৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শনিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

পিরিয়ডের সময় তলপেটে ব্যথায় যা করতে হবে !!!

মেয়েদের মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা আমাদের দেশে একটা সাধারণ ব্যাপারই  বলতে হয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ ব্যাথার পরিমাণ যখন এমন হয় যে তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে, তখনই কেবল এটাকে অসুস্থতা বা ডিজমেনোরিয়া বলে গণ্য করা হয়।  কিন্তু একটু সচেতন হলেই এই ব্যথা এড়িয়ে চলা যায়।
ডিজমেনোরিয়া ২ প্রকার হয়ে থাকেঃ 
প্রাইমারী ডিজমেনোরিয়া ও সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া।
প্রাইমারী ডিজমেনোরিয়া
সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ বছরের তরুণীরা এতে বেশি ভোগেন। এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা নেই, তবু কারণ হিসেবে কিছু বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়ে থাকে। যেমন, মাসিকের সময় ব্যথার প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া, ঘরে-বাইরে অশান্তি, পরীক্ষার চাপ, বেকারত্ব, ভগ্নস্বাস্থ্য ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণায় কিছু হরমোনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
তবে অন্তত একবার গর্ভধারণ এবং স্বাভাবিক প্রসবের পর এ সমস্যাটি আপনা আপনি সেরে যায়। গর্ভধারণ ও প্রসবের মাধ্যমে জরায়ু পরিপক্বতা লাভ করে এবং সাধারণত এরপর ডিজমেনোরিয়া হয় না। মাসিক শুরুর সঙ্গে এ ব্যাথা শুরু হয় এবং প্রথম দিনের পর আর ব্যাথা থাকে না। তলপেটে মোচড়ানো ধরনের ব্যাথা হয়। কোমরে ব্যাথা হতে পারে, ঊরু বা থাইয়ের ভেতরের অংশেও ব্যাথা হতে পারে। এ সময় ব্যাথার প্রভাবে রোগীকে বিমর্ষ দেখায়। তার বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে।
সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া
অনেক গাইনি রোগের কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হতে পারে, যেমন-তলপেটের ইনফেকশন, জরায়ুর টিউমার, পলিপ, জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি। বিবিধ কারণ থাকায় মাসিকের সময় ব্যথার ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে।
সাধারণত মাসিক চক্রের শেষ সপ্তাহে তলপেটে ভার ভার অনুভূত হয়। মাসিক শুরুর তিন-চার দিন আগে থেকেই ব্যথা হয়। মাসিক শুরু হলে ব্যথা কমতে থাকে। সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়ার জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই। প্রথমে অন্তর্নিহিত রোগটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। এরপর সে রোগের চিকিৎসাতেই ভালো হবে প্রতি মাসের এ যন্ত্রণা।
মাসিকে পেটে ব্যাথা সমাধান
নিচে মাসিকের সময় পেট ব্যাথা সমাধানের কিছু সহজ পদ্ধতি ছবি সহয় উপস্থাপন করা হলো –
সাধারণ পদ্ধতিঃ
কোন বোতলে গরম পানি ভরে বা কাপড় গরম করে তলপেটে ২০/২৫ মিনিট ছ্যাক লাগাতে হবে। এটা সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন করে করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে মাসিকের সময় ব্যাথা কমে যাবে।
৩ মিনিট গরম পানিতে কোমর ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। পরের ২/১ মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে। এভাবে ২০/২৫ মিনিট সিজ বাথ নিতে হবে। এটাও সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন নিতে হবে। শুধু পানি বা পানিতে কিছু লবন, বেকিং সোডা বা ভিনেগারও ব্যবহার করা যায়।
কেজেল ব্যায়ামঃ
কেজেল ব্যায়াম/কেজেল এক্সারসাইজ/ কেজেল এক্সারসাইজ (Kegel Exercises) প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রোণী এলাকা (পেলভিস) অর্থাৎ তলপেটের নিম্নভাগের মাংশপেশীর সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। এখানে কেজেল ব্যায়াম কিভাবে সঠিক ভাবে করতে হয় তার একটা স্টেপ বাই স্টেপ গাইড দেয়ার চেষ্টা করা হলো। কেজেল ব্যায়াম শ্রোর্ণী মেঝের পেশীকে দৃঢ এবং শক্তিশালী করে যা জরায়ু, মূত্রথলি এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে সাহায্য করে। আপনি প্রায় যে কোনো সময়ে শুয়ে বা বসে কেগেল ব্যায়াম করতে পারেন। এমনকি গর্ভবতী অবস্থায়ও করা যেতে পারে।
কেন কেজেল ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ সেটা আগে বুঝতে হবে। অনেক কারণে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান প্রসব, বয়স বৃদ্ধি, এমনকি মুটিয়ে গেলে বা ওজন বৃদ্ধি পেলেও এমন হতে পারে। এ কারণে শ্রোণী অঙ্গ থেকে যোনির অনেক পেশী ঢিলা হয়ে নিচের দিকে নেমে যেতে পারে। এতে প্রস্রাবের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া সহ আরো অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
কেজেল ব্যায়াম কিছু অবশ্যম্ভাবী ঘটনাকে বিলম্বিত করে, শ্রোর্ণী অঙ্গ স্থানচ্যুতি এবং সম্পর্কিত উপসর্গ প্রতিরোধ করে আপনার তারুণ্য অনেকদিন ধরে রাখতে পারে। এছাড়া যাদের চরমপূলক লাভে সমস্যা হয় তাদের জন্যও এটা উপকার হতে পারে।
কিভাবে কেজেল ব্যায়াম করতে হয়- সেটা জানার আগে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের পেশী চিহ্নিত করে নিতে হবে এবং কিভাবে পেশী সংকুচন এবং প্রসারণ করতে হয়।
প্রথমে পেশী খুঁজে নিতে হবে। যোনির ভিতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে পার্শ্ববর্তী পেশীগুলো সংকুচন করার চেষ্টা করুন। আপনার যোনি আঁটা এবং আপনার শ্রোর্ণী মেঝের পেশীগুলো ঊর্ধ্বাভিমুখী মনে হবে। তারপর পেশী শিথিল করে দিন। দেখবেন শ্রোণীপেশীগুল আবার আগেরঅবস্থানে ফিরে এসেছে।

