ফল বিষমুক্ত করার উপায়
ফল প্রতিদিন খাওয়া উচিত। কারণ ফল শুধু মুখরোচক খাবারই নয়, বরঞ্চ স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। কিন্তু দু:খজনক ব্যাপার হচ্ছে, ভেজালের খপ্পরে পড়ে ফল এখন ভেজাল। ফলে ফল খেয়ে স্বাস্থ্য উপকারিতার পরিবর্তে উল্টো নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
বিশেষ করে শহরাঞ্চলের বাজারে ভেজাল ফলের উপস্থিতি বেশি। ফলে ফল কেনা ও খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন প্রত্যেকের মনেই যে সন্দেহটি দেখা দেয় তা হলো- এগুলো ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথিলিন, ফরমালিন ইত্যাদি ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত কি-না?
কেননা বাজারে যে আম, পেঁপে, কলা, বিক্রি হয় তার বেশিরভাগই বিষাক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইডে পাকানো। ফল পাকানোর ক্যালসিয়াম কার্বাইড নিয়মিতভাবে শরীরে প্রবেশ করলে কিডনির দফারফা। কার্বাইডে পাকানো ফল খেলে হতে পারে ইনসমনিয়া, আলসার জাতীয় অসুখ। হজম প্রক্রিয়াও বিঘ্নিত হয় কার্বাইডে।
আনারসের ভেতরটা হলুদ করতে ‘মেটানীল ইয়েলো’ নামক রঙ ব্যবহার করা হয়। কৃত্রিম এই রঙ যকৃৎ-এর ক্যানসারের অন্যতম কারণ। আপেলের বাইরে যে মোম ব্যবহৃত হয়, তাও শরীরের পক্ষে মারাত্মক। লেড নাইট্রেট জাতীয় এই মোম স্নায়ুতন্ত্রের ওপর আঘাত হানে। তরমুজ সহ বিভিন্ন ফল মসৃণ করতে অনেক সময় কপার সালফেটে চুবিয়ে রাখা হয়। কপার সালফেট শরীরে প্রবেশ করলে অ্যানিমিয়া অবশ্যম্ভাবী। হতে পারে হার্টের একাধিক অসুখ।
লিচু, বাঙ্গি, আনারস, আঙুর সহ অন্যান্য ফলেও দেখা মিলছে রাসায়নিক। রাসায়নিক মিশ্রিত বা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো যেকোনো ফল নিয়মিত খেলে দীর্ঘ মেয়াদে তা হার্ট, কিডনি ও লিভারের জন্য ক্ষতিকর।
যা হোক, ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন অনুসারে জেনে নিন বিষমুক্ত ফল খাওয়ার উপায়।
* রাস্তার ফল কিনেই মুখে দেবেন না। বাড়িতে আনুন। এক দু’দিন পরে খান।
* ফল খাওয়ার আগে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। পরবর্তীতে ধুয়ে নিন।
* হালকা গরম পানিতে ফল ডুবিয়ে রাখলে ভালো। সাধারণত ৮০ ডিগ্রি বা তার বেশি তাপে ফরমালিন বা অন্য রাসায়নিক ধুয়ে যায়।
* ফলের খোসা ছাড়িয়ে খান। কার্বাইড জাতীয় রাসায়নিক খোসায় বেশি থাকে।
* তিনভাগ পানিতে একভাগ ভিনিগার মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন এবং ফল-এ স্প্রে করে নিন। এরপর ধুয়ে খান।
* আপেল, লেবুর বাইরের কৃত্রিম মোম ছাড়াতে নরম ব্রাশ দিয়ে পানির তলায় রেখে ঘষে নিন। মাইক্রোওয়েভ থাকলে তার মধ্যে আপেল রেখে অল্প তাপমাত্রায় ১০ সেকেন্ড রাখলেই মোম ছেড়ে যাবে।