অধিকাংশ মানুষের এ বিষয়টি আগে জানা ছিল না যে, ধূমপানের ফলে মানুষের ডিএনএ পরিবর্তিত হয়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট। ধূমপানের ফলে আমাদের দেহের নানা ক্ষতিকর প্রভাবের কথা অনেকেই জানি।

সম্প্রতি গবেষকরা এক নতুন গবেষণার ভিত্তিতে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন যে, ধূমপানের ফলে ডিএনএ পরিবর্তিত হয়। ধূমপানের ফলে ১৫০ ধরনের টিউমার হতে পারে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। আর ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরও এগুলো সারে না।

ডিএনএর ওপর ধূমপান কেমন প্রভাব বিস্তার করে সে বিষয়টি নির্ণয় করা গেলে ধূমপানসংক্রান্ত ক্যান্সার ও টিউমারের চিকিৎসা করা আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

এ বিষয়ে গবেষণাটির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স জার্নালে। আর এতে উঠে এসেছে শুধু ফুসফুসেরই পরিবর্তন করে না ধূমপান। এটি পরবর্তীতে মানুষের ডিএনএও পরিবর্তন করে দেয়। এ ছাড়া এটি মানুষের মুখ, ব্লাডার ও যকৃতে প্রভাব বিস্তার করে।

এ বিষয়ে গবেষকদের একজন ড. লুডমিল অ্যালেক্সানড্রোভ। তিনি লস অ্যালমস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই জানতে পেরেছি ধূমপানের সঙ্গে দেহের ক্যান্সারের সম্পর্ক। কিন্তু এখন আমরা আরও জানতে পেরেছি এটি মলিকিউলারে পরিবর্তন আনে এবং এতে ডিএনএ পরিবর্তিত হয়ে যায়।’

আগে ধারণা ছিল, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পাঁচ বছর পর থেকেই শরীরে ধূমপানের কুপ্রভাব কমতে থাকে এবং দেহে সেই অর্থে কোনোরকম সমস্যা থাকে না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ৩০ বছর পরও ভুগতে হবে ধূমপায়ীদের। যখনই কেউ ধূমপান ছেড়ে দেন, ঠিক তার পর পরই শরীরের বেশির ভাগ ডিএনএ মিথাইলেশন সিগন্যাল আবার প্রথমবারের মতোই হয়ে যায় এবং শরীর নিজে নিজেই তামাকের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে আরোগ্য লাভ করার চেষ্টায় থাকে। কিন্তু তার পর আবারও যে ঘুরে আসে ধূমপানের ক্ষতিকারক প্রভাব, তা জানা গেল এই গবেষণা থেকে।

ধূমপানের কারণে কেন ক্যান্সার হয় এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্যও এখন এ গবেষণার ফলাফল কাজে লাগবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

ধূমপানের ফলে মানুষের দেহের শুধু ক্যান্সারই হয় না, এতে আরও বেশ কিছু ক্ষতি হয়।