রাতে পরম তৃপ্তি পেতে করণীয়
প্রতিদিন একই সময় ঘুম থেকে উঠবেন, ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময় ঘুমের দৈনন্দিন ছন্দের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে।
মানুষ বুড়ো হয় যখন, অনেকের বেশ সময় থাকে, কোনও কাজ নেই, তাই দিনরাতের সূচী যায় ওলট-পালট হয়ে। কোনও দিন গভীর রাতে ঘুমানো আবার খুব ভোরে জেগে ওঠা। জীবন ছন্দ্রে এমন অনিয়ম হলে ঘুমের উপর এর প্রভাব পড়ে। তাই ওলট-পালট এমন ঘুমের ঝুঁকি আছে অনেক।
মনে হবে জীবন বিলাশ, কিন্তু তাই বলে এমন বেহিসাবি ঘুম গোলমেলে করে দেয় দৈন্দিন দেহছন্দ। নিদ্রা ও জাগরণের সূচী যায় পালটে। তখন নির্ঘুম কাটে রাত।
ঘুমের ব্যাঘাত এমন ঘটতে থাকলে দীর্ঘ দিন, ঘুমের ঘাটতি শরীরের কষ্ট বয়ে আনে মনে কষ্ট। মেজাজ বদলে যায়। চিন্তা-ভাবনার কৌশল সূক্ষ্ম থাকে না, বিচার বুদ্ধিও আর আগের মতো থাকে না। ঘুমের ঘাটতি হলে শরীরেও হয় অনেক সমস্যা যেমন- হূদরোগ, স্থূলতা ও ডায়াবেটিস ইত্যাদি। সাহায্য চাই তখন।
ঘুমের এমন সমস্যা নিয়ে কষ্ট করা কেন। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। নিদ্রা বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন হতে পারেন। শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা চাই, যাতে অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা যেন লুকিয়ে না থাকে। স্লিপ ডায়েরি রেখে দেখা যেতে পারে ঘুমের নমুনা ও ধরন। ফিরে যান নিয়মের জীবনে। তাই জীবন ছন্দকে ঠিক পথে আনতে গেলে প্রতিদিন একই সময় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। জীবনে সঠিক সূচীতে ফিরে আসার জন্য জাগরনের এই ক্ষণকাল বড়ো গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিকে ওঠার জন্য এলার্ম ঘড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এলার্ম ঘড়ি শব্দ করার ৭-৮ ঘন্টা আগে রাতে শোবেন। তবে ঘুমের সময় না হলে বা চোখে ঘুম ঘুম না এলে শোবেন না। ঘুমিয়ে পড়ার জন্য খুব চেষ্টা করলে সারারাত জাগরনে যাবে। শোবার সময় আসার আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি চাই। ঘুমাতে যাবার দেড় ঘন্টা আগে থেকে ঘরের সব ইলেক্টনিক সামগ্রী, টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল অফ করতে হবে। শোবার ঘরের আলো মৃদু করতে হবে। শিথিল হওয়া প্রয়োজন। শোয়া অবস্থায় ভারি কাজ করা উচিত নয়।
দিনের কর্মসূচীতে নিয়ে আসতে হবে নিয়ম। আহার, ব্যায়াম, ঘরের কাজ কর্ম, সামাজিকতা সব কিছু চাই নিয়ম সূচী অনুযায়ী মেনে চলা। দিনের সূচীতে নিয়ম আনলে নিদ্রা সূচীতেও আসবে নিয়ম। আবার দিন নির্ঘন্ট মেনে চললে মেজাজও থাকে ভালো, কর্মেও সুফল আসে। খুব বাড়াবাড়ি নয় মোটামুটি নিয়ম মেনে চল্লেই হলো। বৃদ্ধ হলে ঘুমের সমস্যা। বয়স হলে এমন ঘুমের বেনিয়ম কেবল একমাত্র সমস্যা নয়।
বয়স হলে, আমরা বুড়ো হলে, শ্লথ তরঙ্গ ঘুম বা গভীর ঘুম হারাতে থাকি। সেজন্য ঘুম থেকে উঠলে অস্থির লাগে। বয়স্কদের আরও সমস্যা থাকে, রাতে বারবার ঘুম থেকে উঠতে হয়। ক্রনিক কোন রোগের জন্য অস্বস্থি, বারবার প্রোস্রাবের তাগিদ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এছাড়া ঘুমের বৈকল্যও থাকে। যেসব দৈহিক সমস্যা জাগিয়ে রাখে এগুলোর সমাধান কঠিন নয়। কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য এমন হলে ওষুধ ও ডাক্তার পরিবর্তন করতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপ, প্রোস্টেট সমস্যা-এর চিকিৎসা আছে।