বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার একমাত্র ঔষধ কাঁচা কলা !
শরীরকে সুস্থ রাখতে, বিশেষত পেটকে, সেই ছোট বেলা থেকে কাঁচা কলা খেয়ে আসছি। কিন্তু দেখুন কি কান্ড একদল গবেষক কাঁচা কলার গুণাগুন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, কাঁচা কলা খাওয়া আদৌ উচিৎ কিনা, সেই নিয়েও নানা মহলে শুরু হয়েছে গবেষণা। তা এত গবেষণা করার পর কী জানা গেল? কাঁচা কলা খাওয়া কি সত্যিই উচিৎ নয়? শুনলে হয়তো অবাক হয়ে যাবেন যে প্রায় প্রতিটি গবেষণাতেই দেখা গেছে শুধু পেট খারাপ সারাতে নয়, আরও বেশ কিছু জটিল রোগের চিকিৎসাতেও কাঁচা কলার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে! তবে এখানেই শেষ নয়। নিয়মিত এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে মেলে আরও অনেক উপকার। কিন্তু দেখুন সেদিকে আমাদের কারও খেয়াল নেই। তাই তো আজ এই প্রবন্ধের মাধ্যমে এই প্রকৃতিক সুপার ফুডটির বিষয়ে এমন কিছু তথ্য পরিবেশন করা হল, যা পড়তে পড়তে আপনার চোখ কপালে উঠবেই উঠবে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন ঝটপট জেনে ফেলা যাক কাঁচা কলা খাওয়া শুরু করলে কী কী উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে…
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: কাঁচা কলায় রেছে প্রচুর মাত্রায় ডায়াটারি ফাইবার, যা রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে থাকে, সেই সঙ্গে আর্টারির কর্মক্ষমতারে বাড়িয়ে তোলে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি নানাবিধ রোগের রোগ দূরে থাকতেও বাধ্য হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে: গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা কলায় উপস্থিত পটাশিয়াম, শরীরে প্রবেশ করার পর ব্লাড ভেসেলের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে শিরা-উপশিরায় অন্দরে তৈরি হওয়া প্রেসারকেও কমিয়ে ফেলে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তাই আপনার পরিবারে যদি হাই ব্লাড প্রেসারের মতো রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়মিত কাঁচা কলা খেতে ভুলবেন না যেন!
পেটকে ঠান্ডা রাখে: কাঁচা কলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি ডাইজেস্টিভ ট্র্যাকের কর্মক্ষমতা বাড়াতে এবং বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শুধু পেট খারাপ নয়, যারা প্রায়শই গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা কাঁচা কলাকে কাজে লাগিয়ে আরোগ্য লাভ করতে পারেন কিন্তু
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: কাঁচা কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। বরং সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে এই ফলটি। তাই তো ডায়াবেটিকরা নিশ্চিন্তে কাঁচা কলা খেতে পারেন। তবে ইচ্ছা হলে এ বিষয়ে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতেই পারেন।
উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে নিয়মিত কাঁচা কলা খেলে ইন্টেস্টাইনে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে নানাবিধ পেটের রোগও দূরে পালায়।
পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করে: এক কাপ কাঁচা কলায় প্রায় ৫৩১ এম জি পটাসিয়াম থাকে, যা পেশির গঠনে উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নার্ভ এবং কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, রক্তে যাতে কোনও ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান থাকতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে কাঁচা কলায় উপস্থিত পটাশিয়াম। তাই যে কোনও মরসুমে যদি শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হয়, তাহলে রোজের ডায়েটে কাঁচা কলাকে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন!
ওজন কমাতে সাহায্য় করে: কাঁচা কলায় উপস্থিত রেজিস্টেন্স স্টার্চ হজম হতে সময় নেয়। ফলে বহুক্ষণ ক্ষিদে পায় না। আর ক্ষিদে না পেলে খাবার খাওয়ার পরিমাণও কমতে শুরু করে। ফলে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ ঘটে কম। আর এমনটা দীর্ঘ দিন ধরে যখন হতে থাকে, তখন ওজন কমতে সময় লাগে না।
পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়: খাবারে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদানগুলি যাতে ঠিক মতো শরীরের কাজে লাগতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে কাঁচা কলায় উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান। ফলে নিয়মিত এই ফলটি খেলে অনায়াসেই পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। আর এমনটা হওয়া মাত্র শরীরের কর্মক্ষমতা যে বৃদ্ধি পায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভিটামিনের চাহিদা মেটায়: কাঁচা কলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় বিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি। এই দুটি ভিটামিন শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ধরুন ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে সংক্রমক রোগকে দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অন্যদিকে ভিটামিন বি৬ শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।