কোন কোন মানুষ কেন বেশি মদ খান? কী বলছে নতুন গবেষণা?
কেউ কেউ বেশি খান, কেউ কম খান। কী কারণে কেউ কেউ বেশি মদ্যপান করেন? এই নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন ফিনল্যান্ডের এক গবেষক দল। সেই অনুসন্ধানে কী নতুন তথ্য উঠে এল জেনে নিন।
মদ্যপানের সময়ে মানুষের মস্তিষ্কে কী কী পরিবর্তন হয় যার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান করতে চায় মানুষ? এই নিয়ে নতুন একটি গবেষণা প্রকাশ্যে এল। নতুন এই গবেষণাটি মদ্যপানের নেশা কাটানোর চিকিৎসায় নতুন দিক নির্দেশ করবে বলেই গবেষকদের ধারণা। মদ্যপান করলে মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যুতে কিছু হরমোনাল এবং নিউরোট্রান্সমিটার পরিবর্তন হয় যা মদ্যপান যাঁরা করেন না তাঁদের মধ্যে দেখা যায় না। সমস্ত মদ্যপদের মস্তিষ্কে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। গবেষণা বলছে, মোটামুটিভাবে দু’ধরনের মদ্যপ রয়েছেন— একদল যাঁরা কোনও মানসিক উদ্বেগ থেকে মদ্যপান করেন অর্থাৎ টাইপ ১ অ্যালকোহলিক এবং আর এক দল যাঁরা টাইপ ২ ইমপালসিভ অ্যালকোহলিক। প্রথম দল একটু বেশি বয়সে মদ্যপান ধরেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্ট্রেসের কারণে। দ্বিতীয় দল অনেক অল্প বয়স থেকেই মদ্যপ এবং এঁদের মধ্যে সমাজবিরোধী মনোভাব বেশি দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে মদ্যপান করলে এই দু’ধরনের মদ্যপদের মস্তিষ্কেই ডিহাইড্রোপিয়ানড্রোস্টেরন নামে এক ধরনের স্টেরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং এই হরমোন তাদের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা মূল স্নায়ুতন্ত্রকে আচ্ছন্ন করে। এর কারণেই তারা প্রচুর পরিমাণ মদ্যপান করেই চলেন। জানা গিয়েছে, এই স্টেরয়েড হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীর আস্তে আস্তে অনেকটা বেশি পরিমাণ মদ্যপানে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলে একটা সময় পরে আর অল্প মদ খেলে নেশা হতে চায় না। তখনই আরও বেশি করে মদ্যপান করে মানুষ। তবে গোটা বিষয়টি শুধুই শারীরবৃত্তীয় নয় এর সঙ্গে সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ও জড়িয়ে রয়েছে যাকে মদ্যপানে নির্ভরশীল মানুষের সোশ্যাল অ্যাংজাইটি টাইপ বিহেভিয়ার বলা হয়। নতুন এই তথ্যগুলি মদের নেশা কাটানোর থেরাপি বা চিকিৎসায় কাজে লাগবে বলেই গবেষক দলের ধারণা।
Related Posts
Comments
comments