আয়ু বাড়াতে তেজপাতার চা!
তেজপাতায় রয়েছে কপার, সেলেনিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম। আর এই তেজপাতা আমরা শুধুমাত্র রান্নায় স্বাদ ও গন্ধের কাজেই ব্যবহার করে থাকি।
কিন্তু তেজপাতার চায়ে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ; এর মধ্যে রয়েছে ফলিক এসিড। এই চা কাশি কমায়, হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া তেজপাতার চায়ে রয়েছে অনেক গুণ। তেজপাতার চায়ের কিছু উপকারিতার কথা জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ।
একটা বাটিতে ৩ গ্লাস পানি নিয়ে ফোটাতে শুরু করুন। যখন দেখবেন পানিটা ফুটতে শুরু করেছে, তখন তাতে ১০টা তেজপাতা ফেলে দিন। পাত্রের পানিটা ফুটতে ফুটতে যখন এক গ্লাসের মত হয়ে যাবে, তখন আঁচটা বন্ধ করে পানিটা ছেঁকে নিয়ে সেই পানিটা চায়ের মতো করে পান করুন।
এই পানীয়টি প্রতিদিন পান করলে কী হতে পারে জানেন?
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে : রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা কমাতে তেজপাতার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। শুধু তাই নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা যাতে বেড়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি।
আসলে তেজ পাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ইনসুলিনের ক্ষরণ যাতে ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সুগার লেভেল বাড়ার সুযোগ পায় না।
২. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : তেজ পাতায় উপস্থিত ফিটোনিউট্রিয়েন্ট, ক্যাফিক অ্যাসিড, সিলিসাইকেলেট এবং ক্যারোটিন হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. যন্ত্রণা কমায় : পা মচকে গেছে? আথ্রাইটিসের যন্ত্রণায় নড়তে পারছেন না? কোনও চিন্তা নেই! আজ থেকেই তেজপাতা দিয়ে তৈরি তেল দিয়ে মাসাজ শুরু করুন। দেখবেন কষ্ট কমতে সময় নেবে না। আসলে তেজপাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরে ভেতরে প্রদাহ কমিয়ে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, এই ধরনের শারীরিক সমস্যার প্রকোপ কমাতে তেজপাতা দিয়ে বানানো চাও খেতে পারেন। সমান উপকার পাবেন।
৪. সর্দি-কাশির প্রকোপ কমায় : আজ তাপমাত্রা ৪০-এর কাঁটা ছুঁয়েছে তো, কাল অঝোরে বৃষ্টিতে গায়ে চাদর দিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা-গরমের কারণে সর্দি-কাশি-জ্বর হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই বাড়িতে তেজ পাতা মজুত করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। কারণ নিয়মিত তেজপাতা দিয়ে বানানো চা খেলে জ্বর তো কমেই। সেই সঙ্গে সর্দি-কাশি এবং বুকে কফ জমার মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে।
৫. কিডনি স্টোনের চিকিৎসায় কাজে লাগে : তেজপাতায় উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান কিডনির ভিতরে জমতে থাকা স্টোনগুলিকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই তো এই ধরনের রোগে নিয়মিত তেজ পাতা দিয়ে বানানো চা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে রোগীকে।
৬. ইউরিক অ্যাসিড : দিনে কম করে ২ কাপ তেজপাতা দিয়ে তৈরি চা খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে নিমেষেই কমে যায় সেই সম্পর্কিত শারীরিক কষ্টও।
৭. কনস্টিপেশন দূর করে : প্রতিদিন সকালেই কী মারাত্মক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়? এদিকে নানা চিকিৎসা করেও ফল মিলছে না? তাহলে আজ থেকেই তেজপাতা দিয়ে বানানো চা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন কষ্ট কমে যাবে। এক্ষেত্রে এক কাপ করে দিনে দুই বার এই বিশেষ চাটি পান করলে দারুন উপকার মিলবে।
৮. উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে : সারা শরীরজুড়ে রক্তের সরবরাহে উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখাতেও তেজপাতার জুড়ি মেলা ভার। তাই যাদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস রয়েছে তারা নিয়মিত তেজ পাতা দিয়ে বানানে চা খেতে পারেন। দেখবেন উপকার মিলবে।