কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও বাতের ব্যথা দূর করে অপরাজিতা
আমাদের দেশে নীল, সাদা ও ক্বচিৎ বেগুনি-রঙের অপরাজিতা ফুল দেখা যায়। লতা জাতীয় গাছে এক পাপড়ি ও দুই স্তর পাপড়িতে এই ফুল হয়। অপরাজিতা বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়।
অপরাজিতার গাছের অনেক গুণ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমরা অনেকেই এই গাছের গুণাবলি জানি না। এই গাছ অনেক রোগের উপকারে আসে। যেমন,
চক্ষুরোগ
চক্ষুরোগে ঠাণ্ডা লেগে চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকলে কিংবা চোখে জ্বালা–যন্ত্রণা করলে, নীল অপরাজিতা পাতা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে সুফল পাওয়া যায়।
বাত
যে কোন ধরনের বাতে ৫০০ মিলিগ্রাম নীল অপরাজিতার শেকর পানি দিয়ে বেটে সকালে একবার খেলে সুফল পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য
শ্বেত অথবা নীল অপরাজিতার বীচি গুঁড়ো করে দুই গ্রাম পরিমান নিয়ে তাতে সামান্য শুকনো চুনি মিশিয়ে গরম দুধ বা পানি দিয়ে খেতে হবে। রাতে খাবার পর ঘুমানো আগে খাওয়া দরকার।
শুক্র রোগ
একগ্রাম নীল অপরাজিতার মূল, এক চামচ ঘি, মধু কিংবা চিনির সঙ্গে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
প্রসব
সহজ প্রসবের সময় এক গ্রাম সাদা অপরাজিতার শেকর বেটে খাওয়াতে হবে।
মূত্রকৃচ্ছ রোগ
অপরাজিতার মূলের ছাল পানিতে সেদ্ধ করে দুচামচ খেলে পরিমাণ মত প্রস্রাব হয়।
সতর্কতা
এই গাছের সবকিছুই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। তবে মূল এবং বীচি বেশি পরিমান খেলে শরীরে বিষের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কাজেই এর পরিমান খুবই সাবধানে প্রয়োগ করা উচিত।
চাষাবাদ
শুটির মধ্যে বীজ থাক। কোষের মধ্যে পাঁচ-ছয়টি বীজ পাওয়া যায়। আকারে বীজ খুবই ছোট, অকেটা মেথির মত দেখায়। বর্ষার সময এর বীজ থেকে সহজে চারা তৈরি করা যায়। আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি জেরাতেই অপরাজিতা গাছ দেখতে পাওয়া যায়।
সারা বছরই ফোটে। প্রতিটি পাতায় দুই বা তিন জোড়া গোলাকার পত্রক থাকে। গাঢ় নীল, ফিকে নীল, বেগুনী প্রভৃতি নানা ধরনের অপরাজিতা রয়েছে। এ ছাড়াও একক ফুল এবং জোড়া ফুল ও দেখতে পাওয়া যায়। ফুল অনেকটা বক ফুলের মত দেখায়। ফুলে কোন গন্ধ নেই।
পাশ্চাত্য উদ্ভিদবিদেরা বলেন, এই ফুল এসেছে মালাক্কা দ্বীপ থেকে। খুব প্রাচীনকালে এই দ্বীপ এশিয়াসহ অস্ট্রেলিয়া মিলে একটি মহাদেশে ছিল। টারনেটি বা মালাক্কা থেকে এসেছে বলে অপরাজিতার বৈজ্ঞানিক নাম ক্লিটোরিয়া টারনেটিকা। ক্লিটোরিয়া অর্থ যোনীপুষ্প।