ডিম খাওয়া ভালো নাকি খারাপ? জানুন কী বলছেন চিকিৎসকেরা
একটা বয়সের পর ডিম খাওয়া ভাল না খারাপ? এ এক চিরন্তন ডিবেট। হাই স্ট্রেসড সোশ্যাল লাইফে যাঁরা চল্লিশের কোঠায় পা রেখেছেন, তাঁদের অনেকেই এখন রোজ ডিম খেতে গেলে দুবার ভাবেন। বয়স্কদের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। ডিমের দিকে তাকানোও যেন অপরাধ! সাম্প্রতিক গবেষণা কিন্তু বলছে অন্য কথা। বয়স্কদের জন্য ডিমকে আর নিছক ভিলেন হিসেবে দেখতে রাজি নন ডাক্তাররা।
ডিমের হাজার ফান্ডা। কিন্তু সেই সবই যেন তরুণ দিনগুলোর জন্য। মরিচ ছেটানো পোচ অথবা পেঁয়াজ লঙ্কায় ঠাসা অমলেট। ডিমের কারি থেকে ডিমের ভুজিয়া। এসবে যেন তারুণ্যেরই অধিকার! বয়সের বলিরেখা একটু স্পষ্ট হল কী ব্যস্। ডিম ঢুকে পড়ল এই তালিকায়।
<<হট ডগস – না
পাঠার মাংস – না
সি ফুড – না
ডেয়ারি প্রোডাক্ট – না
ডিম ও ডিম জাত দ্রব্য – না >>
ফল যা হওয়ার
তাই। বয়স বাড়তেই খাদ্য তালিকা থেকে ডিমকে ডিভোর্স। কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তাররা ডিম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
১. হার্টের সমস্যা
২. উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টরল
৩. আর্থারাইটিস
বয়সের সঙ্গে যেহেতু এসব সমস্যা এসেই যায়, তাই অটোমেটিক্যালি ডিমেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যায়। একষট্টি বছর বয়স। এমন বারোশো জনকে নিয়ে সমীক্ষা করেছিলেন কানাডার কয়েকজন গবেষক। তাতে দেখা গেছে, যাঁরা সপ্তাহে দুটো করে ডিম খান, তাঁদের শরীরে ক্যারোটিড প্লেক তৈরি হওয়ার প্রবণতা বেশি। ক্যারোটিড প্লেক মোমের মতন এক ধরনের পদার্থ যা ধমনীতে বসে গিয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
কানাডার আরেক গবেষক, ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হেলেন বন্ড বলছেন অন্য কথা। তিরিশ বছরের গবেষণায় তাঁর দাবি, কোলেস্টরেলের মাত্রার ওপর ডিমের কোনও প্রভাব সে অর্থে নেই। বয়স হলেও ডিম খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন। কোন যুক্তিতে এত বড় অভয় দিচ্ছেন ডাক্তারবাবুরা? আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এবং ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টার গবেষকরা বলছেন,
একটি বড় ডিমে ৭০ ক্যালোরি থাকে। ডিমের হাই কোয়ালিটি প্রোটিন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। বয়সজনিত কারণে অনেক সময় মাংসপেশি শিথিল হয়ে যায়, ডিমের কুসুমে যে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে তা মাংসপেশিকে সুস্থ রাখে, ছানি প্রতিরোধ করে।
ডিমের অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে। ডিমের এত গুণ বিচার করে গবেষকরা বলছেন, বয়স হলেই এমন খাদ্যটিকে ছেড়ে দেবেন না। ডিম খেতে হবে তবে পরিমাণ মেনে।