জেনে নিন অসুস্থ অবস্থায় কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন
অসুস্থ অবস্থায় যে ৯ খাদ্য ও পানীয় এড়িয়ে চললে আপনি আরো ভালো থাকবেন:
১. কফি
কখন এড়িয়ে চলবেন: যে কোনো ধরনের রোগের কারণে সৃষ্ট অসুস্থতায়। তবে বিশেষ করে যখন পেটেন পীড়ায় আক্রান্ত হবেন।
কারণ: কফিতে থাকা ক্যাফেইন মূত্রবর্ধক খাদ্য উপাদান। ফলে কফি পান করলে আপনার বেশি বেশি প্রস্রাবের বেগ হতে পারে এবং পরিণতিতে আপনার দেহে পানিশুন্যতাও দেখা দিতে পারে।
এতে ভাইরাস এবং অন্য কোনো সংক্রমণজনিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল হয়ে আসে।
ডায়রিয়ার সময় ক্যাফেইন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। দেহে পানিশুন্যতা তৈরি এবং পাকস্থলীর খাদ্য হজমকারী অংশের মাংসপেশিতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে ক্যাফেইন ডায়রিয়াকে আরো তীব্র করে তুলতে পারে।
২. কমলার জুস
কখন এড়িয়ে চলবেন: যখন কাশি বা গলদাহ হবে।
কারণ: কমলার জুসে থাকা অ্যাসিড সাধারণত সতেজতা ফিরিয়ে আনে। কিন্তু যখন আপনার কাশি হবে বা ঠাণ্ডা লাগবে তখন এর অ্যাসিড আপনার গলায় আঘাত হানতে পারে।
এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ইতিমধ্যেই আপনার প্রদাহে আক্রান্ত গলায় আরো বেশি জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে।
৩. মিষ্টান্ন
কখন এড়িয়ে চলবেন: যে কোনো ধরনের অসুস্থতায় তবে বিশেষ করে পেটের পীড়া হলে।
কারণ: পরিশোধিত চিনি আপনার রক্তের শ্বেতকনিকাগুলোর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা খর্ব করে। কুকি, ক্যান্ডি বা চিনিযুক্ত খাদ্যশস্য খাওয়ার পর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও দূর্বল হয়ে আসে।
ফলত, যেসব জীবাণু আপনাকে অসুস্থ করে তোলে সেসবের বিরুদ্ধে আপনার রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি নিজের কার্যকারিতা হারায়।
৪. সোডা
কখন এড়িয়ে চলবেন: যে কোনো ধরনের অসুস্থতায় তবে বিশেষ করে পেটের পীড়া হলে।
কারণ: কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত সোডাও দেহে পানিশুন্যতা তৈরি করে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা খর্ব করে এবং হজমপ্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
৫. কুড়মুড়ে জলখাবার
কখন এড়িয়ে চলবেন: কাশি বা গলদাহ হলে।
কারণ: পটেটো চিপস, গ্র্যানোলা বা ক্রিসপি টোস্ট আপনার গলায় শিরিষ-কাগজের মতো লাগবে। আর আপনি গলাকে যত বেশি জ্বালাতন করবেন আপনার সুস্থ হতেও তত বেশিই সময় লাগবে। ফলে আপনার দুর্দশা শুধু দীর্ঘায়িত হবে।
৬. অ্যালকোহল
কখন এড়িয়ে চলবেন: যে কোনো ধরনের অসুস্থতায় তবে বিশেষ করে পেটের পীড়া হলে।
কারণ: অ্যালকোহলও মূত্রবর্ধক। ফলে পানিশুন্যতাজনিত রোগের মাত্রাকে আরো তীব্র করে।
এছাড়া অ্যালকোহল হজম প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করে যার ফলে পাতলা পায়খানা এবং ডায়রিয়া আরো তীব্র রুপ ধারণ করতে পারে।
৭. দুধ
কখন এড়িয়ে চলবেন: কফ জমে গলায় গলা ও বুকে গুমোট এবং জমাট বাধলে।
কারণ: দুধে খেলে দেহে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা বা কফ তৈরি হয়। কিন্তু কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই যে, দুধ কম খেলে শ্লেষ্মা বা কফ উৎপাদনও কমে আসে।
তবে অনেকে দুধ খাওয়ার ফলে তাদের কফ গাঢ় হওয়ার কথা বলেছেন। আপনারও যদি তেমন সমস্যা হয় তাহলে দুধ এড়িয়ে চলুন।
৮. ভাজা বা চর্বিযুক্ত খাবার
কখন এড়িয়ে চলবেন: পেটের পীড়া হলে।
কারণ: চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এর ফলে তীব্র বমির উদ্রেক হতে পারে এবং গলা ও বুক দিয়ে অ্যাসিড উদগীরণ হয়ে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
এসব খাবার ডায়রিয়ার তীব্রতাও বাড়ায়।
৯. মশলাযুক্ত খাবার
কখন এড়িয়ে চলবেন: সর্দি হলে।
কারণ: লাল মরিচ ও ঝাল সসে আছে ক্যাপসাইসিন নামের একটি উপাদান যা আপনার নাসারন্ধ্রকে আরো উত্তেজিত করে সর্দির তীব্রতা বাড়াবে।
সুতরাং আপনি যদি ইতিমধ্যেই সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং আপনার নাক দিয়ে পানি পড়ে তাহলে মশলার এসব উপাদান আপনার নাক দিয়ে পানি পড়া আরো বাড়াবে।
অন্যদিকে, আপনার বুকে যদি কফ জমা হয়ে থাকে তাহলে মশলা সেগুলোকে তরলায়িত করে পরিষ্কার করবে যাতে আপনার আর শ্বাস নিতে কষ্ট হবে না। সূত্র: ফক্স নিউজ