বেকিং সোডার গুনাগুণ
বেকিং সোডা সবার রান্না ঘরেই কম বেশি থাকে। শুধু কেক তৈরি করতে নয়, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যগত দিক দিয়েও এর গুনাগুণ অনেক। বেকিং সোডা অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টাসিড হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। বেকিং সোডাতে আছে সোডিয়াম বাই কার্বোনেট যার কারণে প্রাচীনকালে এটি সাবান হিসেবে ব্যবহার করা হত। প্রাকৃতিক দুর্গন্ধনাশক পদার্থ হাত ও দাঁত পরিষ্কার করার জন্য এই বেকিং সোডা ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিনের রান্নায় বেকিং সোডা ব্যবহার করা হলে তা শরীরের রক্তের সমতা বাজায় রাখতে সাহায্য করবে। এটি শরীরের এসিডের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। শরীরের সমস্ত কার্যক্রমগুলো ঠিক রাখতে এটি খুবই উপকারী। বেকিং সোডার উপকারিতা সারা বিশ্বে প্রাচীনকাল থেকেই স্বীকৃত। বেকিং সোডার উপকারিতাগুলো জেনে নিন-
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা: বেকিং সোডা অম্লনাশক। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত এসিড নিঃসরণ হয়ে থাকে। এটি শরীরের ক্ষেত্রে খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। যার ফলে অম্বলের সমস্যা প্রায়ই দেখা দেয়। বেকিং সোডার মধ্যে সোডিয়াম বাই কার্বনেট থাকায় এটি অম্বলের সমস্যাসহ নানা রকম পেটের সমস্যা সমাধানে খুবই ভালো কাজ করে। বেকিং সোডা শরীর থেকে এসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীর থেকে অম্লের পরিমাণও কমিয়ে দিয়ে থাকে। শরীরে অম্লের পরিমাণ বেশি হলে আস্ট্রিওথ্রাইসিস ও আথ্রারাইজারের মতো সমস্যাও হতে পারে।
যারা প্রতিদিন ব্যায়াম করেন তাদের শরীরে ল্যাকটিক এসিড জমতে পারে। শরীরে পেশিগত কাঠিন্যতা দেখা দিলে এই সমস্যার সমাধানেও বেকিং সোডা খুবই উপকারী। পানির সঙ্গে মিশ্রিত বেকিং সোডা এ ক্ষেত্রে অনেক ভালো কাজ করে থাকে। শুধু তাই নয়, কিডনির কাজকর্ম ঠিক রাখতে সাহায্য করে বেকিং সোডা। ক্ষারীয় পদার্থ হিসেবে বেকিং সোডা শরীরে অম্লের পরিমাণ কমাতে ও পিএইচ এর সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, এটি কিডনির নানা রকম সমস্যার ক্ষেত্রে খুবই উপকারী একটি উপাদান। গিটে ব্যথার পরিমাণ কমাতেও বেকিং সোডা খুবই উপকারী। ইউরিক এসিডের পরিমাণ ইউরিন ও অন্যান্য পেশিতে বেড়ে গেলে সারা শরীরে খুবই যন্ত্রণা হয় এবং এর ফলে গিটে ব্যথা হয়ে থাকে। এটি সারাতেও বেকিং সোডা খুবই ভালো কাজ করে।
ত্বক ও চুল ভালো রাখতে: ত্বক ভালো রাখতেও বেকিং সোডা খুব ভালো কাজ করে। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষ গজাতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। এর জন্য পারিমাণ মতো পানির সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করতে হবে। কিছু সময় রেখে পানি দিয়ে ধুঁয়ে নিবেন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই দিনের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এছাড়াও ব্রণের সমস্যা সমাধানের বেকিং সোডা খুবই উপকারি।
ব্রণ ও মুখের ফুসকুড়ি দূর করতেও বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। অনেকের ঠোট কালো হয়ে থাকে অথবা ঠোঁটে কালচে দাগ পড়ে। এটি দূর করতেও বেকিং সোডা খুব ভালো কাজ করে থাকে। এর জন্য প্রতিদিন এক চা চামচ মধুর সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে হবে। এভাবেই পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে ঠোঁট পানি দিয়ে ধুঁয়ে নিবেন। এতে ঠোঁটের কালো ভাব অনেক দূর হয়ে যাবে।
দাঁত সাদা রাখতে কে না চায়। কিন্তু অনেক সময় যত্নের অভাবে এই সাদা রঙ হারিয়ে যায়। তাই দাঁতের সাদা রঙ ফিরিয়ে আনতে বেকিং সোডা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। টুথপেস্টের সঙ্গে বেকিং সোডা লাগিয়ে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করতে হবে। তবে দাঁত উজ্জ্বল ও ঝকঝকে হয়ে যাবে। চুলকে নরম করতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে বেকিং সোডা। তাই চুলের যত্নে ও চুল ভালো রাখতে যেকোন হেয়ার প্যাক বা মেহেদী প্যাকের সঙ্গে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন।