৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

হেঁচকি কেন হয়? জানুন

১৯২২ সালের কথা। চার্লস অসবোর্ন নামের এক মার্কিন নিজ খামার থেকে বেছে মোটা তাজা এক শূকর কাঁধে তুলে নেন। উদ্দেশ্য খুবই মহৎ, বাজারে নিয়ে জবাই করে বিক্রি করে দেবেন। যেই ভাবা সেই কাজ, কিন্তু মুশকিলের শুরু কিছুদুর যাওয়ার পরপরই। অনবরত হেঁচকি উঠতে শুরু করে মার্টিনের। যা থামলো ১৯৯০ সালে! মানে জনাব অসবোর্ন ৬৮ বছর টানা হেঁচকি দিয়েছেন। যে কারণে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে তার নামও উঠে যায় ‘সর্বোচ্চ সময় হেঁচকি দেওয়া ব্যক্তি হিসেবে’। জেনিফার মি নামের এক শিশু আবার চার সপ্তাহেরও বেশি মিনিটে পঞ্চাশবারের মতো হেঁচকি দিয়ে রেকর্ড গড়ে! আমাদের হয়তো এতবার হেঁচকি আসে না, কিংবা মাঝেমধ্যেই হেঁচকি আসলে তেমন খেয়ালই করি না, কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে ঠিক কি কারণে হেঁচকি আসে!

শরীরের ভ্যাগাস নার্ভ অথবা এর কোনো একটি শাখা-প্রশাখা (মস্তিস্ক থেকে তলপেট পর্যন্ত বিস্তৃত) বাধাপ্রাপ্ত অথবা উদ্দীপ্ত হলে হেঁচকি হয়। বিশেষজ্ঞগণ বলেন, সাধারণত পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণে এটি হতে পারে। দ্রুত খাওয়ার চেষ্টা, অনেক গরম ও মসলাদার খাবার খেলে, গরম খাবারের সঙ্গে খুব ঠান্ডা পানীয় পান করতে শুরু করলে, অনেকক্ষণ ধরে হাসলে বা কাঁদলে, উত্তেজনায় হেঁচকি হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। হেঁচকি সাধারণত কিছু সময় স্থায়ী হয়, অস্বাভাবিক কিছু ক্ষেত্রে এটা মাসব্যাপী স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বড়দের অবিরত হেঁচকি হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থাকতে পারে। উদ্বেগ, কিডনির রোগ, শরীরে লবণের ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান, ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ায় হেঁচকি হতে পারে। আবার মস্তিষ্কের কিছু রোগ যেমন টিউমার বা ফোঁড়া, পেটের কিছু রোগ, যেমন অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ বা হেপাটাইটিস ইত্যাদিও হেঁচকির কারণ হতে পারে। তবে শারীরিক সমস্যা ও রোগে অনেক সময় বিরক্তিকরভাবে বারবার বা অবিরত হেঁচকি হতে পারে। কিভাবে হেঁচকি হয় তা এখনও রহস্যাবৃত। তবে এটা নিশ্চিত যে, হেঁচকি হওয়ার জন্য স্নায়ুর অস্বাভাবিকতা জড়িত থাকছে। এ স্নায়ুগুলো মস্তিষ্কের ভুল জায়গায় উদ্দীপনা পাঠাতে পারে বা মাংসপেশির ছন্দময় স্বাভাবিক সংকোচন প্রসারণকে নষ্ট করে দিতে পারে। এ স্নায়ুগুলো প্রধানত বক্ষচ্ছদাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে পাকস্থলি কেন এতে সাড়া দেয়, তা এখনও পরিষ্কার নয়। হেঁচকির প্রধান স্নায়ু হলো ফ্রেনিক স্নায়ু। ফ্রেনিক স্নায়ুটি অনেক লম্বা এবং এটি অনেকগুলো অঙ্গে সরবরাহ হয়।

হেঁচকি উঠলে শরীরে কি ধরণের পরিবর্তন আসে সেটা জেনে নেয়া যাক। বক্ষচ্ছদার স্বাভাবিক সংকোচন প্রসারণ ছন্দ এলোমেলো হয়ে গেলে হেঁচকি উঠে। তখন মাংসল পর্দাটি সমতল হয়ে ফুসফুসকে প্রসারিত হওয়ার জায়গা করে দেয়। একই সময় আলজিভ্ নামক ছোট্ট মাংসপিণ্ডটি খাদ্যনালীর পথ বন্ধ করে দেয়। যেন তারা শ্বাসনালিতে ঢুকতে না পারে। কিন্তু হেঁচকির সময় বক্ষচ্ছদা ও পাঁজরের হাড়ের মধ্যবর্তী মাংসপেশিগুলো মোচড়ানো ধরনের মাংসপেশির সংকোচন ঘটায়। এতে অজ্ঞাতসারেই আলজিভকে বোকা বানিয়ে বাতাস ভেতরে ঢুকে যায়। বাতাস যখন সজোরে ভোকাল কর্ড পার হয়ে যায়, তখন হেঁচকির শব্দ ‘হিক’ ধ্বনিত হয়। অতপর মুখ ও নাসিকা পথ খোলে। বক্ষচ্ছদা ও পাঁজরের হাড়ের মধ্যবতী মাংসপেশিগুলো তখন শিথিল হয়।

Comments

comments