১৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সোমবার

দীর্ঘমেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে যে বিপদ তৈরি হয়

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, অ্যান্টিবায়োটিক দীর্ঘমেয়াদে গ্রহণ করার সাথে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পলিপ হওয়ার সম্পর্ক বিদ্যমান। মধ্য বয়সে দীর্ঘমেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে বৃহদান্ত্রের কোলন এবং মলদ্বারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধিগুলোকেই পলিপ বা কোলোরেক্টাল অ্যাডেনোমাস বলে, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অন্ত্রের ক্যান্সারের পূর্বাভাস দেয়।

গবেষকেরা বলেন যে, অন্ত্রে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ার ধরন এবং বৈচিত্র্য ক্যান্সার সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। গবেষকেরা ১,২১,৭০০ আমেরিকান নার্সের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করেন যাদের বয়স ছিলো ৩০ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে ১৯৭৬ সালে যখন তারা গবেষণাটি শুরু করেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি দুই বছরে তাদের বংশবৃদ্ধি, জীবনধারা, চিকিৎসার ইতিহাস এবং রোগ হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। এবং তাদের প্রতি চার বছরে খাদ্যাভ্যাস বিষয়ক প্রশ্নের জবাব দিতে হয়।

সাম্প্রতিক গবেষণাটির জন্য ১৬,৬৪২ জন নারীর উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয় যাদের ২০০৪ সালে বয়স ছিলো ৬০ এবং তারচেয়ে বেশি। তারা তাদের ২০ এবং ৫৯ বছর বয়সে যে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেছিলেন তার বর্ণনা দিতে সক্ষম ছিলেন। তাদের ২০০৪ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে অন্তত একবার কোলনোস্কপি করা হয়েছিলো।

এই সময়ের মধ্যে ঐ দলটিতে ১,১৯৫ জনের মধ্যে অ্যাডেনোমাস শনাক্ত হয়েছিলো নতুনভাবে। গত চার বছরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের সাথে অ্যাডেনোমা হওয়ার ঝুঁকির সাথে সম্পর্কযুক্ত করা হয়নি। কিন্তু অতীতে দীর্ঘমেয়াদে সেবনের সাথে এর সম্পর্ক ছিলো।

যারা তাদের ২০ এবং ৩০ বছর বয়সে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেননি তাদের তুলনায় যারা ২ মাস বা তারচেয়েও বেশি সেবন করেছিলেন তাদের ৩৬ শতাংশের মধ্যে অ্যাডেনোমা শনাক্ত হয়েছিলো।

যারা ২০ এবং ৫০ বছর বয়সে কোন অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেননি তাদের তুলনায় যারা তাদের ২০ এবং ৩৯ বছর এবং ৪০ থেকে ৫৯ বছর বয়সে ১৫ দিনের বেশি ঔষধ গ্রহণ করেছেন তাদের ৭৩ শতাংশের মধ্যে অ্যাডেনোমা শনাক্ত হয়েছিলো।

এটি একটি পর্যবেক্ষণমূলক সমীক্ষা তাই কারণ এবং প্রভাব সম্পর্কে কোন দৃঢ় সিদ্ধান্তে আসা যায় না। এছাড়াও এতে কী ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা হয়েছিলো সে বিষয়ে কোন তথ্য দেয়া হয়নি এবং অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের পূর্বেও কিছু অ্যাডোনোমা থাকতে পারে তাও বিবেচনা করা হয়নি।

তা সত্ত্বেও একটি বিশ্বাসযোগ্য জৈবিক ব্যাখ্যা তারা উপস্থাপন করেছেন। অ্যান্টিবায়োটিক গঠনগতভাবে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে পরিবর্তিত করে দিতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ও বৈচিত্র্য কমিয়ে দেয়া এবং প্রতিকূল জীবাণুকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার মাধ্যমে। পূর্ববর্তী গবেষণায় অন্ত্রের ক্যান্সারের রোগীদের মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া কমে যাওয়া এবং অন্য ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে।

গবেষকেরা বলেন, এই সব কিছুই অন্ত্রের ক্যান্সার সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবাণুকে দূর করার জন্য যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় তা ইনফ্লামেশন বৃদ্ধি করতে পারে, যা অন্ত্রের ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী।

গবেষকেরা পরিশেষে বলেন যে, যদি এটি অন্য গবেষণা দ্বারা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারকে এবং ইনফ্লামেশনের উৎসকে সীমিত করার পরামর্শ দেয়া যায় যা টিউমারের গঠনকে পরিবর্তিত করতে পারে। গবেষণাটি অনলাইন জার্নাল গাট এ প্রকাশিত হয়।

Comments

comments

0 Shares
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

More results...

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

More results...