৮২ নারীকে ধর্ষণ ও নৃশংস খুন করেও মেয়ের কাছে ‘পৃথিবীর বেষ্ট বাবা’!
ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত সিরিয়াল কিলার আছে যাদের কর্মকাণ্ডের কথা শুনলে ভয়ে শিহরিত হতে হয়। পেশায় একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন তিনি । বর্তমানে সিরিয়াল কিলিং-এর অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ভোগ করছেন ।
ভয়ানক এই মানুষরুপি পাষণ্ড ব্যক্তি এতটাই নির্মম ছিলেন যে, নিজের মেয়ের স্কুলের শিক্ষিকাকে খুন করে তারই শেষকৃত্যের জন্য টাকা দিয়েছিলেন। তার মাত্র কদিন পরেই পালাক্রমে পুলিশের গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করে খুন করেন নিজের মেয়ের স্কুলে পড়ুয়া দুই স্কুলছাত্রীকেও।
সেই ভয়ংকর খুনি বাবা পৃথিবীর চোখে ঘৃনিত হলেও মেয়ের কাছে ভালোবাসার ‘বাবা’ মাত্র। বাবার স্মৃতিচারনে তার মেয়ে নিজের ব্লগে একটি স্মৃতিচারনে তার অকৃত্তিম ভালোবাসার কথা প্রকাশ করার পরেই ঘটনাটি নতুন করে নজর কাড়ে সবার।
দ্যা ডেইলি সান এ প্রকাশিত একটি সংবাদসুত্রমতে,
বিচারের আদালতে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ঠিক কতজনকে ধর্ষণ আর খুন করেছেন?
কিন্তু তার সুস্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি মিখাইল ওয়ারওফ নামের ভয়ংকর এই ঠান্ডা মাথার খুনি । তবে আদালতের চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ আর তথ্য বলছে ৮২ জন নারীকে ধর্ষণের পর খুন করেছেন পপকভ। তবে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশের পোশাক পরে নাইটক্লাবের সামনে বেশ নিয়ম করেই অপেক্ষা করত ওয়ারওফ। কোন মেয়ে একা বেরোলেই তাকে সাহায্য করার নামে গাড়িতে তুলে নৃশংস কায়দায় ধর্ষণ শেষে হত্যা করত। মোট কথা যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেই এই সিরিয়াল কিলার একধরনের পাশবিক আনন্দ পেতেন । তার বিরুদ্ধে হত্যার পর কোন নারীকে ধর্ষণের ভয়াবহ অপরাধও ছিলো ।
সিরিয়াল কিলিং বা সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে আমাদের আগ্রহের শেষ নেই। তাদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে মনোবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে অপরাধবিজ্ঞানীদেরও গবেষণার শেষ নেই। সিরিয়াল কিলার বা ধারাবাহিক খুনিদের নিয়ে যুগে যুগে বহু সিনেমা, গল্প, কাহিনীর জন্ম হয়েছে। রহস্যময় সেই সিরিয়াল কিলাররা হয়ত আমাদের আশেপাশেই লুকিয়ে আছেন আপনার মত সাধারন চেহারা নিয়েই!
