আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার মতো অসংখ্য উপাদান। যেগুলো আমাদেরকে রাখবে শারীরিকভাবে সুস্থ ও দেহবর্মে তৈরি করবে রোগ প্রতিরোধ প্রাচীর।

শীতের আমেজ মোটামুটি শুরু হয়ে গেছে। ঠাণ্ডাজনিত রোগব্যধিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ঋতুপরিবর্তনের সময়গুলোতে সাধারণত নানা রকমের রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে।

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় থাকলে মৌসুমী রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করা সহজ হয়। আমাদের হাতের নাগালের এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে আদা। হাত বাড়ালেই যে কোনো জায়গায় পাওয়া যাবে আদা।

আদার কিছু ওষুধি গুণাগুণ:

শীতকালীন সাধারণ কিছু রোগব্যাধি প্রতিরোধে আদার রয়েছে অনেক ওষুধি গুণাগুণ। চীন ও ভারতীয় প্রাচীন বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থায় আদার বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারের কথা জানা যায়।

ঠাণ্ডালাগা, সর্দি-কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাধারণ সমস্যা, জ্বর, মাইগ্রেন, হজমে অসুবিধা, বমিবমি ভাব, জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা- এ রোগগুলো নিরাময়ে আদার জুড়ি নেই। মসলাজাতীয় খাবার আদা আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারি। এতে ব্যবহারে খাবারের স্বাদ যেমন বেড়ে যায় পাশিপাশি বাড়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

খাবার-দাবারে আদার ব্যবহার:

* চায়ের সঙ্গে আদা: বাসায় কিংবা কর্মস্থলে চা বানানোর সময় আদা সঙ্গে রাখুন। অনেকে চা পানের পর আদা ফেলে দেন। আদা চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন বেশি।

* মাছ মাংসে আদা: রান্নার স্বাদ বাড়াতে আদার জুড়ি নেই। মাছ কিংবা মাংস রান্নায় আদা ছাড়া জিভে জল আনা স্বাদ অসম্ভব।

* দৈনন্দিন রান্নায়: মাছ মাংস ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রান্নায় আদা ব্যবহার খাবারকে যেমন করে সুস্বাদু তেমনি হজমে সহায়ক হয়। চটপটি, নুডলস, পাকৌড়া ছাড়াও বিভিন্ন সবজিতে আদা খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

* মুড়ি ভর্তা: বাদলা দিনে কিংবা শীতের সন্ধ্যায় মুড়ি ভর্তা খেতে কার না পছন্দ। সঙ্গে যদি লেবু আর আদা কুচি দেওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। খাবার পরেও স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।

* আদাজল: চা বানানোর মতো করে আদাজল খেতে পারেন। দেড় কাপ পরিমান গরম পানিতে এক চা চামচ পরিমান আদা কুচি মিশিয়ে চায়ের মতো খেতে পারেন। শরীর যেমন চাঙ্গা হবে শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণও কমে যাবে।

* পানির স্বাদ বাড়ান: প্রতিদিনই আমাদেরকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হয়। নিয়মিত পানি পানের সময় যদি এক চিলতে লেবুর রস আর সঙ্গে কয়েকটুকরা আদা কুচি দেওয়া যায় তবে পানির স্বাদ বেড়ে যাবে।

* আদামধু: আদা এবং মধু দুটোই প্রাকৃতিক নিরাময়কারক। আদা ও মধুর মিশ্রণ খেতে হলে আদা বেটে নিতে হবে। এক চা চামচ বাটা আদার সঙ্গে সম পরিমাণ মধু মিশিয়ে কয়েকবার সেবন করলে হাঁপানি ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় উপকার পাবেন।

অতিরিক্ত কোনো কিছুই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। একদিনে অনেক আদা খাওয়ার চেয়ে নিয়মিত অল্প পরিমানে বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে যোগ করুন, এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কমবে।

সতর্কতা:  আদা ব্যথা উপশম করে। তবে, গর্ভবতী ও ঋতুবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত আদা সেবনে অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।