নিয়মিত হেঁটে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকুন ও ওজন কমান
হিপোক্রেটাস বলেছিলেন, হাঁটাহাঁটি হল সবচেয়ে সেরা ওষুধ। গ্রিসের এই বিখ্যাত ফিজিশিয়ানকে বলা মেডিসিনের জনক। হিপোক্রেটাস নিঃসন্দেহে একজন স্মার্ট লোক ছিলেন। আজকাল অনেক দামী গবেষণায় প্রমাণিত যে হাঁটা আমাদের দেহের জন্য কতবেশি জরুরি।
গবেষণাগুলোর ফলাফল সত্যিই প্রভাবিত করার মতো। হাঁটায় ডায়বেটিস ও হৃদরোগ দুটিই কমে। সেইসঙ্গে কমে ব্লাড প্রেশার, বাড়ে হাড়ের ঘনত্ব, ওজন তো কমেই আরও অনেক উপকার হয় নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে।
ডায়বেটিস প্রতিরোধ করে হাঁটাহাঁটি
ডয়বেটিস প্রিভেনশন প্রোগ্রাম এক হিসেবে দেখিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট করে হাঁটা ও আপনার দেহের মাত্র ৭% ওজন ( ১২-১৫ পাউন্ড) হারিয়ে আপনি ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারেন ৫৮% ।
হার্টের শক্তি বাড়ায় হাঁটাহাঁটি
এক গবেষণায় দেখা গেছে, রিটায়ার্ড লোকদের মধ্যে যারা প্রতিদিন এক মাইলের কম হাঁটেন তাদের মৃত্যু হার দুই মাইলের চেয়ে যারা বেশি হাঁটবেন তাদের চেয়ে দ্বিগুণ।
নার্সদের এক হেলথ স্টাডিতে দেখা গেছে ( ৭২, ৪৮৮ জন মহিলা নার্স ) যারা সপ্তাহে তিন ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় হাঁটেন এটা তাদের হার্ট অ্যাটাক হৃৎপিণ্ড সংক্রান্ত ঝুঁকি কমায় ৩৫%।
হাঁটাহাঁটি আপনার ব্রেইনের জন্য ভাল
হাঁটাহাঁটি ও জ্ঞান সংক্রান্ত এক গবেষণায় রিসার্চারা পেয়েছেন এক মজার তথ্য। যেসব মহিলা সপ্তাহে ৪০ মিনিটের চেয়ে কম হাঁটেন তাদের চেয়ে সাপ্তাহিক দেড় ঘন্টা হাঁটাহাঁটিতে অভ্যস্ত মহিলাদের জ্ঞান অর্জনের শক্তি অনেক ভাল। সেই সঙ্গে সৃতি শক্তি হারানোর প্রবণতাও তাদের মধ্যে কম। ভেবে দেখুন তাহলে হাঁটাহাঁটি করা আমাদের দেহের জন্য কত জরুরি।
হাঁটাহাঁটি আপনার হাড়ের জন্য ভালো
রিসার্চে দেখাচ্ছে মেনোপজ পরবর্তী মহিলাদের ক্ষেত্রে যারা দৈনিক প্রায় এক মাইলের মতো হাঁটেন, এর চেয়ে কম দুরুত্বে হাঁটতে অভ্যস্ত মহিলাদের চেয়ে তাদের দেহের হাড়ের গঠন অনেক বেশি দৃঢ় ও ঘন হয়।
ডিপ্রেশনের লক্ষনগুলোকে উপশম করে হাঁটাহাঁটি
প্রতি দফায় ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার এভাবে ১২ সপ্তাহ হাঁটাহাঁটি করলে তা ডিপ্রেশনের লক্ষন অনেকাংশে কমায়। ডিপ্রেশনের স্ট্যান্ডার্ড লিখিত প্রশ্নাবলী থেকে দেখা গেছে এটা ৪৭% পর্যন্ত কমে।
হাঁটাহাঁটির ফলে ব্রেস্ট ক্যানসার ঝুঁকি কমে
মহিলাদের মধ্যে যারা সপ্তাহে সোয়া ঘণ্টা থেকে আরাম্ভ করে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত এলোমেলোভাবে হলেও হাঁটাহাঁটি করেন তাদের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় মহিলাদের চেয়ে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি ১৮% পর্যন্ত কমে যায়। অন্যান্য গবেষণা থেকে দেখা গেছে, মলাশয়ের ক্যানসার (কোলন ক্যানসার) প্রতিরোধেও হাঁটার ভূমিকা রয়েছে।
ফিটনেস বাড়ায় হাঁটাহাঁটি –
৩০ মিনিট করে সপ্তাহে কেবল তিনবার হাঁটাহাঁটি বেশ লক্ষিনীয় মাত্রায় হৃৎপিণ্ড ও শ্বসনতন্ত্র সংক্রান্ত ফিটনেস বাড়ায়। অল্প পরিমানে হাঁটাহাঁটিও আপনার ফিটনেস বাড়ায়।
যারা খুব অলস ধরনের নারী তাদের জন্য পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্বল্প সময় ( ১০ মিনিট করে ৩ বার) এলোমেলো করে হাঁটাহাঁটি করলেও সেটা তাদের দেহের ফ্যাট কমানোর ক্ষেত্রে সমান উপকার করে যারা দিনে একবার আধাঘণ্টা করে হাঁটেন।
শরীরবৃত্তীয় উন্নতি ঘটে হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে –
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাঁটাহাঁটির ফলে ফিটনেস ও শরীরবৃত্তীয় কাজকর্মের উন্নতি ঘটে। বৃদ্ধদের দৈহিক নানা অক্ষমতা প্রতিরোধ করতেও হাঁটার জুড়ি নেই।
সৌজন্যে – প্রিয়.কম