৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রবিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

ব্যায়ামের সাত উপকারিতা

ব্যায়াম সেসব শারীরিক ক্রিয়াকর্ম নির্দেশ করে, যা আমাদের মানসিক সক্ষমতাকে স্বাভাবিক কিংবা কখনো কখনো বাড়াতে সহায়তা করে। সাধারণত মানবপেশির কর্মক্ষমতা বাড়াতে, অস্থির দৃঢ়তা রক্ষায়, রক্তসংবহনতন্ত্রের ক্রিয়াকর্ম স্বাভাবিক রাখতে, শারীরিক কসরতপূর্ণ খেলায় অধিক দক্ষতা আনয়ন, দেহের ওজন স্বাভাবিক রাখতে কিংবা অতিরিক্ত ওজন কমাতে কখনো বা বিনোদনের অংশ হিসেবে ব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত ও পরিমিত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ১৭ শতাংশ ক্ষেত্রে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস, ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে বৃদ্ধ বয়সে হঠাৎ পড়ে যাওয়াজনিত সমস্যা এবং ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্তন ও অন্ত্রের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। নিম্নোক্ত ব্যায়ামের সাত উপকারিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো- লিখেছেন ডা: মো: কফিল উদ্দিন চৌধুরী

১। সরিয়ে দেবে যত বিষণ্ণতা পর্দা : প্রতিদিনের নানা শারীরিক ও মানসিক চাপে আপনি কি বিষণ্ণ? নিজের মন থেকে কি বের করে দিতে চান বিষণ্ণতার কিছু বিষবাষ্প? তাহলে দৈনিক ৩০ মিনিটের দ্রুত হাঁটা কিংবা ব্যয়ামাগারে কিছু সময় ব্যয়াম আপনাকে বুলিয়ে দেবে কিছুটা শান্তির পরশ। নিয়মিত ও পরিমিত ব্যয়াম আপনার মস্তিষ্ককে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণে উদ্দীপিত করে। মস্তিষ্ক কর্তৃক নিঃসৃত এসব রাসায়নিক পরবর্তীতে আপনাকে করে তুলবে আরো সুখী ও কর্মক্ষম। বাড়িয়ে দেবে নিজের আত্মবিশ্বাস। এভাবেই নিয়মিত ও পরিমিত শরীরিক ব্যয়াম বিষণ্ণতা প্রতিরোধে সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।

২। ব্যয়াম বনাম দীর্ঘমেয়াদি নানা রোগ : আপনি কি হৃদরোগ নিয়ে শঙ্কিত? কিংবা অস্থির ক্ষয়জনিত রোগ অস্টিওপরোসিস রোগ প্রতিরোধে কি আশাবাদী? তাহলে ব্যয়ামই হতে পারে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার একমাত্র চাবিকাঠি। নিয়মিত ও পরিণিত শারীরিক ব্যয়াম কমিয়ে রাখে রক্তচাপ। প্রতিরোধ করে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা। রক্তে কমিয়ে দেয় মাবব দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি জাতীয় পদার্থ ট্রাইগ্লাইসেরইড ও হলো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা। বাড়িয়ে রাখে মানব দেহের জন্য উপকারী হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন নামক কোলোস্টরলের মাত্রা। এই দুই ক্রিয়ার মিলিত প্রভাব মানব রক্তনালীর প্রাচীরে চর্বি অবাঞ্ছিত জমাটবদ্ধতাজনিত সমস্যা এথেরোমা তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করে। নিশ্চিত করে মানব রক্তনালী দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ও সুষম রক্ত প্রবাহ। এ ছাড়াও নিয়মিত ব্যয়ামের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে ডায়াবেটিস, অস্টিওপরোসিস, স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রেও ক্যান্সারসহ আরো নানা প্রকার মারাত্মক রোগ।

৩। নিশ্চিত করবে দেহের সঠিক ওজন : আপনি কি মেদ ভুঁড়ি কি করি এই জাতীয় সমস্যায় ভুগছেন? কিংবা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে ইচ্ছুক? তবে অবসর কিংবা দিবানিদ্রার কিছুটা সময় ব্যয়িত হোক না ব্যয়ামের বিনিময়ে। তা ছাড়া শুধু ব্যয়াম কেন, যেকোনো শারীরিক পরিশ্রম মানেই অতিরিক্ত ক্যালরি তথা শক্তিক্ষয়। যার শেষ পরিণতি ওজন হ্রাস। কাজেই যত গতিশীল কাজের গতি তত দ্রুত ওজন হ্রাস। বিনিময়ে দেহের ওজন সঠিক রাখার নিশ্চিয়তা। এর জন্য আপনাকে নিমিত কোনো ব্যয়ামাগারে ব্যয়াম করতে হবে, এমন কোনো ধরা-বাধা নিয়ম নেই। বরং বহুতল ভবনে ওঠার ক্ষেত্রে লিফট ব্যবহারের পরিবর্তে নিয়মিত সিঁড়ি ব্যবহার করুন। মধ্যহ্ন ভোজের বিরতিতে দিনানিদ্রার পরিবর্তে কিছুটা সময় হোক না হাঁটার।
কুলি-মজুরের পরিবর্তে প্রয়োজনে নিজেই বহন করুন না নিজের বোঝা। টিভি বন্ধ কিংবা চালু করার সময় রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহারের পরিবর্তে নিজেই ওঠে গিয়ে তা করুন। আর এ সব ছোট ছোট কাজই আপনার বাড়তি ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যয়ামের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

