পুরুষের তুলনায় নারীরা যে বিষয়ে বেশি পারদর্শী
গবেষণায় দেখা গেছে নারীদের এমন কিছু আশ্চর্যজনক গুণ আছে যা পুরুষে মাঝে অনুপস্থতিত।আজ আমরা সেসবের মাঝে কিছু অন্যতম বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।চলুন তাহলে পাঠক দেখে নেয়া যাক পুরুষের তুলনায় নারীরা কোন বিষয়ে বেশি পারদর্শী।
১. নারীরা বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
Sun Diago Stat University Of Officer এর এক গবেষনা মতে নারীর ঘর এবং কর্মক্ষেত্রের জিনিসপত্র পুরুষের তুলনায় বেশি গোছানো থাকে। গবেষনায় আরো জানা যায় নারীরজামা-কাপড় এবং বাসস্থানের তুলনায় পুরুষের অফিস/বাসস্থানে ১০% থেকে ২০% বেশি পরিমানেব্যকটেরিয়া থাকে। স্বভাবতই এ ব্যকটেরিয়া পুরুষের অপরিচ্ছন্ন জীবনমানের কারণে হয়।
২. সাক্ষাৎকার গ্রহন/প্রদানে নারী বেশি স্বাবলীল
University of Oestern Ontario এর সমিক্ষায় জানা গেছে নারী অন্য মানুষেরসামনে কথা বলতে (বিশেষ করে চাকুরীর/বিয়ের ইন্টারভিও) পুরুষের তুলনায় বেশি স্বাবলীল । কারণ নারী কেউ একজনের মুখোমুখি হবার কথা থাকলে মানসিকভাবে আগে থেকেই নিজেকে খোলামেলা করে নেয়। এবং সম্ভাব্য সব কথাগুলো গুছিয়ে নেয়।
৩. নারী বেশি আবেদনময়ী রূপে প্রকাশ পায়
বিবর্তনের ধারায় নারী দিন দিন দেখতে অনেক রূপসী এবং আবেদনময়ী হচ্ছে । একই সময়ে পুরুষসেই অনেক যুগ আগ থেকে একই রকম মানসিকতা এবং ফ্যাশান চিন্তার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে । লন্ডনভিত্তিক টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত এক ২,০০০ এরও বেশি মানুষকে চার যুগ (৪৮ বছর) ধরে পর্যবেক্ষনের মাঝে রেখে প্রাপ্ত তথ্য মতে যে সকল নারী দেখতে সুন্দরী তারা অন্য (আম/সাধারন)নারীর তুলনায় ১৬% বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে থাকে (যেহেতু সুন্দরী নারীর প্রতি তার স্বামী বেশিশাররীক মিলনে আগ্রহী হয় তাই সহজ কথায় সুন্দরী নারী অসুন্দর নারীর তুলনায় ১৬ ভাগ বেশিগর্ভধারন করে থাকেন) । এবং সুন্দরী নারীদের প্রথম সন্তান প্রসবে ৩৬% মেয়ে শিশু জন্ম দেয় । এই সবসুন্দরী মাতাদের কোলে জীনতত্বীয় হিসাবে সুন্দরী মেয়েই ভুমিষ্ঠ হচ্ছে (সাধারণত মা সুন্দর তো মেয়েসুন্দর) । তার মানে দিন দিন মেয়ে শিশু তার রূপ বৈভব বেশি নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখছে ।
৪. গাড়ী দুর্ঘটনায় পুরুষের তুলনায় নারী যাত্রীগণ অলৌকিক ভাবে বেশি বেঁচে যান
এ খবরটি দুঃখের হলেও সত্য যে – “গাড়ী দুর্ঘটনায় পুরুষ নারীরতুলনায় মরার সম্ভাবনা ৭৭% বেশি” – কার্নিগি মিলন ইউনিভার্সিটিরএক গবেষনায় এ তথ্য উম্মক্ত হয়েছে । নারী সহযাত্রীকে ধন্যবাদজানানো উচিৎ , যখন তারা আপনাকে সিট বেল্ট বাঁধার / হেলমেটপরার জন্য চাপাচাপি করে ।
৫. নারী সান্তনা খোঁজায় পুরুষের চেয়ে এগিয়ে
২,০০০ মানুষের মাঝে চালানো এক মানসিক জরিপ মতে নারী পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় তাদের সমস্যা নিয়ে অন্যের সাথে আলোচনা করে । ৫৩% নারী যে সব কারন তাদেরকে চিন্তিত করে তা বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে সমস্য থেকে মুক্তির সহায়তা চায় । অপরদিকে মাত্র ২৯% পুরুষ তাদের সমস্যা সমাধানে আপনজনের সাথে আলাপ করে ।
৬. নারী পুরুষের তুলনায় অধিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবমুক্ত
শ্রমিক পরিসংখ্যান ব্যুরো তথ্য মতে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাস হতে এখন পর্যন্ত যত মানুষ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চাকুরী হারিয়েছেন তার ৮০% ই পুরুষ । হয়তো এটা পুরুষ প্রধান ক্ষেত্র – যেমন পন্য তৈরির কারখানা ব্যাংক বীমা ইত্যাদিতে চাকরিচ্যুতির হার বেশি সেই কারনেও হতে পারে । তবে কারণ যাই হোক শতকরা চাকুরীর নিরাপত্তার হার নারীদের মাঝে বেশি ।
