ক্যান্সার প্রতিরোধ করে লাল পেঁয়াজ! গবেষণায় প্রমাণিত
ব্রোকোলি, স্পিনাক, গাজর সহ আরো বেশ কিছু সবজি আছে যেগুলো ক্যান্সার নিরাময় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এবার এই তালিকায় নতুন আরেকটি সবজি যুক্ত হলো- লাল পেঁয়াজ।
এতে আছে কোয়েরসেটিন, অ্যালিসিন এবং ক্রোমিয়াম নামের উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
এছাড়া খুব কম গ্লিসেমিক ইনডেক্স (জিআই) সমৃদ্ধ সবজি হওয়ায় শক্তি রিলিজের গতি ধীর করতে এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা জোরদার করতে সহায়ক লাল পেঁয়াজ।
এই পেঁয়াজে আছে এমন সব পুষ্টি উপাদান যা ব্যাকটেরিয়ারোধী, ছত্রাকরোধী এবং সংক্রমণরোধী ভুমিকা পালন করে সার্বিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
এসব উপাদানকে কার্যকর করে তুলতে সহায়ক হিসেবে যে বিশাল পরিমাণ ফ্ল্যাভোনয়েড দরকার হয় তাও লাল পেঁয়াজেই সবচেয়ে বেশি থাকে। সাদা বা হলুদ পেঁয়াজের তুলনায়।
লাল পেঁয়াজ আসলে কী?
ফুলদায়ী উদ্ভিদ পরিবার ‘অ্যালিয়াম’ এর সদস্য এই ভেষজ সবজিটি এর সালফার এবং অ্যামাইনো এসিড উপাদানের জন্য পরিচিত। লাল পেঁয়াজ ফ্লেভার ও রঙের দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া এতে আছে এমন উপাদান যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। আর আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে এই পেঁয়াজের ঝাঁঝে আপনার চোখে পানিও আসবে না।
ক্যান্সার কোষ দমন করে
বেশ কয়েকটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এতে থাকা উচ্চ মাত্রার কোয়েরসেটিন (একটি উদ্ভিদ ভিত্তিক পলিফেনল) মানবদেহকে বাকযন্ত্র এবং অন্ত্রের ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখে। এছাড়া প্রজনন সংক্রান্ত ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে লাল পেঁয়াজ।
দেহের প্রাকৃতিক বিষমুক্তকরন প্রক্রিয়া জোরদার করে
এতে থাকা উচ্চ মাত্রারা সালফার উপাদান দেহের বিষমুক্ত থাকার প্রাকৃতিক সক্ষমতা জোরদার করে। রক্তে সিসার মতো ভারি বিষাক্ত পদার্থ জমে গেলে তা পরিষ্কার করা এবং দেহে থেকে বর্জ্য আকারে খাদ্যবিষ বের করে দেওয়ার জন্য সেরা একটি খাদ্য। এছাড়া প্রদাহরোধী প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করে লাল পেঁয়াজ।
হরমোন, এনজাইম, নার্ভ এবং লাল রক্তকোষের কর্মতৎপরতায় একটি প্রধান ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করে এটি। লাল পেঁয়াজ এসব দৈহিক প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করে। এবং ক্যান্সারজনক কোষের উৎপাদন ও বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। এছাড়া প্রদাহ ও টিস্যুর ক্ষয় রোধ করে যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
লাল পেঁয়াজে থাকা উপাদান সমুহ ব্যাকটেরিয়া, ছাত্রাক এবং ভাইরাল সংক্রমণ প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। যার ফলে সার্বিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটে। আর সাদা বা হলুদ পেঁয়াজের চেয়ে লাল পেঁয়াজে এসব উপাদানের কার্যকারিতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উচ্চ মাত্রার ফ্ল্যাভোনয়েডও থাকে বেশি।
রক্তে সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে
মানদেহে ক্যান্সার হওয়ার পেছনে গ্লুকোজ বিপাকের দুর্বল প্রক্রিয়া সবচেয়ে বড় অবদান রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, লাল পেঁয়াজে আছে নিম্ন গ্লিসেমিক ইনডেক্স (জিআই), ০ থেকে ১০০ এর স্কেলে ১০ মাত্রার জিআই আছে এতে। লাল পেঁয়াজের এই নিম্ন মাত্রার জিআই শক্তি রিলিজের গতি ধীর করতে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা জোরদার করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এই নিম্ন মাত্রার জিআই রক্তচাপের ভারসাম্য রক্ষা করা এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।