৪। দেহ হবে নব শক্তিতে বলীয়ান : দৈনিক গৃহস্থলী টুকি-টাকি কাজ কিংবা মুদি দোকানে কেনাকাটায় আপনি কি বিরক্ত? তাহলে আর নয় হতাশা। দৈনিক পরিমিত ব্যয়ামে আপনার দেহ ফিরে পাবে নতুন প্রাণ। নব শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠবে দেহ। আপনি ফেলবেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। নব উদ্যমে খেলা করবে আপনর দেহ ও মন। পরিমিত দৈনিক ব্যয়াম আপনার দেহের সমগ্র কোষ-কলার স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক অক্সিজেন ও পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করবে। হৃৎপিণ্ডসহ আপনার সমগ্র রক্ত সংবহন তন্ত্র হয়ে উঠবে আরো অধিক ক্রিয়াশীল। শ্বাস তন্ত্রের কাজে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা। ফলে এই দুই তন্ত্রের আরো অধিক কার্যকারিতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে আপনার কাজের উৎসাহের মাত্রা।

৫। সুনিদ্রার বড় দাওয়াই : আপনি কি ঘুমের জন্য সংগ্রাম করছেন অথবা নিদ্রাবিহীন রাত যাপন করে চলেছেন? তাহলে প্রতিদিন সকাল কিংবা বিকেলে পরিমিত ব্যয়াম হতে পারে সুনিদ্রা আনায়নের বড় দাওয়ই। পরিমিত ব্যয়ামের ফলে শুলেই আপনার দুচোখ জুড়ে ভর করবে রাজ্যের ঘুম ও অন্য দিকে বেড়ে যাবে আপনার ঘুমের গাঢ়তা যদিও বিছানায় যওয়ার ঘণ্টা দুই আগে অতিরিক্ত ব্যয়াম সুনিদ্রা আনয়নে সহায়ক নয়। তাই আপনি যদি নিদ্রা হীনতায় ভুগে থাকেন তবে প্রাত্যহিক সকালে কিংবা বিকেলে পরিমিত ব্যয়ামের কোনো বিকল্প নেই। আর একটি রাতের সুনিদ্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে আপনার কাজের একাগ্রতা ও উৎপাদনশীলতা। দেহে ও মনে জেগে উঠবে আনন্দের ভাব।

৬। উদ্দীপিত হবে লুপ্ত যৌন জীবন : আপনি কি হারানো যৌবন নিয়ে চিন্তিত? কিংবা মোটসোটা আলু থালু দেহকে অপরের অন্তরঙ্গ সান্নিধ্যে আসার প্রধান বাধা হিসেবে মনে করেন কি? তাহলে ব্যয়ামই এই বিপদ থেকে মুক্তির শেষ ভরসা। কেননা দৈনিক পরিমিত ব্যয়ামে আপনার দেহের বাড়তি ওজন হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি আপনি হয়ে উঠবেন আরো নিটোল সুগঠিত আর যৌন আবেদনময়ী যা আপনার যৌন জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত শারীরিক ব্যয়াম মহিলাদের যৌন উত্তেজনার সাড়া প্রদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সেই সাথে দূর করে পুরুষদের যৌন উত্তেজনার সময় পুরুষাঙ্গের ঋজু না হওয়ার নানা সমস্যা (যা ইরেকটাইল ডিসফাংশন নামে পরিচিত)। কাজেই নিয়মিত শারীরিক ব্যয়ামই চির যৌবন প্রাপ্তির এক গুরুত্বপূর্ণ মহৌষধ।

৭। অবসর বিনোদনে ব্যয়াম : বন্ধের দিন কিংবা অবসর সময় কি করবেন তা নিয়ে ভাবছেন? কিংবা অবসরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কি করবেন যা সবার সাথে খাপখায়? তবে তা হয়ে উঠুক না শারীরিক পরিশ্রম সম্বন্ধীয়। ব্যয়াম বলতে কেবল এক ঘেয়েমি খাটুনি নয়। বরং তা হতে পারে নানা বিনোদনের অংশ হিসেবে। যেমন : ভ্রমণের অংশ হিসেবে পদব্রজে কোনো গ্রামের কিংবা বুনো পথ ভ্রমণ, দুর্গম কোনো জায়গা অতিক্রম, উঁচু কোনো পাহাড় কিংবা পর্বতে আরোহন, কিংবা অবসরে শারীরিক পরিশ্রমসমৃদ্ধ নানা খেলা যেমন : ফুটবল, সাঁতার, দৌড়ঝাপ, কাবাডি, গোল্লাছুট প্রভৃতি বিনোদনে চালিয়ে যেতে পারেন শারীরিক পরিশ্রম। আপনি কি উপরোক্ত ব্যাপার সম্বন্ধে দৃঢ় প্রত্যয় পোষণ করেন? যদি করে থাকেন তবে আজ থেকেই উপকার পেতে নিয়মিত ব্যয়ামের অভ্যাস শুরু করুন। নয়া দিগন্ত

Comments

comments