আইসক্রিম খেলে চাঙা থাকে ব্রেইন
এতকাল জেনে এসেছি, আইসক্রিম খেলেই গলা ধরে। টনসিল থাকলে ফোলে। খুকখুক খকখকের শেষ থাকে না। মন যতই ভালো করে দিক, কারও কারও মতে আইসক্রিম কিন্তু আজও কালপ্রিট। সর্দি, কাশি, জ্বরের যম। কিন্তু তবুও আইসক্রিম আমাদের সবার প্রিয়। তা সে যতই খারাপ হোক, প্রত্যেকটি দেশের মানুষের কাছেই `কুল` ফেভারিট এ খাদ্য। গ্রীষ্মের হাঁসফাঁসে, শীতের হিমেল হাওয়ায়, বর্ষাকালে বৃষ্টিধারার মতোই গলে গলে পড়ে আইসক্রিম, সঙ্গে মনটাকেও গলিয়ে নিয়ে যায়।
তবে অনেককেই হতাশ করে জাপানের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ব্রেইন চাঙা করতে আইসক্রিম খুব ভালো কাজ। তাদের দাবি, যারা সকালের নাশতায় নিয়মিত আইসক্রিম খান তারা অন্যদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান।
জাপানের কইরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইয়োশিহিকো কোগার নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি কিছু মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য দেন।
গবেষণার জন্য কিছু মানুষকে দুটি দলে বিভক্ত করা হয়। এর একটি দলকে প্রতিদিন সকালে তিনটি করে আইসক্রিম খাইয়ে কম্পিউটারে আইকিউ সমাধান করতে বসান। পরবর্তীতে তারা কে কত স্কোর করলেন তা খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়।
আর বাকি দলকে সাধারণ খাবার খাইয়ে আইকিউ সমাধান করান এবং তাদের স্কোরও খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। এবার দুই দলের স্কোর একসঙ্গে তুলনা করা হয়। এতে বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, যারা সকালে আইসক্রিম খেয়ে আইকিউ সমাধান করেছেন তাদের তথ্য প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি। তাদের ব্রেইনও খুব তিক্ষ্ণ। কোনো তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিডব্যাক দিতে পেরেছেন। তাদের স্কোরও অন্যদের চেয়ে বেশি।
কিন্তু তারপরও এ গবেষণা থেকে সন্তুষ্ট হতে পারেননি ইয়োশিহিকো কোগা। কারণ তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, হয়তো ঠাণ্ডা খাবারের কারণে তাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বেড়েছে। তাই সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি আবার এক পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।
তিনি এক দলকে প্রতিদিন সকালে তিন গ্লাস ঠাণ্ডা পানি পান করিয়ে আইকিউ সমাধান করতে বলেন এবং তার বিপরীতে অন্যদলকে সাধারণ নাস্তা দিয়ে আইকিউ করতে বলেন।
এবার তিনি ফলাফল মূল্যায়ন শুরু করেন। তিনি লক্ষ্য করেন যারা সকালে ঠাণ্ডা পানি খেয়ে আইকিউ করতে বসেছিলেন তারা অন্যদের তুলনা একটু ভালো করেছে। কিন্তু আইসক্রিম খেয়ে আইকিউ করতে বসা প্রতিযোগীদের সমান স্কোর করতে পারেনি। তখন তিনি নিশ্চিত হন; আইসক্রিম সত্যি মানুষের ব্রেইন চাঙ্গা করতে সাহায্য করে।
প্রফেসর ইয়োশিহিকো কোগা একজন দক্ষ মনোবিজ্ঞানী। দির্ঘদিন ধরে তিনি মানুষের মন ও শরীর নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। তার অনেক গবেষণা বিশ্বের জনপ্রিয় জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি তার এ আইসক্রিম নিয়ে গবেষণাটিও আলোচনায় এসেছে।