শুধু হলুদ খেয়ে ক্যান্সার থেকে মু্ক্তি পেলেন এই নারী
আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে ওজন কমানো থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ থেকে মুক্তিতেও হলুদ বেশ কার্যকরী। এবার এক নারী তিনি কীভাবে হলুদ খেয়ে মায়েলোমা ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেলেন তার বিবরণ দিয়েছেন। মায়েলোমা হলো হাড়ের মজ্জার রক্তরস কোষের ক্যান্সার। এটি এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার।
ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল কেস রিপোর্টস এ প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে ৫৭ বছর বয়সী ওই নারীর নাম ডিনেকে ফার্গুসন। ২০০৭ সালে তার দেহে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। উচ্চরক্তচাপের কারণে ডাক্তারের কাছে গেলে তার এই রোগ ধরা পড়ে। এরপর তার তিন রাউন্ড কেমোথেরাপি করানো হয় এবং চারটি স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট করানো হয়। কিন্তু ওই চিকিৎসা ব্যর্থ হয় এবং তার পুরো দেহে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ক্যান্সারের ফলে তার তীব্র পিঠব্যথা দেখা দেয় এবং তার দেহের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়তে থাকে।
এরপর ওই নারী নিজেই অনলাইনে ক্যান্সারের ওষুধ নিয়ে গবেষণা করতে থাকেন। গবেষণার পর ২০১১ সাল থেকে ক্যান্সারের প্রচলিত ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে প্রতিদিন ৮ গ্রাম করে কারকিউমিন খাওয়া শুরু করেন ওই নারী। কারকিউমিন হলুদের প্রধান পুষ্টি উপাদানগুলোর একটি। বাজারে যেই উচ্চমাত্রার কারকিউমিনসমৃদ্ধ ট্যাবলেট পাওয়া যায় তার দাম অনেক; ১০ দিনের জন্য ৫০ পাউন্ড খরচ হয়ে যেত।
ফলে তিনি শুধু কারকিউমিন পাউডার খেতেন। প্রতিদিন রাতে খালি পেটে দুই চা চামচ কারকিউমিন খেতেন তিনি। এভাবে কারকিউমিন সেবন করতে করতে তিনি ক্যান্সার থেকে মুক্তি পান। এখন তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
ডাক্তাররা বলছেন, এভাবে শুধু কারকিউমিন খেয়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তির পাওয়ার ঘটনা আমাদের জানা মতে এটাই প্রথম। এমন আর কোনো ঘটনা এর আগে রেকর্ড করা নেই।
ডিনেকে ফার্গুসন প্রথম চিকিৎসা করিয়েছিলেন লন্ডন বার্টস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্ট-এ। তার চিকিৎসক ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল কেস রিপোর্টস-এ লিখেছেন, ‘আমার জানা মতে এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম যেখানে প্রচলিত চিকিৎসা না নিয়ে শুধু কারকিউমিন খেয়ে ক্যান্সারের মতো রোগের নিরাময় হয়েছে।’
কারকিউমিন খাওয়া শুরু করার পর তিনি সপ্তাহে একবার হাইপারব্যারিক অক্সিজেন থেরাপি (৯০মিনিট, ২ ATA-তে) নেওয়া শুরু করেন। তিনি নিয়মিত এখন কারকিউমিন সেবন করেন এবং অক্সিজেন থেরাপি নেন। এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
গত পাঁচ বছরে এই দুটি ছাড়া আর কোনো চিকিৎসা না নিয়েও তার ক্যান্সার স্থির হয়ে আছে আর তার দেহে বিশুদ্ধ রক্তের পরিমাণও স্বাভাবিক অবস্থায় আছে।
ডিনেকে ফার্গুসন এর এই ঘটনায় চিকিৎসক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এবং হলুদ নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হলুদে থাকা কারকিউমিন এর পঁচনরোধী, প্রদাহরোধী এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদানের জন্য বিখ্যাত। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন মস্তিষ্কের কার্যক্রম শক্তিশালী করে এবং ফুসফুস, হৃদরোগ ও মানসিক অবসাদ এর ঝুঁকি কমায়।
যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর চিকিৎসার অভাবে প্রায় ৫,৫০০ জন মানুষ মায়েলোমা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। কারণ এখনো এর কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি।