শতকরা ১০ জনের মধ্যে একজন মানসিক অবসাদে ভোগেন !!!
সবসময় কান্নাকাটি বা মনখারাপ করে বসে থাকা মানসিক অবসাদের একমাত্র লক্ষণ। ভয়ানক মানসিক ভারসাম্যহীনতা এই দেশের ১০% মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এর লক্ষনগুলি সবসময় প্রকট নয়। জোরে গাড়ি চালানো, সমস্ত কিছুর মধ্যে খুঁত খুঁজে বার করা বা সারাক্ষণ তিতিবিরক্ত হয়ে থাকাও মানসিক অবসাদের ফসল হতে পারে।
জার্মানি উইংসের কোপাইলটের ইচ্ছাকৃতভাবে প্লেন ক্র্যাশ করার ঘটনার (এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০জন) পর মানসিক অবসাদ যে কতটা মারাত্মক হতে পারে তা নিয়ে এখন সারা বিশ্বেই প্রবল চর্চা চলছে। জানা গেছে বিমানটির কো-পাইলট আনদ্রিয়াজ লুবটিজ সাঙ্ঘাতিক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই মুহূর্তে এই বিষয়ে ব্যপক সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। যে হারে মানসিক অবসাদের কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে মানসিক অবসাদ মানুষের সামগ্রিক শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ”ভারত সহ সারা বিশ্বে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে প্রতি ৫জন মহিলার মধ্যে একজন, মানসিক অবসাদে ভোগেন। প্রতি ১০ পুরুষের মধ্যে একই সমস্যায় ভোগেন একজন।
একজন প্রতিবেশী, যিনি প্রতিবার দুম করে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন, একজন অফিসকর্মী যিনি প্রত্যেকবার ডেডলাইন পূরণে ব্যর্থ হন, একজন শিক্ষক যাঁর রূঢ় বাক্যবাণ পড়ুয়াদের কান্নার কারণ হয়, বেপড়োয়া যে টিনএজার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর জেনেও সিগারেটের নেশা ছাড়তে পারে না, যে ব্যক্তি মদের প্রতি অতি আসক্ত, আসলে এরা সম্ভবত প্রত্যেকেই মানসিক অবসাদ বা হতাশার শিকার।
”মানসিক অবসাদের বিবিধ লক্ষণ থাকতে পারে। অত্যাধিক অবসাদ, মনোযোগের অভাব, সহযে ভুল করা, কাজের শেষেই বাড়ি দৌড়ানো, গেজেটের প্রতি অতি আসক্তি, ইমেল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার সহকর্মীদের সমালোচনা ডিপ্রেশনের ফল হতে পারে।” জানিয়েছেন মনোচিকিৎসক ডাঃ হরিশ শেট্টি। তাঁর মতে মানসিক অবসাদ এই মুহূর্তে মহামারীর আকার নিয়েছে।
তবে ডাক্তাররা জানিয়েছেন একমাত্রা আশার কথা এটাই আগের তুলনায় এই নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন এই সময়ে সব থেকে বেশি সাহায্য করতে পারেন বন্ধু ও পরিবারের লোকজন। এই সময় খাওয়ার অভ্যাস, হবি ও ঘুমের কায়দায় পরিবর্তন প্রয়োজন। ”এক ব্যক্তি যা করতে ভালবাসতেন হঠাৎ করে যদি সেই কাজ করা বন্ধ করে দে্ন, সেটা তাহলে বুঝতে হবে সে অবসাদগ্রস্থ। ডিপ্রেশনের ফলে অনেক সময় আচার ব্যবহারের পরিবর্তন ধীরে ধীরে হয়। ফলে কেউ অবসাদগ্রস্থ সেটা বুঝতেই অনেক সময় দীরি হয়ে যায়। অনেক সময় ছোটবেলার কোনও ঘটনা বড় হলে অবসাদের কারণ হয়ে ওঠে।” জানিয়েছেন ডাঃ সোনাওয়ালা।
Related Posts
Comments
comments