ওজন কমাবে কাঁচা মরিচ
মরিচ বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। মরিচকে অর্থকারী ফসল বলা হয়। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই মরিচ চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকাতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কাঁচা মরিচ চাষ করা হয় ও বাজারজাতকরণ করা হয়। বিভিন্ন ধরণের মরিচ রয়েছে যেমন- ধানি মরিচ, বোম্বাই মরিচ, বেলুন মরিচ, লাল মরিচ ইত্যাদি। ভাতের সঙ্গে বা যেকোনো ভাজা-পোড়ার সঙ্গে কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। সন্ধ্যায় ঝাল মুড়ির সঙ্গে কাঁচা মরিচের লোভে অনেকে কাবু হয়ে লাল হয়ে যান। তবে জানেন কী? কাঁচা মরিচ স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। এছাড়াও কাঁচা মরিচের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। যদি ওজন কমে যাওয়ার সমস্যা থাকে তবে শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে কাঁচা মরিচ সাহায্য করে থাকে।
কাঁচা মরিচে কি থাকে? কাঁচা মরিচের ভেতরে রয়েছে ক্যাপসাইন যা ঝাল বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এই ক্যাপসাইকিনে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬। এছাড়াও রয়েছে আয়রন, পটাসিয়াম, সামান্য প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেড। এই উপাদানগুলো মুখে লালা আনতে সাহায্য করে। ফলে যেকোনো ধরণের খাবার খেতে ভালো লাগে। এছাড়াও এসব উপাদান ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি।
চর্বি কমাতে কাঁচা মরিচের ভূমিকা: খাবারের সঙ্গে থাকা কাঁচা মরিচ চর্বি ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি কোনো চর্বি জাতীয় খাবার খান আর এর সঙ্গে কাঁচা মরিচ খেলে মোটা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। গরমে কাঁচা মরিচ ক্ষতিকর টক্সিন ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায় ও শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
প্রতিদিন একটি করে কাঁচা মরিচ খেলে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যায়। মরিচ খেলে অনেকে ঘেমে যায়। এ ঘামের মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা হয় ও রক্তের ভারসম্য বজায় রাখে। এছাড়াও প্রতিদিন কাঁচা মরিচ খেলে হৃদপিন্ডের কোনো রকম সমস্যা থাকবে না। কাঁচা মরিচ মেটাবোলিজম বাড়িয়ে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এমন কি কাঁচা মরিচের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও বিটা ক্যারোটিন থাকে। যা শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, এটি রক্তের কোলেস্ট্রোরেলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। কাঁচা মরিচে থাকে ভিটামিন এ, যা হাড়, দাঁত ও নিউরনগুলোকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই বয়স বেড়ে গেলেও হাড়ের সমস্যা বা দাঁতের সমস্যা হবে না।
কাঁচা মরিচ যেকোনো ধরণের কাটা ছেঁড়া বা ঘাঁ শুকানোর জন্য খুবই উপকারি। কাঁচা মরিচে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি শরীরকে জ্বর, সর্দি ও কাশি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি কার্ডোভাস্ক্যুলার সিস্টেমকে কর্মক্ষম রাখতেও সাহায্য করে থাকে। কাঁচা মরিচে থাকা ভিটামিন এ চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা মরিচ নার্ভের কোনো ধরণের সমস্যা থাকলে তাও কমিয়ে দিতে খুব ভালো কাজ করে।
চুলকে সুরক্ষিত করতে চাইলে অবশ্যই কাঁচা মরিচ খেতে হবে। এটি চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। কারণ কাঁচা মরিচে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। রান্নাতে আমরা কাঁচা মরিচ খেয়ে থাকি। কিন্তু এই কাঁচা মরিচ কাঁচা অবস্থায় খেতে পারলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। ৩৭০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় কাঁচা মরিচ রান্না করলে বা ভাজলে এই কাঁচা মরিচের ভেতরে থাকা ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। রান্না করলে এর অনেক গুণাগুণই নষ্ট হয়ে যায়। তাই উপকার পাওয়ার জন্য অবশ্যই কাঁচা অবস্থায় কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কাঁচা মরিচ থাকলে ত্বকে বলিরেখা পড়াবে না।