নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে যেসব উপকার
একাধিক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে একাধিক রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। আজকের এই স্ট্রেসের দুনিয়ায় শরীর যে কোন সময় রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হলে হাঁটার কোন বিকল্প নেই বললেই চলে।
এখন প্রশ্ন হল, প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের কী কী উপকার হয়?
১. ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশকে এ দেশে যে হারে এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে, তাতে নিয়মিত হাঁটার প্রয়োজনও যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই!
২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে: কয়েকজন জাপানি বিজ্ঞানির করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই তো যাদের পরিবারে এই রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত একটু-আধটু হাঁটাহাঁটি না করেন, তাহলে কিন্তু বিপদ!
৩. ডায়াবেটিসের হাত থেকে দূরে থাকে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লাঞ্চ এবং ডিনারের পর নিয়ম করে হাঁটার অভ্যাস করলে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ দেশে প্রতিবছর নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সুস্থ রাখতে এইটুকু কসরত করতে পারেন বলে মনে হয়, তাই না!
৪. আয়ু বৃদ্ধি পায়: ঘাম ঝড়িয়ে হাঁটতে হবে না, হলকা চালে একটু এদিক সেদিক হাঁটলেই উপকার মিলবে। যেমন ধরুন কম বয়সে হঠাৎ মৃত্য়ুর হাত থেকে রক্ষা পাতে হাঁটার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই সঙ্গে শরীরে সচলতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে একাধিক লাইফস্টাইল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ুর বৃদ্ধি ঘটে।
৫. হার্টের শক্তি বাড়ে: চিকিৎসকদের মতে, সারাদিনে ২০ মিনিট হাঁটলে নানা বিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৮ শতাংশে কমে যায়। আর এই যদি এই সময়টা ৪০ মিনিট এনে দাঁড় করতে পারেন, তাহলে তো কথায় নেই! সেক্ষেত্রে হার্ট ডিজিজের কারণে অসুস্থ হয়ে পরার সম্ভাবনা প্রায় ১৮-২০ শতাংশ কমে যায়।
৬. ওজন কমে: প্রতিদিন ২০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে পেটের চর্বি বা ভিসারেল ফ্যাট কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরের অন্যত্র জমে থাকা অতিরিক্ত মেদও কমে যায়। ফলে সার্বিকভাবে ওজন হ্রাস পায়। তাই তো যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন, তারা আজ থেকেই অল্প বিস্তর হাঁটা শুরু করে দিন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৭. এনার্জির ঘাটতি মেটে: ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার তত্ত্বাবধানে হওয়া এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারাদিনে যে কোন সময় ২০ মিনিট হাঁটলে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে এনার্জির ঘাটতি কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় দূর হয়।
৮. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে: স্মৃতিশক্তি কার কতটা শক্তিশালী হবে, তা নির্ভর করে মস্তিষ্কের হিপোকম্পাস অংশের ওপর। আর প্রতিদিন হাঁটলে হিপোকম্পাসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি এবং মনে রাখার ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।