রাশিয়ার সাইবেরিয়ার শান্ত শহরে ২২ জন নারীকে খুন করার অভিযোগে ২০১৫ সালে তাকে আদালতে বিচার শেষে শাস্তি দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, অনেককে খুন করার পর তাদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলেছিল এই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার। অনেকের দেহ ছিঁড়ে বের করে এনেছিল হৃৎপিণ্ড। প্রত্যেককে খুন করার আগে ও পরে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে মৃতদেহগুলো চরম বিকৃত করা হয়েছে।
পপকভের মেয়ে মানতে নারাজ যে তার বাবা একজন খুনি। মেয়ের কাছে পপকভ ‘বেস্ট’ বাবা। স্কুল শেষে মেয়েকে আনতে যাওয়া, একসঙ্গে গাড়ির মডেলের কালেকশন বানানো সবই করেছেন। শুধু তাই নয়, পেশাগত জীবনেও বেশ সুনাম ছিল পপকভের। শুধু একবার এক ধর্ষণকারীকে খুন করেছিলেন পুলিশের পোশাক পরেই। তাতে কোন শাস্তি হয়নি পপকভের।
যদিও তার এই অপরাধের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে অনুসন্ধান বলছে সম্ভবত স্ত্রী’র অবৈধ সম্পর্কের জেরেই মাথা বিগড়ে যায় পপকভের। হঠাৎ একদিন মনে হয় যেভাবেই হোক একজন মেয়েকে খুন করতে হবে। সেই শুরু। এরপর থেকে রুটিন হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশের পোশাকে, পুলিশের গাড়ি নিয়ে নাইটক্লাবের সামনে অপেক্ষা করত পপকভ। কোন মেয়ে একা বেরোলেই তাকে সাহায্য করার নামে গাড়িতে তুলে ধর্ষণ শেষে হত্যা করত।
পৃথিবীর আরও ১০ বিখ্যাত সিরিয়াল কিলারের নৃশংসতার ঘটনা
খুন কোনো কোনো মানুষের নেশা হতে পারে তা কি ভাবতে পারা যায় ! ঠান্ডা মাথায়, পরিকল্পনা করে কোন ব্যক্তিকে খুন করা আমরা গল্প-উপন্যাসে হরহামেশাই পড়ি । কিন্তু বাস্তবে ? বাস্তবেও যে আমরা এমন কয়েকজন সিরিয়াল কিলারদের তথ্য জানবো যারা ছিল ঠান্ডা মাথার খুনি । তাদের নৃশংসতার কথা শুনলে আতঙ্ক জাগবে মনে, ভয়ে হয়ে পড়বেন শিহরিত ।
১। জ্যাক দ্য রিপার
সালটা ১৯৮৮। পূর্ব লন্ডনের এক ঘিঞ্জি বস্তির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন যৌনকর্মী ক্যাথরিন এডোওয়ে। হঠাৎ তার তীব্র চিৎকারে ছুটে আসে পাড়া পড়শীরা । তারা ক্যাথরিনের দেহটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন । সেবছরই পূর্ব লন্ডনে আরো চার যৌনকর্মী একইভাবে খুন হতে দেখা যায় । স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড অনেক চেষ্টায়ও খুনির কোন হদিস পায় নি । তবে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, একজন ব্যক্তিই এ খুন গুলোর সাথে জড়িত । পুলিশের পক্ষ হতে তার নাম দেয়া হয় জ্যাক দ্য রিপার । শিকারদের প্রত্যেককেই গলার নলি কেটে ফেলত খুনী। কিন্তু কি কারণে সে এ কাজ করত তা আজও রহস্য। সে সময় এই সিরিয়াল কিলারের ভয়ে পূর্ব লন্ডনের আশেপাশের অঞ্চলের বাসিন্দারা সবসময় আতঙ্কিত ছিল । আজ পর্যন্ত লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড এই খুনির কোন নাগাল পায়নি । তবে ১২৬ বছর পর ২০০৭ সালে খুনির ফেলে যাওয়া একটি চাদরে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ডিএনএ পরীক্ষা করে পুলিশ এই কুখ্যাত খুনি কে তা জানতে পেরেছে বলে দাবি করেছে । তাদের অনুমান এই খুনি হল অ্যারন কসমিনস্কি। এই ইহুদি ছিলেন পোলেন্ডের অধিবাসী । পেশায় হেয়ার ড্রেসার । ‘প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়ায়’ আক্রান্ত ছিল বলেই একধরনের বিকৃত মানসিকতায় ভুগত এবং তার কারণেই এই খুনগুলো সে করেছিল বলে পুলিশের পক্ষ হতে বর্তমানে দাবি করা হচ্ছে । –সময়ের কণ্ঠস্বর