তেলাকুচ ফল দেখতে খানিকটা কাঁঠালের মতো বলে শিশুদের খেলার উপাদান হিসেবে জনপ্রিয়। পাখির খাবার হিসেবেও এটা প্রসিদ্ধ। তাই গ্রামের পাখিপ্রেমী যে কোনো শিশুই পাখির পোশার জন্য হাতের কাছে পাকা তেলাকুচের সন্ধান রাখতো। বিশেষ করে তেলাকুচ টিয়া পাখিদের খুব প্রিয় খাবার। অন্য পাখিদেরও। কিন্তু টিয়াপাখি যখন তেলাকুচ খেত-সে দৃশ্য সুন্দরতর। ঠিয়াপাখির লাল ঠোঁট আর তেলাকুচের লাল রং মিলে যে অপার্থিব সৌন্দর্যের অবতারণা হয়, তা বোধহয় ওই শৈশবের সোনাঝরা দিনগুলিতেই অনুভব করা সম্ভব।

তেলাকচু, তেলাকুচা বা বিম্বি দেশের প্রায় সব অঞ্চলে বসত বাড়ির আশে পাশে, রাস্তার পাশে বন-জঙ্গলে জন্মায় এবং বংশ বিস্তার করে। সাধারণত চৈত্র বৈশাখ মাসে তেলাকুচ রোপন করতে হয়। পুরাতন মূল শুকিয়ে যায় না বলে গ্রীষ্মকালে মৌসুমি বৃষ্টি হলে নতুন করে পাতা গজায় এবং কয়েক বছর ধরে পুরানো মূল থেকে গাছ হয়ে থাকে। অবহেলিত এ লতা জাতীয় গাছটি অত্যন্ত উপকারী। শীতকাল ছাড়া সব মৌসুমেই তেলাকচুর ফল ও ফল হয়ে থাকে। ফল ধরার ৪ মাস পর পাকে এবং পাকলে টুকটুকে লাল বণ ধারণ করে।

তেলাকুচ ফলে আছে ‘মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং’,‘এনাফাইলেকটিক-রোধী’এবং‘এন্টিহিস্টামিন’জাতীয় উপাদান। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচ বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (বফবসধ), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস।