হাই কোলেস্টেরল এর সমস্যা কমাবেন কীভাবে?
হাই কোলেস্টেরল এর সমস্যা সমস্যা ইদানিং সকল বয়সের নারী এবং পুরুষদের মাঝে বেড়ে গেছে অনেকখানি। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন যেমন: অনেক বেশী পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া, অপর্যাপ্ত শরীরচর্চা ইত্যাদি কারণেই মূলত হাই কোলেস্টেরল এর সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
এছাড়া ওবেসিটি, ধূমপান, বয়সজনিত কারণ (বয়স বাড়ার সাথে সাথে আর্টারি সরু হতে থাকে), বংশগত সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা যেমন: ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি এবং লিভারের সমস্যাসহ অন্যান্যা বিভিন্ন কারণে হাই কোলেস্টেরল এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
কোলেস্টেরল হলো রক্তে থাকা এক প্রকারের ফ্যাটি অ্যাসিড যা কোষের মেমব্রেন তৈরিতে এবং রোদের আলোকে ভিটামিন-ডি তে পরিণত করতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু, রক্তে থাকা উপকারী এই উপাদান যখন পরিমাণে অনেক বেশী বেড়ে যায় তখন সেটা শারীরিক সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। হাই কোলেস্টেরল এর সমস্যা কে বলা হয়ে থাকে ‘হাইপারকোলেটেরলেমিয়া।‘কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়ার সাথে সাথে হৃদপিণ্ডের সমস্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে বলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ একটি সমস্যা।
এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD
তবে খুব সাধারণ কিছু খাদ্য উপাদান রয়েছে যা নিয়মিতভাবে খেলে কোলেস্টেরল এর সমস্যা দূর হতে সাহায্য করে থাকে। জেনে নিন এমন দারুণ পাঁচটি উপাদানের নাম।
১/ ধনিয়া
গবেষণা থেকে দেখা গেছে ধনিয়া সম্পুর্ন কোলেস্টেরল এর মাত্রা, LDL (খারাপ কোলেস্টেরল) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডস এর মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। ধনিয়া ডায়াবেটিস এর জন্যেও খুব উপকারী।
কীভাবে খাবেন:
– ধনিয়া গুঁড়ো এক পাত্র পানিতে নিয়ে ভালো করে ফুটাতে হবে।
– এরপর সেই পানি ছেঁকে নিয়ে দিনের মধ্যে দুইবার করে পান করতে হবে। চাইলে ধনিয়া পানির সাথে দুধ কিংবা চিনিও মিশিয়ে নেওয়া যাবে।
২/ পেঁয়াজ
হাই কোলেস্টেরল এর সমস্যা কমাতে বেশী ঝাঁঝযুক্ত লাল পেঁয়াজ খুবই উপকারী। হংকং এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে দিয়ে ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলাফল স্বরূপ হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি হবার ঝুঁকিও কমে যায় অনেকটা।
কীভাবে খাবেন:
এক চা চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে মধু মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে খেতে হবে।
৩/ আমলকী
আমলকী প্রাকৃতিক হাইপোলিপিডেলিক হিসেবে কাজ করে যা রক্তের লিপিড কন্সেট্রেশন কমাতে সাহায্য করে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মেডিকেল রিসার্চ এন্ড হেলথ সাইন্স তাদের এক গবেষণা থেকে বের করেছে যে, আমলকীতে রয়েছে অ্যান্টি-হাইপারলিপিডেমিক, অ্যান্টি-আথেরোজেনিক এবং হাইপোলিপিডেমিক এর প্রভাব।
কীভাবে খাবেন:
আমলকী পাউডার এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। দিনের মাঝে একবার এই মিশ্রণ খাওয়া যাবে।
৪/ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল এর মাত্রা এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমাতেও এটি খুবই উপকারী একটি উপাদান।
কীভাবে খাবেন:
এক গ্লাস পানিতে শুধুমাত্র এক চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। দিনের মাঝে তিনবার এই মিশ্রণ খেতে হবে এক মাসের জন্য।
৫/ কমলালেবুর রস
প্রতিদিন তিন কাপ করে একদম ফ্রেশ কমলালেবুর রস খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে আসে এবং শরীরে ভিটামিন-সি এর অভাবও পূরণ হয়ে যায়। আমেরিকা জার্নাল অফ ক্লিনিক নিউট্রিশন তাদের এক গবেষণা থেকে প্রকাশ করেছে ৭৫০ml বিশুদ্ধ কমলালেবুর রস প্রতিদিন খাওয়ার ফলে HDL (ভালো) কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং LDL (খারাপ) কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে দেয়।