ohabitlogo

প্রস্রাব করার সময় দু-একবার প্রস্রাব করার প্রবাহ বন্ধ করে দিন। সফলহলে বুঝলেন প্রাথমিক ধাপটা পার হতে পারছেন। (প্রস্রাব করার প্রবাহ বন্ধ করাটা বার বার বা অভ্যসে পরিনত করবেন না।) মূত্রথলি পরিপূর্ণ অবস্থায় বা প্রস্রাব করার সময় কেজেল ব্যায়াম করবেন না। এতে পেশী আরো শিথিল হয়ে যাবে বা প্রস্রাব করা অপূর্ণ থেকে যাবে যা মূত্রনালিতে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
এবার পূর্ণ পদ্ধতি।  শ্রোণী এলাকা (পেলভিস) অর্থাৎ তলপেটের নিম্নভাগের মাংশপেশীর অবস্থান নির্ণয় করা হয়ে গেলে বা বুঝতে পারার পর মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি করবেন। তারপর চেয়ারে বসে বা মেঝে/বিছানায় শুয়ে পড়বেন। পেলভিস মাসল সংকুচন করুন। ৫ সেকেণ্ড ধরে রাখুন। ৫ সেকেণ্ড পরেশিথিল করে দিন। এভাবে একটানা ৪/৫ বার করুন। এভাবে ধীরে ধীরে ৫ সেকেণ্ডের জায়গায় ১০ সেকেণ্ড করে করার চেষ্টা করুন।
শুধু শারীরিক ভাবে নয়, মানসিক ভাবেও পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। ভালো ফলাফলের জন্য শুধু পেলভিস মাসলের উপরই মনোযোগ দেবেন। খেয়াল রাখবেন- পেটের পেশী, উরু, নিতম্বের পেশীতে যেন টান না পড়ে বা সেগুলো সংকুচিতনা হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস ধরে বা বন্ধ রাখবেন না। স্বাভাবিক অবস্থায় যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস নেন, এই ব্যায়ামের সময়ও সেভাবে নেবেন।
ব্যায়ামটি ১০ বার পুনরাবৃত্তি করে ৩ টি সেটকরবেন এবং দিনে ৩ বার করার চেষ্টা করবেন। এজন্য আলাদা সময়ের দরকার নাই। অন্যান্য কাজের ফাঁকেই এটা করতে পারেন। যেমন কম্পিউটারের কাজ করার সময় বা সোফায় বসে টিভি দেখার সময়, বিছানায় গড়াগড়ি দেয়ার সময়। ব্যায়ামটি চেষ্টা করেও করতে না পারলে লজ্জিত হবার কিছু নাই। এখানে প্রশ্ন করতে পারেন বা আপনার ডাক্তারের পরামর্শনিতে পারেন।
যদি একাগ্রতার সাথে সঠিক ভাবে কেগেল ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই ফলাফল দেখতে পাবেন। আর ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হবে না। সেক্সের সময় যোনি মধ্যে ব্যথা কমে যাবে, বেশীক্ষণমিলিত হতে পারবেন, মিলনে আগের চেয়ে বেশী সুখানুভূতি হবে। আরো অনেক সুবিধা পাবার জন্য এটা করা অব্যাহত রাখা উচিত।

Comments

comments