চিরতা কেন খাবেন?
চিরতা ঔষধি গুণসম্পন্ন। চিরতা আসলে কি? এটি কালো মেঘ গাছকে তুলে শুকিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এর ডাল শুকিয়ে পরিষ্কার করে ধুঁয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা হয়। সেটাই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জ্বরের ক্ষেত্রে চিরতার পানি খুবই উপকারি। এছাড়াও চিরতার অনেক গুণাগুণ রয়েছে সেগুলো জেনে নিন-
চিরতার রসের উপকারিতা: চিরতা শরীরকে ব্যকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সকলেই জানি, তেঁতো খাবার খেলে শরীর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে কম আক্রন্ত হয়ে থাকে। যার ফলে শরীর কম রোগ ব্যাধি হয়ে থাকে। আর চিরতার স্বাদ খুবই তেঁতো। তাই চিরতার পানি শরীরকে বিভিন্ন রোগ ব্যাধির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, চিরতা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারি। কারণ চিরতা রক্তের সুগারের পরিমাণ কমায় ও রক্তের সুগার লেভের নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে থাকে। এটা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।
যেকোনো জ্বরাক্রান্ত রোগীর জন্য চিরতা জাদুকরী কাজ করে। জ্বরের ফলে শরীরের শক্তি কমে যায়, আবার অনেকেই সবসময় জ্বর জ্বর অনুভব করে থাকে, এসব দূর করতে চিরতা খুবই উপকারি। শুধু তাই নয়, চিরতা এলার্জির সমস্যা দূর করে। যদি আলার্জির সমস্যা থাকে তবে চিরতা খেতে পারেন। এলার্জির ফলে চোখ ফুলে যায়, শরীর ফুলে যাওয়া সহত্বকেও নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রোজ সকালে চিরতা ভেজানো পানি খেলে এসব সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
লিভার পরিষ্কারেও চিরতার পানি অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। আজকাল অনেকেই লিভারের সমস্যায় ভুগে থাকেন। ফ্যাটি লিভারসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে চিরতা খুব ভালো কাজ করে থাকে। এমন কি চিরতা শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে থাকে। চিরতার পানি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয় ও শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া বদ হজম, এসিডিটি সমস্যা থেকেও চিরতা রক্ষা করে। যদি হজমে কোনো সমস্যা থাকে তবে চিরতার পানি খেতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যও চিরতার পানি খুবই উপকারি। চিরতা অ্যানিমিয়ার সমস্যাও দূর করতে পারে। শরীরে রক্ত কমে গেলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। চিরতার পানি শরীরে রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে। তাই চিরতা যেহেতু রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, তাই এটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া ভালো।
ত্বকের যত্নে চিরতা: চিরতা তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি খেলে অল্প বয়সে বার্ধক্য আসার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। কারণ চিরতা রক্তকে পরিষ্কার করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, চিরতা ত্বকের যত্নেও খুব উপকারি। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: চামড়ার ঘা, ক্ষত বা স্কিনের, যেকোনো ধরণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে চিরতা। এছাড়াও চিরতা ত্বকের যেকোনো ইনফেকশন কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। ত্বকের লাবন্যতা ধরে রাখতেও চিরতা বেশ উপকারি। তাই ত্বকের যত্নে প্রতিদিন সকালে চিরতা খেতে পারেন।
সাবধানতা: গর্ভবতী মহিলারা চিরতার রস খাবেন না। যাদের আলসার আছে তাদের কখনো চিরতার রস খাওয়া ঠিক না। কোনো খাবারই অতরিক্ত খাওয়া ঠিক না। তেমনি চিরতা কখনো অতিরিক্ত খাবেন না। বেশি পরিমাণে চিরতা খেলে গায়ে জ্বালা পোড়া করতে পারে, বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে। শরীরে কোনো কঠিন সমস্যা বা রোগ ব্যাধি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিরতা খেতে হবে। চিরতার স্বাদ খুবই তেঁতো। তাই প্রথম দিকে খেলে বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।