ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর উপায়
আমাদের আশেপাশে পরিচিত অনেকের অসুস্থতার কারণ হিসেবে শোনা যায় বেন স্ট্রোকের কথা। মস্তিষ্কের রক্তনালির মারাত্মক দুর্ঘটনাকে মূলত ব্রেন স্ট্রোক বলা হয়। এ দুর্ঘটনায় রক্তনালি বন্ধও হতে পারে, আবার ফেটেও যেতে পারে। যেকোনো বয়সী মানুষের সমস্যাটি হতে পারে। তবে নারীদের চেয়ে পুরুষদের মাঝেই সমস্যাটা বেশি দেখা যায়।
স্ট্রোক সাধারণত দুই প্রকার- ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক। ইস্কেমিক স্ট্রোকে আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মস্তিষ্কের স্ট্রোক করা অঞ্চলে রক্ত প্রবেশ করে না, যা রোগীর মৃত্যু ঘটায়। অপরদিকে, হেমরেজিক স্ট্রোকে রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে যাওয়া রক্ত মস্তিষ্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে মস্তিষ্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ হল উচ্চ রক্তচাপ। এছাড়াও বেশি কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ, ধুমপান, স্থূলতা, মদ্পান, হৃদরোগ, পরিবারে অন্য কারো স্ট্রোকের ইতিহাস ইত্যাদি কারণে স্ট্রোক হতে পারে।
স্ট্রোক হলে মাথা ঘুরায়, হাঁটতে সমস্যা হয়, দেহের ভারসাম্য রক্ষায় অসুবিধা হয়, কথা বলতে আড়ষ্ঠতা দেখা দেয়, শরীরের বিশেষ অংশ অবশ হয়ে যায়, দুর্বলতা লাগে, শরীরের এক পাশ অকেজো হয়ে যেতে পারে, অনেক সময় পুরো শরীর অবশ হয়ে যায়, চোখে ঘোলা দেখা, অন্ধকার লাগা বা দিগুন দেখা, হঠাৎ খুব মাথা ব্যথা করা বা বমি হতে পারে।
ঝুঁকি কমানোর উপায়
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো যায়। এছাড়াও ব্লাড প্রেসার জানতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধুমপান না করা, কোলেস্টেরল এবং চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া, নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া , ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়ম করে হাঁটা, দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা, মাদক না নেয়া , মদপান না করা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
কারো স্ট্রোক হলে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষজ্ঞ স্নায়ুবিদের তত্ত্বাবধানে রেখে রোগীর চিকিৎসা করাতে হবে। অধিকাংশ সময় স্ট্রোকের সমস্যা পুরোপুরি ভালো হয় না। তাই স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় চিকিৎসা। রোগীকে সবসময় যত্নের মাঝে রাখার প্রয়োজন হয়।