১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করালে হবে ভবিষ্যত বিনিয়োগ

শিশুর স্বাস্থ্যে গঠনের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বুকের দুধ পান করানোর ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব’ রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট।
ল্যানসেট বলছে, শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের জন্য একটি বহুমাত্রিক বিনিয়োগ।
বিভিন্ন দেশে বিকল্প খাদ্যের সম্প্রসারণশীল বাজার নিয়েও সতর্ক করেছে তারা।
“মাতৃদুগ্ধ পান বিনা পয়সায় নয়। বুকের দুধ পানে উৎসাহ সৃষ্টিতে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধা দূর করতে হবে; এজন্য দরকার বিনিয়োগ।” 
‘দ্য ল্যানসেট ব্রেস্টফিডিং সিরিজ’ নামে শুক্রবার ওয়াশিংটনে প্রকাশিত এই গবেষণায় এক হাজার ৩০০ এর বেশি গবেষণাপত্র পর্যালোচনায় নেওয়া হয়েছে।
সচেতনতার অভাবে বুকের দুধ পান না করানোর ফলে প্রতি বছর ৩০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়; যা সারা বিশ্বের ওষুধ বাজারের ব্যবসার প্রায় সমান।
মাতৃদুগ্ধ পানের হার বাড়িয়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় আট লাখ ২০ হাজার শিশুর মৃত্যু রোধ করা যায়; যা পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুহারের প্রায় ১৩ শতাংশ।
এই গবেষণার অন্যতম গবেষক ব্রাজিলের ফেরাডেল ইউনির্ভাসিটি অব পেলোতাস’র এমিরেটাস অধ্যাপক চেজার ভিক্টোরিয়া বলেন, “সর্বশেষ এই ব্রেস্ট ফিডিং গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মাতৃদুগ্ধ পান করা বা না করার সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয়ের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, যা ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য।”
বুকের দুধ পানে শিশু মৃত্যুর হার কমে, শিশুদের বুদ্ধিমত্তা (আইকিউ) বাড়ে, স্কুলেও তারা বেশি শিখতে পারে এবং পরিণত বয়সে শক্তি যোগায়- আর এসবই দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রয়োজনীয় বলে গবেষণায় পর্যবেক্ষণ দিয়েছে ল্যানসেট।
২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণে নেওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (এসডিজি) ব্রেস্ট ফিডিং অ্যাজেন্ডাকে ‘সময়োপযোগী’ মন্তব্য করে একে একটি ‘সূচক’ হিসেবে নেওয়ার জন্য দেশগুলোকে পরামর্শ দিচ্ছে সাময়িকীটি।
ল্যানসেট বলছে, কোনো নারী তাদের সন্তান জন্মদানের প্রতি ক্ষেত্রে প্রথম দুই বছর শিশুকে বুকের দুধ পান করালে তার ব্রেস্ট ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ৬ শতাংশ কমে যায়।
এছাড়া বুকের দুধ পান করালে প্রতি বছর ব্রেস্ট ক্যানসারে প্রায় ২০ হাজার মৃত্যুর ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
ল্যানসেটের এই বিশ্লেষণে প্রথমবারের মতো ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সব দিক উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মোহাম্মদ আলী।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “মাতৃদুগ্ধ পানকে উন্নয়নের সূচক হিসেবে নেওয়া উচিত। পুষ্টি মেটানোর প্রয়োজন ছাড়াও শিক্ষা, অর্থনীতি ও জনগণের জীবনে এর প্রভাব রয়েছে।” 
বাংলাদেশে বুকের দুধ পান করানোর হার ২০১১ সালে ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হলেও পরে এই হার নেমে আসে।
সরকার মাতৃদুগ্ধ পানকে তার কৌশলে অগ্রাধিকার দিলেও এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রচারণা নেই বলে দাবি করেন ডা. আলী।
“অনেকেই মনে করে বুকের দুধ পান করানো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এটা এমনিতেই হবে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়, এক্ষেত্রে সমর্থন (বিনিয়োগ) দরকার। ল্যানসেট এর প্রমাণ (বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা) দেখিয়েছে।”
সাময়িকী বলছে, বুকের দুধের বিকল্প খাদ্যের উৎপাদক ও পরিবেশকরা ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালিয়ে ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে একটি বাধা সৃষ্টি করেছে।
স্বল্প ও মধ্যম আয়ের অনেক দেশেই শিশুর ‘বিকল্প খাদ্যের’ বিক্রি প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে, যা ২০১৯ সাল নাগাদ ৭০ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজারে পৌঁছুবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ল্যানসেট।
শিশুদের জন্য তৈরি ফর্মুলা দুধের বিক্রি বিশ্ব বাজারের হিসেবে ১৯৮৭ সালে ২ বিলিয়ন ডলার ছিল, যা ২০১৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ বিলিয়ন ডলার।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ল্যানসেট বলেছে, মাতৃদুগ্ধ পানে মায়েদের সব ধরনের সহযোগিতা দিতে হবে।

Comments

comments