হরমোন ইনজেকশন পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতি বলে সমীক্ষায় দেখা গেছে। ২৭০ জন পুরুষের উপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে এই গর্ভনিরোধক ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। শতকরা চারজনের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গী গর্ভধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা এই গবেষণাটি চালায়।

তবে হরমোন ইনজেকশন নেওয়ার ফলে ব্রণ ও মেজাজ খারাপের মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে।

গবেষকরা গত ২০ বছর ধরে পুরুষের জন্য কার্যকর গর্ভনিরোধক আবিষ্কারের জন্য গবেষণা চালিয়ে আসছিলেন।

গবেষক দলের চেষ্টা ছিল বেশিমাত্রার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া ও সংগমের আনন্দে বাধা না হয়ে দাঁড়ায় এমন একটা হরমোন ইনজেকশন আবিষ্কার করা; যেটি শুক্রাণুর উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

এর কারণ হচ্ছে পুরুষেরা সবসময় শুক্রাণু উৎপাদন করতেই থাকে। আর এটা কার্যকর করার জন্য স্বাভাবিক শুক্রাণু উৎপাদন (প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়ন) হার অনেক কমিয়ে আনতে হবে।

সমীক্ষাটি এনড্রোক্রাইন সোসাইটি প্রকাশ করে। আর এটি প্রকাশিত হয় জার্নাল অব এন্ডোক্রিনোলজি এন্ড মেটাবলিজম-এ।

গবেষণাটি চালানো হয় ১৮-৪৫ বছর বয়সী পুরুষের মাঝে এবং যারা এক বছর ধরে একগামী সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তাদের সঙ্গীরাও এ ধরণের পরীক্ষায় অংশ নিতে রাজি ছিলেন।

প্রথমে গবেষণায় অংশ নেওয়া পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ পরীক্ষা করা হয়। যাদের শুক্রাণুর সংখ্যা স্বাভাবিক পাওয়া যায় তাদেরকেই গবেষণায় নেওয়া হয়। এরপর তাদেরকে প্রতি আট সপ্তায় দুটি হরমোন ইনজেকশন (প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন) দেওয়া হয়। ছয় মাস তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ সময়ে তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা এক মিলিয়নও পৌছতে পারেনি।

ইনজেকশন বন্ধ করার পর পর্যবেক্ষণ করা হয় তারা কত দ্রুত স্বাভাবিক শুক্রাণু উৎপাদনে ফিরে আসতে পারে। ২৭০ জনের মধ্যে ৮ জন এক বছরের মধ্যে স্বাভাবিক শুক্রাণু উৎপাদন করতে পারেনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. ম্যারিও ফেস্টিন যিনি এই গবেষণাটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তিনি বলেন, এই সমীক্ষা খুঁজে বের করল পুরুষদের হরমোনগত জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এই পদ্ধতি অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ঝুঁকি কমাবে।