুন
নিজেকে সুস্থ্য রাখতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে বিভিন্নরকম স্বাস্থ্যঝুকি থেকে রক্ষা করবে। আপনি যতই অলস জীবনযাপন করবেন ততই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে আপনার। হজমের সমস্যা হবে, কলেস্টেরল বাড়বে, বাড়বে ব্লাড সুগারও। প্রতিদিন মাত্র ১ ঘন্টা ব্যায়াম করে এসব স্বাস্থ্যঝুকি নিয়ে আসতে পারেন শূন্যের কাছাকাছি।
* ধূমপান ছাড়ুন
একজন ধূমপায়ী নিজেই ডেকে আনেন হৃদরোগ। আর সব ভাল ভাল অভ্যাসের পাশে এই একটিমাত্র বদভ্যাস আপনাকে মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারে। হার্টের সমস্যার পাশাপাশি ধূমপানের কারণে হতে পারে লাঞ্চের ব্যাধি, ক্যানসার, সময়ের আগেই বুড়িয়ে যাওয়াসহ আরও অনেক সমস্যা। তাই দীর্ঘায়ু চাইলে আজই ধূমপান ছাড়ুন। ইচ্ছা থাকলে কোনকিছুই অসম্ভব নয়।
* কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনুন
হৃদরোগের ঝুকি কমাতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে কলেস্টেরল দুই ধরণের হয়। এইচ ডি এল হল ভাল কলেস্টেরল, এটি বেশী থাকাই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তবে এল ডি এল স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। নিয়মিত পরীক্ষা করুন আপনার এল ডি এল নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা! না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে ডায়েট করুন, লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনুন।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস আপনার উচ্চরক্তচাপের কারণ। কিন্তু দুশ্চিন্তা করার সমস্যাটিকে আমরা কখনোই খুব একটা গুরুত্ব দিই না। স্ট্রেস নিতে নিতে রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটলেও আমরা ভেবে দেখি না কি করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অথচ এর কারণে হতে পারে হার্ট এটাক, হতে পারে স্ট্রোক। নিজেক স্ট্রেসমুক্ত রাখুন, রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
* মানসিক শান্তি বজায় রাখুন
আমাদের মানসিক অবস্থার প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্য। সবসময় দুশ্চিন্তা, হতাশা, বিষন্নতার মধ্যে থাকেন এমন মানুষ অনেক বেশী হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহন করেন। তাই, যতটা সম্ভব নিজের মনকে শান্ত রাখুন। জীবনে অনেক সমস্যা থাকবে। কিন্তু চেষ্টা করুন তার মাঝেই ভাল থাকাকে খুঁজে নিতে। মেডিটেশন করুন, প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। হার্টকে ভাল রাখুন।