পুরুষের বিশেষ সমস্যা : রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন
পুরুষের যখন বীর্যপাত ঘটে, স্বাভাবিকভাবে সেটা মূত্রনালি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তা না হয়ে বীর্য যদি পেছনের দিক দিয়ে মূত্রথলিতে চলে যায়, তা হলে তাকে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন বলে।
যেভাবে ঘটে : স্বাভাবিকভাবে মূত্রথলির স্ফিংটার সঙ্কুচিত হয় এবং শুক্রাণু মূত্রনালিতে ধাবিত হয়। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের ক্ষেত্রে এই স্ফিংটার ঠিকমতো কাজ করে না।
কারণ : এ ধরনের বীর্যপাতের কারণ অটোনমিক স্নায়ুতন্ত্র কিংবা প্রোস্টেট অপারেশনের জন্য হতে পারে। টিইউআরপি (ট্রান্স ইউরেথ্রাল রিসেকশন অব প্রোস্টেট)-এর একটি সাধারণ জটিলতা হচ্ছে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হয়। এসব ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ওষুধটি হচ্ছে ট্যামসুলোসিন। এটি বিভিন্ন কারণে মূত্রপথের মাংসপেশিগুলো শিথিল করতে ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ মূত্রথলির স্ফিংটারকে শিথিল করতে পারে এবং এ কারণে স্ফিংটার পুরোপুরি সঙ্কুচিত হতে ব্যর্থ হয়। অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট এবং অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধগুলোও এ ধরনের সমস্যা তৈরি করে থাকে। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জটিলতা হিসেবে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি দীর্ঘদিন রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণ না করেন, তা হলে এ সমস্যাটি দেখা দেয়। মূত্রথলির স্ফিংটারের স্নায়ু সমস্যার কারণে এটা হয়।
রোগ নির্ণয় : সাধারণত বীর্যস্খলনের পর পরই প্রস্রাব পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রস্রাবে বীর্য পাওয়া যাবে।
কার্যকর চিকিৎসা : রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের কারণে বন্ধ্যত্ব ঘটতে পারে। অর্থাৎ ওই পুরুষের স্ত্রী সন্তান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হন। এ ক্ষেত্রে পুরুষের শুক্রাণু মহিলার যোনিতে পৌঁছতে পারে না। তাই গর্ভসঞ্চার করার জন্য পুরুষটির প্রস্রাব সেনট্রিফিউজড করা হয় এবং শুক্রাণু আলাদা করে তা মহিলার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের ৪০ শতাংশ পুরুষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সিউডোইফিড্রিন ব্যবহারে বীর্যস্খলনের গুণগত উন্নতি হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, এই ওষুধের সাথে পুরুষাঙ্গ শিথিল হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যাদের সর্বক্ষণ পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে থাকে তাদের চিকিৎসার জন্য সিউডোইফিড্রিন ব্যবহার করা হয়। যেসব পুরুষের পুরুষাঙ্গ ঠিকমতো উত্থিত হয় না এবং যেসব পুরুষের রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হয় তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে একসাথে দুটো ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন- সিউডোইফিড্রিন এবং সিলডানাফিল।