পালং শাক এর কেরামতি
স্নিফার ডগ নয়, এবার বিস্ফোরক খুঁজে দেবে পালং শাক। কাছাকাছি ল্যান্ডমাইন পোঁতা থাকলে ই-মেলে পৌছে যাবে সতর্কবার্তা। বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী এই আবিষ্কারে দুনিয়াজুড়ে তোলপাড়।
শীতের পালং। আহা। উপাদেয় সব পদ। ষোলোআনা রসনাতৃপ্তি। পালক পনিরে মজেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শুধু মুখরুচিই নয়, পালংয়ে ভরপুর প্রোটিন, ভিটামিন। ফলে, শীত পড়লেই যেমন বাজারে টাটকা, তাজা পালংয়ের আমদানি, ঠিক তেমনই বাজারের ব্যাগেও পালং মাস্ট। কম পয়সার এই শাকে রয়েছে অসীম উপকারিতা।
পালংয়ে রয়েছে উচ্চমাত্রার ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে বেশিমাত্রার ভিটামিন এ, যা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে। ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখে। পালংয়ে রয়েছে ১০টিরও বেশি ফ্ল্যাভনয়েড, যা ক্যানসার সহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। পালংয়ে থাকা উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ফলিক অ্যাসিড হার্টকে সুস্থ ও সতেজ রাখে।
প্রাপ্তবয়স্ক ঘন সবুজ পালং পাতায় উচ্চমাত্রায় ক্লোরোফিল থাকায় এতে ক্যারটিনয়েড তৈরি হয়। এটি শরীরের ব্যথা কমায় ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। পালংয়ের এই গুণের কথা কমবেশি আমরা সবাই জানি। কিন্তু যেটা জানি না, সেটা জানলে আপনি চমকে উঠতে বাধ্য।
হইচই ফেলে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অভাবনীয় আবিষ্কার। এবার স্নিফার ডগের কাজ করবে এখানে-ওখানে গজিয়ে ওঠা পালং গাছ। কাছাকাছি বিস্ফোরক থাকলে জানান দেবে পালং পাতা। পালং পাতার যে অংশে সালকসংশ্লেষ হয়, সেই অংশে সেন্সর লাগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ল্যান্ডমাইন এবং অন্যান্য বিস্ফোরকে নাইট্রোঅ্যারোমেটিক যৌগ নামে যে রাসায়নিক থাকে, সেটিকে সহজেই চিহ্নিত করতে পারে এই সেন্সর। কোথাও ল্যান্ডমাইন পোঁতা থাকলে পালং গাছ তার শিকড়ের মাধ্যমে ওই রাসায়নিক টেনে নেয়। ১০ মিনিটের মধ্যে সেই রাসায়নিক পালং পাতায় পৌছে যায়। জেগে ওঠে সেন্সর। সেন্সর একটি ফ্লুরোসেন্ট সিগন্যাল দেয়। কাছাকাছি ইনফ্রারেড ক্যামেরায় তা দেখা যায়। ছোট্ট একটি কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত থাকে ওই ক্যামেরা। ফলে বিস্ফোরকের সতর্কবার্তা ই-মেলেও পৌছে যায়।
যে কোনও জীবন্ত গাছে এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধু পালং শাকের বিস্ফোরক চিহ্নিতকরণই নয়, আরও একটি অভাবনীয় বিষয় নিয়ে কাজ করছেন জীববিজ্ঞানীরা। গবেষণায় সফল হলে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কারের সাক্ষী থাকবে গোটা বিশ্ব। কাছাকাছি কোনও দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ থাকলে তার জানান দেবে গাছ।