৭. ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পড়ালেখায় ভাল ফলাফল করছে
বিগত সময়ে পরিক্ষায় পাশের ফলাফল লক্ষ করলে দেখতে পাবেন ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভাল ফলাফল করছে । একটি মেয়ে পড়ার টেবিলে যত পরিমাণ সময় দেয় সেই তুলনায় ছেলেরা অনেক পিছনে । পড়ায় মনোনিবেশের ক্ষেত্রেও ছাত্রীরা বেশি যত্নশীল । তাই শিক্ষা খাতে নারীর সাফল্যের হার ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে । বয়সের দিক দিয়েও মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় কম বয়সে মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক/স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করছে । পশ্চিমা বিশ্বে গড়পড়তা ছাত্রীরা ছাত্রদের চেয়ে পাঁচ (৫) বছর কম বয়সে গ্রেজুয়েশান শেষ করে ।
৮. নারীরা স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করেন
University of Minnisota দ্বারা 14000 মানুষের মাঝে পরিচালিত এক শমীক্ষায় দেখা যায় নারীরা খাদ্য গ্রহনের সময় পুরুষের তুলনায় অধিক হারে স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি নজর দেয় । পুরুষ অনেকটা সামনে যা পায় অসাস্থকর ও জাঙ্কফুড জাতিয় খাবার তেমন ভাবে গিলে নেয় । অন্যদিকে নারীরা কষ্ট হলেও খাবার গরম করে খাবেন , অসাস্থকর খাবারে গ্রহন করবেন না সবজি এবং ফলমুলের প্রতি বেশি আগ্রহী দেখায় । সব মিলিয়ে নারীরা অনেক স্বাস্থ্য সচেতন । তবে নারীরা চকোলেটের প্রতি একটু দুর্বল – যা তারা চাইলেও অস্বীকার করার অবকাশ রাখেনা ।
৯. নারীরা শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যুক্ত
সামান্য অসুস্থ হলেই পুরুষ কুকড়িয়ে যায় যেমন জ্বর সর্দি লাগলেই । চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমানিত যে নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় বেশি । যদি মানুষের শরীরে সামান্য যুদ্ধও ঘটে যায় – নারীর শরীরে “ইষ্ট্রোজেন” (হরমোন) নামক গোপন অস্ত্র সে যুদ্ধ জয় নিশ্চিত করে । ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির গবেষনায় দেখা গেছে ইনফেকশানের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য ইষ্ট্রোজেন এক প্রকার শক্তিশালী রক্ষক এর কাজ করে । কারণ ইষ্ট্রোজেন একপ্রকার এনজাইম তৈরি করে যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বংশবিস্তারে সমস্যার সৃষ্টি করে ।
১০. নারী বেশি দিন বাঁচে
বর্তমান পৃথিবীতে জনসংখ্যার মধ্যে যারা শত বছরের বেশি বয়স্ক তার মধ্যে ৮৫% মানুষ নারী মোটের উপর পুরুষের তুলনায় নারী ৫ থেকে ১০ বছর বেশি বয়স পায়
১১. ব্যবস্থাপনায়, বিশেষ করে অর্থনিতীতে নারী ভাল
ব্যবস্থাপনা এর ক্ষেত্রে নারী পুরুষের তুলনায় অনেক এগিয়ে । এর প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে – অনেক কাজে অনেকটা অভিঙ্গতার পরিচয় দেয় একই সময়ে অনেক প্রকার কাজ করতে পারদর্শী । নারীরা কাজের সাথে অন্যের উপর কাজের ভার চাপিয়ে দেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা ক্ষেত্রে পুরুষ কর্মীর চেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল । তারা অধনস্থ/সহকর্মীদের মাঝে আবেগ সক্রিয় করায় পারদর্শী ।
১২. নারীরা বিনিয়োগে সফল
১০০,০০০ উদ্দোক্তার তথ্য পর্যবেক্ষন করে প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায় নারী বিনিয়োগকারীরা । ব্যবসায়িকভাবে পুরুষের তুলনায় ১১% থেকে ১৮% বেশি সফল । নারীরা বিনিয়োগের আগে লম্বা সময় নিয়ে এর ভাল-খারাপ দিক গুলো সম্পর্কে চিন্তা করে।