৩২৫ মিলিয়ন মানুষ হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’রোগে আক্রান্ত
বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন মানুষ হেপাটাইটিস বি অথবা সি রোগে ভুগছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। আর হেপাটাইটিসে মৃত্যুর হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে শুক্রবার একথা বলা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বিশ্বে হেপাটাইটিস পরিস্থিতিকে জনস্বাস্থ্যের প্রতি গুরুতর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে ‘জরুরি’ ভিত্তিতে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্বে ২০১৫ সালে হেপাটাইটিসে ১০ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ মারা গেছে। এ সংখ্যা যক্ষ্মা (টিবি) ও এইচআইভি আক্রান্তদের মৃত্যুর চেয়ে কম নয়। বরং, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০০০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এইচআইভি ও টিবি’র তুলনায় হেপাটাইটিসে মৃত্যুর হার প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।
হেপাটইটিস রোগের ক্ষেত্রে প্রায়ই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় না। কিন্তু ‘বি’ ও ‘সি’ টাইপ হেপাটাইটিস থেকে যথাক্রমে লিভার সিরোসিস এবং ক্যানসার হতে পারে।
এছাড়াও ওইসব রোগে আক্রান্তদের সচেতনতার অভাবে সেগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে হেপাটাইটিস ‘বি’- মূলত শারীরিক প্রক্রিয়ায় রক্ত ও বীর্যের মাধ্যমে ছড়ায়। যদিও মাত্র ৯ শতাংশ ব্যক্তি তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবগত।
অন্যদিকে, হেপাটাইটিস ‘সি’- প্রাথমিকভাবে রক্তের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এতে আক্রান্তদের ২০ শতাংশ তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবগত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার ও চিকিৎসার সুবিধার অভাবের কারণে লাখ লাখ মানুষ ধীরে ধীরে যকৃতের বিভিন্ন রোগ ও ক্যানসার এবং পরিশেষে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।
হেপাটাইটিস ‘বি’ মূলত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেখা যায়। চীন, মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এর অন্তর্ভুক্ত। অনুমান করা হয়, এ অঞ্চলের ১১৫ মিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
এর পরেই আফ্রিকার অবস্থান। আফ্রিকার ৬০ মিলিয়ন মানুষ হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। তবে আশার কথা, বর্তমানে হেপাটাইটিস ‘বি’-এর কার্যকর ভ্যাকসিন রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে বলা হয়েছে, হেপাটাইটিস ‘সি’ সাধারণত অনিরাপদ ইনজেকশন ব্যবহারের জন্য হয়ে থাকে এবং মাদকসেবিদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই।
ইউরোপ এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলেই মূলত ‘হেপাটাইটিস সি’-এর প্রকোপ বেশি দেখা যায় এবং ওই দুইটি অঞ্চলের যথাক্রমে ১৪ মিলিয়ন এবং ১৫ মিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত।