নিদ্রাহীনতায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি
স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে আমরা কতকিছুই না করি। কিন্তু একবারোও কি ভেবে দেখেছেন আপনি নিজের কতটা ক্ষতি করছেন তার ধারণা আছে তো আপনার?
একটু বুঝিয়েই বলি, আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে রাত জেগে কথা বলাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, বাসায় পার্র্টি করছেন, রেস্ট করছেন না, অসময়ে টিভি দেখছেন, অন্য কাজ করছেন, সব মিলিয়ে আপনি নিয়মানুবর্তি না। এমন করে অনেকে জীবনযাপন করছে। কিন্তু এটাই কি সঠিক জীবনযাপন? নাকি অতিরিক্তি স্মার্টনেস।
কিন্তু জানেন কি অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যেতে থাকে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি প্রকাশনায় বলা হয়, একজন সুস্থ মানুষ প্রতি ৯০ মিনিট পর পর ঘুমের গভীর থেকে গভীরতর ধাপের দিকে যায়। যার মধ্যে সবচেয়ে গভীর ঘুমের সময় মানুষের ফিজিওলজিক্যাল পরিবর্তন আনে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অনিয়মিত ঘুমের কারণে ঘুমে বিঘ্ন ঘটে, ফলে মানুষ গভীর ঘুমের ধাপ পর্যন্ত যেতেই পারে না। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
তাছাড়া, প্রাকৃতিক ঘুমের সময়ের ব্যাঘাত ঘটিয়ে অন্য সময়ে ঘুমানো মনোযোগ ঘাটতির জন্ম দিতে পারে। গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে গলা কিছুটা ভারী হয়ে যায়। নিয়মিত এমন হলে কণ্ঠস্বরে স্থায়ী একটি পরিবর্তন আসতে পারে। এতে করে যারা বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় কাজ করার চিন্তা করছ, তারা রাত জাগার বিষয়ে সিরিয়াসলি ভাব। রাত জাগলে সাধারণত দিনে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। ফলে সারা দিন ফাস্ট ফুড থেকে শুরু করে অন্যান্য খাবারের দিকে আগ্রহ থাকে, যা ওজন বাড়াতে পারে।
আর বাড়তি ওজন নিয়ে পড়াশোনার মতো ‘ভারী’কাজ করাও কিন্তু ঝামেলার।
এছাড়া, রাত জেগে পড়া চোখের জন্যও ক্ষতিকর। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট ওয়েস্ট আই ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, রাত জাগার ফলে আই স্পাজম বা চোখে খিঁচুনি হতে পারে, যাকে মায়োকিমিয়া বলা হয়। ড্রাই আই জটিলতাও দেখা দিতে পারে। অনিয়মিত ও অপর্যাপ্ত ঘুমের সবচেয়ে বড় মানসিক সমস্যা এটি। এর ফলে বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া ও ঘন ঘন ভুলে যাওয়ার রোগ আলজেইমার্স হতে পারে।
এছাড়া রাত জাগার কারণে আর কি কি ক্ষতিকারক দিক রয়েছে চলুন জেনে নেই-
১। বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
২। ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
৩। কাজের উপর থেকে মনোযোগ হারিয়ে যেতে থাকে।
৪। মাথা ব্যথা এবং কোমরে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
৫। ওজন বৃদ্ধি পায়।
৬। দুশ্চিন্তা বাড়ে এবং মেজাজ খিটমিটে থাকে।
৭। ধীরে ধীরে এই অভ্যাসটি ইনসোমনিয়া রোগে পরিণত হয়।
অতএব, আপনি কি এমন জীবনযাপন চান? আপনি বেচেঁ থাকতে চান? সুন্দর জীবনযাপন চান? যদি আসলেই আপনি সুস্থ্য, সুন্দর জীবন চান তাহলে অবশ্যই নিমানুবর্তি হোন। কথায় বলে না যে, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।