রান্নাঘরই হতে পারে দাওয়াখানা
স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে ওজন কিছুটা বেড়ে গেলেই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলেই মেদ কমা শুরু হবে। পাঁচ কেজির বেশি হলে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হতে হবে। তাঁর দেওয়া পরামর্শ মতো টার্গেট ঠিক করে ধীরে ধীরে ওজন কমাতে হবে। জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনতে হবে। বেশি রাত করে ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। রাতের খাবার দেরিতে খাওয়া চলবে না। আবার একেবারে না খেয়েও থাকা যাবে না। শরীরে মেদ কমাতে রান্নাঘরেরও ভূমিকা আছে।
♦ শরীরে ফ্যাট জমার অন্যতম উত্স হচ্ছে খাবারের অতিরিক্ত তেল। এ জন্য খাবারে যতটা সম্ভব কম তেল ব্যবহার করা ভালো। হাতের কাছে তেলের আধিক্য থাকলে অনেকেই ব্যবহারে অকৃপণ হয়ে উঠেন। এটা ঠিক নয়। এ জন্য রান্নাঘরে তেলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। খাবারে তেল কমলে শরীরেও মেদ কমা শুরু হবে।
♦ রান্নাঘরে ফাস্টফুড তৈরি পরিহার করতে হবে। পরিবর্তে দেশীয় খাবারের সুস্বাদু আইটেম করা যেতে পারে।
♦ তেলে ভাজা খাবার পরিহার করতে হবে। কম তেলে ভালো রান্না করা যায়—এমন কড়াই ও বাসন ব্যবহার করুন। ননস্টিক প্যানও ব্যবহার করতে পারেন।
♦ সময়মতো রান্নাঘরে খাবার তৈরি করুন। আলসেমি করে দেরি করে রান্নাঘরে প্রবেশ করলে সকালের নাশতায় দেরি হবে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। সকালে বেশি করে খেতে হবে। দুপুরে মাঝারি এবং রাতে কম খেতে হবে। রাতের খাবার ৮টার মধ্যেই রান্না করে খেয়ে নিতে হবে।
♦ রান্নাঘরে চিনি, মিছরি, জ্যাম, জেলির মজুদ গড়ে তোলা যাবে না। হাতের কাছে থাকলে এগুলো বারবার খেতে ইচ্ছা করবেই।
♦ রান্নাবান্নায় সবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
♦ রান্নাঘরে চা-কফি যত কম বানানো যায় তত ভালো। কারণ এগুলোতে লুকায়িত চিনি থাকে, যা সাধারণত আমাদের মনেই থাকে না। চা-কফির লুকায়িত চিনিও শরীরে মেদ জমার অন্যতম কারণ।
♦ রান্নাঘরের পাশে রাখা ফ্রিজে কোল্ড ড্রিংকসের মজুদ করা যাবে না। হাতের কাছে কোল্ড ড্রিংকস থাকলে বারবার তাতে গলা ভেজাতে মন চাইবে।
♦ রান্নাঘরের জন্য বাজারের পরিমাণেও মিতব্যয়ী হতে হবে। বেশি করে রান্নাবান্নার জিনিসপত্র বাজার থেকে কিনে এনে রাখলে রান্নাও বেশি হবে, খাওয়াও বেশি হবে। এটা না করে দিনের বাজার দিনে করাই ভালো।
♦ রান্নাঘরে সবজি ও ফলের পরিমাণ বেশি রাখতে হবে। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ফ্রুটস সালাদ ও সবজি খেতে পারেন। এতে শরীরের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিনের অভাব দূর হবে। এগুলো রক্তের মেটাবলিজম বাড়িয়ে পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে।
♦ রান্নাঘরে রসুন তো থাকেই। তাই সকালে উঠে খালি পেটে দুই/তিন কোয়া রসুন খেয়ে নিন। সঙ্গে লেবুর শরবতও পান করতে পারেন। এটি পেটের চর্বি কমাতে দারুণ কার্যকরী।
♦ সয়া সস, টেস্টিং সল্ট রান্নাঘরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। খাবারের স্বাদ বাড়াতে অনেকেই এগুলোর ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।
♦ রান্নায় অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার থেকেও বিরত থাকতে হবে। ওজন কমাতে কার্যকর এমন মসলা যেমন—আদা, দারচিনি, গোলমরিচ ব্যবহার করতে পারেন।