স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে ৭ খাবার
স্মৃতিশক্তি যেন বিপরীতমুখী। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৪ কোটি ৭৫ লাখ মানুষ স্মৃতিভ্রংশ (ডিমেনশিয়া) রোগে আক্রান্ত। প্রতিবছরই এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে বছরে প্রায় ৭৭ লাখ মানুষ স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এভাবে এগুতে থাকলে একটা সময় পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আর এমন করূণ পরিণতি থেকে বাঁচতে এখনই সাবধান হওয়া উচিত আমাদের।
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। তবে চিকিৎসক এবং গবেষকদের মতে, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রের বয়সের তেমন কোনো ভূমিকা থাকে না। বরং ঘুমের অভাব, মানচিক চাপ, শারীরিক কার্যকলাপ বা জীবনধারা এবং পরিবেশগত পরিবর্তনই স্মৃতিশক্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে খাদ্যাভ্যাসকে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)। এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটির মতে, মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খাদ্য।
ডিমঃ
সহজলভ্য এবং পুষ্টিতে ভরপুর একটি খাবার হলো ডিম। রক্তে শর্করার পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে এই খাবার। প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইডেট এবং ভিটামিন ডি রয়েছে এতে। জলের দ্রবণীয় পুষ্টিগুণ রয়েছে ডিমের কুসুমে; যা মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ডিম থাকা উচিত।
সূর্যমুখীর বীজঃ
বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত ভোজ্যতেলের তালিকায় অন্যতম সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তৈরি তেল। এতে প্রচুর পরিমাণে জল দ্রবণীয় পুষ্টিগুণ বা কলিন রয়েছে; বয়স্কদের স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিচালনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সূর্যমুখীর বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই আছে। স্মৃতিশক্তি ভালোভাবে পরিচালনা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন-ই।
মাছঃ
টুনা মাছ এবং স্যালমনসহ প্রায় সব মাছের চর্বিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে; যা মস্তিষ্কের কার্য পরিচালনায় সাহায্য করে। বাচ্চার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মাছ। এছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও মাছ খুবই উপকারী খাবার।
স্ট্রবেরি ও কালোজামঃ
স্ট্রবেরি এবং কালোজামে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে; যা মস্তিষ্কের সংকেত পথচালনার জন্য উপকারী। এছাড়া মানব শরীরের কোষের মৃত্যু নিবারণে সাহায্য করে জাম। একইসঙ্গে মস্তিষ্কের প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে ছোট্ট এই ফলটি।
শাকঃ
আমাদের দেশে গ্রামে-গঞ্জে খোলা মাঠে বিভিন্ন রকম শাক পাওয়া যায়। এসব শাকে লুথিন নামক পদার্থ রয়েছে; যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জন্য শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। মস্তিষ্কের উন্নতিতে এবং কার্যনির্বাহে সাহায্য করে লুথিন। এছাড়া শরীর চর্চাতেও ভূমিকা রাখে শাক।
বাদামঃ
ভিটামিন-ই এর অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস কাজুবাদাম, চীনাবাদাম ও আখরোট। মস্তিষ্কের কার্য পরিচালনায় সাহায্য করে বাদাম।
ডার্ক চকলেটঃ
কোকোয়া বীজের বিশেষ উপাদান সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট প্রাপ্তবয়স্কদের বয়সজনিত স্মৃতিশক্তি লোপ ঠেকাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কোকোয়া বীজ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে সার্বিক বুদ্ধিমত্তা তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়ে। ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন রয়েছে; যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন এই ৭ খাবার। এতে কমবে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের প্রবণতা।