মজবুত হাড় পেতে মেনে চলুন ৫টি নিয়ম
শরীর গঠনের জন্য সবচাইতে প্রয়োজনীয় হচ্ছে হাড়। এই হাড়ের মাধ্যমে আমাদের দেহ সঠিক আকারে দাঁড়াতে পারে। আমাদের দেহকে ধারণ করে রাখে দেহের ভেতরে হাড়ের তৈরি কঙ্কাল।
হাড়ের গঠনে কিছুটা ভিন্নতা এলেই আমরা হয়ে যেতাম জড় পদার্থ। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ণ এই জিনিসটির যত্নে তেমন কিছুই করি না। এর ফলে অনেক কম বয়স থেকেই হাড়ের বিভিন্ন রোগ হাড়কে নষ্ট করে শরীরকে ধীরে ধীরে অক্ষম করে দেয়।
শিশুকাল থেকে হাড়ের যত্ন নেয়ার অভ্যাস না হলে কম বয়সেই হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। হাড় হয়ে পড়ে দুর্বল এবং নরম। বার্ধক্য শরীরে ভর করতে না করতেই হাঁটাচলার ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। যদি কম বয়সেই অক্ষম হয়ে যেতে না চান তাহলে হাড়কে মজবুত করার কথা মাথায় রাখতে হবে। করতে হবে হাড়ের সুস্থতায় কিছু কাজ। মজবুত হাড় পেতে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম।
পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে প্রতিদিন
মজবুত হাড়ের জন্য খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। স্বাদের কথা ভুলে গিয়ে নজর দিতে হবে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি। কম ফ্যাট যুক্ত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে প্রতিদিন। দুধ, ডিম, কাঠবাদাম, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ, সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, প্রচুর পরিমাণে ফলমূল রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। এতে করেই আপনি পেতে পারেন মজবুত হাড়।
এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD
ভিটামিন ডি অভাব দূর করতে হবে
খাবারের মাধ্যমে আমরা যে ক্যালসিয়াম দেহে নিয়ে থাকি তা হাড় দ্বারা শোষণ হয় ভিটামিন ডি এর মাধ্যমে। যদি দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকে তবে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরেও হাড়ের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যাবে না।
সুতরাং দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণেও কাজ করতে হবে। মাছ, মাছের তেল, দুধ, সয়া দুধ, ফলমূলে রয়েছে ভিটামিন ডি। সূর্যের আলোর মাধ্যমেও দেহের ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ সম্ভব। সকাল ৯ টার আগে মাত্র ১০ মিনিট সূর্যের আলোতে বসেই আপনি দেহের ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে পারেন খুব সহজে।
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করার অভ্যাস করতে হবে
হাড়ের সুস্থতায় নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যারা একটানা বসার কাজ করেন তাদের দেহের হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। যারা একেবারেই শারীরিক পরিশ্রম করেন না তাদের হাড় অপেক্ষাকৃত নরম ও দুর্বল হয়ে পড়ে দ্রুতই।
তাই নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। শারীরিক ব্যায়াম, খেলাধুলা, নাচ, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি বেশ ভালো শারীরিক পরিশ্রম যা হাড়কে মজবুত করে তোলে।
ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করুন
ধূমপান ও মদ্যপান হাড়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধূমপানের ফলে হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। যারা নিয়মিত ধূমপান ও মদ্যপান করেন তাদের দেহ খাবারের পুষ্টি সঠিকভাবে দেহে সরবরাহ করতে পারে না।
খাবার খাওয়ার পরেও পুষ্টি সঠিকভাবে হাড়ে না পৌঁছানোর কারণে হাড় হয়ে যায় দুর্বল ও নরম। দেহের অন্যান্য সমস্যার সাথে দেখা দেয় হাড়ের সমস্যা। তাই ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করে দিন আজই।
মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলুন
অনেকে ভাবতে পারেন মানসিক চাপের সাথে হাড়ের কী ধরণের সম্পর্ক থাকতে পারে, কিন্তু মানসিক চাপের সাথে হাড়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
মানসিক চাপে থাকলে আমাদের দেহে নিঃসরণ হয় কারটিসোল নামক একটি হরমোনের যা হাড়ের ক্ষয়ের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। তাই মানসিক চাপটাকে যতোটা সম্ভব দূর করার চেষ্টা করুন। মন ভালো থাকার সাথে সাথেই হাড় থাকবে মজবুত।