৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

কিডনিতে পাথর সৃষ্টির ঝুঁকি কমায় আনারস…বিস্তারিত জেনে নিন

বিশ্বের সর্বত্রই বর্তমানে আনারস পাওয়া যায়। এর মিষ্টি স্বাদের জন্য এটি মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাতে খুবই জনপ্রিয় ফল এবং পরিপাকের যেকোনো সমস্যা সমাধানে শতাব্দীর পর শতাব্দী এটি এই অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দক্ষিণ আমেরিকা হতে ইউরোপে এর প্রচলন হয় ক্রিস্টোফার কলম্বাসের হাত ধরে। থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, চায়না,  ব্রাজিল ও মেক্সিকো বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ করে।

একটি আনারসের পরিপক্ব হতে প্রায় তিন বছর সময় প্রয়োজন। কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন গুচ্ছ কেন্দ্রে যুক্ত হয়ে আনারস গঠিত হয়। আনারসের ত্বক, কেন্দ্র ও বর্জ্য থেকে ভিনেগার, অ্যালকোহল ও পশুখাদ্য তৈরি করা হয়। নিয়মিত আনারস গ্রহণের মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় এবং সুস্থ, সুন্দর ত্বক, চুল ও প্রয়োজনীয় শক্তি পাওয়া যায়।

আনারসে বেশি মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ভূমিকা পালন করে এই ম্যাঙ্গানিজ। আনারসের বিশেষ এনজাইম হলো ব্রোমেলিন। এক কাপ তাজা আনারস থেকে প্রায় ৮২ ক্যালরি, ২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, মোট কার্বোহাইড্রেটের ২২ গ্রাম (১৬ গ্রাম চিনি ও ২.৩ গ্রাম আঁশ) এবং ১ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া এক কাপ আনারস থেকে আমাদের দৈনিক চাহিদার ১৩১ শতাংশ ভিটামিন সি,২ শতাংশ ভিটামিন এ, ২ শতাংশ ক্যালসিয়াম ও ২ শতাংশ লৌহের চাহিদা পূরণ সম্ভব। থায়ামিন, রিবোফোবিন, ভিটামিন বি-৬, ফোলেইট, প্যান্টোথেনিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল, যেমন- বেটা ক্যারোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস হলো আনারস।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আনারস
১. বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সৃষ্ট পেশির দুর্বলতা কমাতে আনারস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

২. উচ্চ মাত্রায় বেটা ক্যারোটিন গ্রহণ অ্যাজমার ঝুঁকি কমায়। আনারস বেটা ক্যারোটিনের একটি ভালো উৎস।

৩. আনারস মধ্যে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

৪. আনারস ভিটামিন সি নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎকৃষ্ট উৎস। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার সৃষ্টির জন্য দায়ী ফ্রি র‌্যাডিক্যালসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এ ছাড়া ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপি থেকে হওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধে ব্রোমেলিনসহ অন্যান্য এনজাইম বিশেষভাবে কাজ করে।

৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আনারসের আঁশ সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকৃতির আনারস হতে ১৩ গ্রাম আঁশ পাওয়া যায়; যা আমাদের দৈনিক আঁশের চাহিদার অনেকখানিই পূরণ করে।

৬. আনারসের মধ্যে থাকা আঁশ ও পানি কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে; পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।

৭. অ্যন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার ফার্টিলিটির উন্নয়ন ঘটিয়ে বন্ধ্যাত্ব দূর করে। কারণ আমাদের দেহে বিদ্যমান ফ্রি র‌্যাডিক্যাল্স আমাদের জননতন্ত্রকেও ক্ষতিগ্রস্থ করে। আনারসের ভিটামিন সি, বেটা ক্যারোটিন ও অন্যান্য ভিটামিন, কপার, জিংক, ফোলেইট -এসবই অ্যন্টিঅক্সিডেন্টস হিসেবে জননতন্ত্রের সুরক্ষায় কাজ করে।

৮. আনারসের বিশেষ এনজাইম ব্রোমেলিন আঘাত থেকে সৃষ্ট যেকোনো ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। তাই সার্জারির পর আনারস গ্রহণ করা হলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়।

৯. আনারস থেকে প্রাপ্ত আঁশ, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি হৃদযন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে। উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম গ্রহণ স্ট্রোক, হাঁড়ের ক্ষয়, বৃক্কে (কিডনি) পাথর সৃষ্টির ঝুঁকি কমায়।

১০. আনারস থেকে আমরা প্রচুর ভিটামিন সি পাই। এই ভিটামিন সি সূর্যের তীব্র আলো ও বায়ুদূষণ থেকে সৃষ্ট ত্বকের সমস্যা, ত্বকের কুঁচকানো ভাব ইত্যাদি দূর করে। ত্বকের প্রধান উপাদান কোলাজেন তৈরিতেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে আনারস গ্রহণে ত্বকের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

১১. রক্তের জমাটকরণ রোধে আনারসের ব্রোমেলিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১২. ব্রোমেলিনের আরেকটি উপকারিতা হলো, এটি গলা ও নাকের মিউকাসের পরিমাণ কমায়। ফলে যারা প্রায়ই এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হন তাঁদের জন্য আনারস একটি আদর্শ ফল।

আনারসের এত উপকারিতা সত্ত্বেও বেশি আনারস গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া, বমিভাব, পেটে ব্যথাসহ আরো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মূল কারণ হলো আনারসে বিদ্যমান বিটামিন সি। একইভাবে উচ্চ মাত্রায় ব্রোমেলিন গ্রহণ ত্বকে চুলকানি, ডায়রিয়া, বমিভাব, মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ ইত্যাদির জন্য দায়ী। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।

Comments

comments