পর্নোগ্রাফি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমায় !!!
সম্প্রতি জার্মান গবেষকদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের পত্রিকা ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশ সংকুচিত হয়ে যায়। একই সাথে কমে যায় এর কার্যক্ষমতা।
গবেষকরা জানান, মানুষ যখন পর্নোগ্রাফি দেখে তখন মস্তিষ্কের অন্যতম পরিবাহক (নিউরোট্রান্সমিটার) ডোপামিনে একটি ঢেউ তোলে। এই পরিবাহকটির অন্যতম কাজ আনন্দ এবং সুখের অনুভূতিগুলো বহন করে তাঁর স্মৃতি নিউরণে পাঠিয়ে দেওয়া। একটা সময় মানুষ পর্নোগ্রাফি দেখা ছাড়তে চাইলেও মস্তিষ্ক অভ্যস্ততা থেকে একই রকম ঢেউ চায়, অর্থাৎ পর্নোগ্রাফি দেখতে আসক্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি মানুষ বাস্তব জীবনে যৌনক্রিয়া থেকে আগ্রহও হারিয়ে ফেলে।
গবেষকরা জানান, এই গবেষণাটি প্রথম দেখিয়েছে নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে পারে।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৩ বছর থেকে কিশোররা পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত হয়ে নিয়মিত দেখে থাকে, আর প্রাপ্তবয়স্করা ‘দোষী বিনোদন’ হিসেবে পর্নোগ্রাফি দেখে। পুরুষ ও নারীদের কাছে পর্নোগ্রাফি তাদের যৌনতার কল্পরাজ্যে ভ্রমণ করার মত।
পর্নোগ্রাফি দেখার ফলে মস্তিষ্ক যখন নিয়মিত মানসিক পরিস্থিতি উন্নয়নের হরমোন নিঃসরণ করতে থাকে, মস্তিষ্ক তখন এই নিষিদ্ধ নেশায় অভ্যস্ত হয়ে যায়।
তরুণ বয়স থেকে পর্নোগ্রাফিতে আসক্তির তথা নিয়মিত ডোপামিনের নিঃসরণের ফলে মস্তিষ্ক একটি নির্দিষ্ট ধাঁচে তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ ফলে ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে আসা অনেক সময় ওই ব্যক্তির জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
জামা সাইকিয়ার্টি ম্যাগাজিনে বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শিখতে চায়। আর কীভাবে নতুন জিনিস শিখবে তা মূলত নির্ভর করে মস্তিষ্কের সিন্যাপটিক প্লাস্টিসিটির ওপর।
পর্নো ভিডিও, ছবি, লেখা, অডিও ইত্যাদিও মানবদেহে সুখানুভূতির অনুভূতি জাগায়। আর এক্ষেত্রে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকে ডোপামিনের ভূমিকা।
বিভিন্ন নেশার মতোই পর্ন মানুষের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন নিঃসরণে সাহায্য করে। ফলে মাদকের মতোই পর্ন দেখার ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়। ফলে কিছুদিন পর্ন না দেখলে স্নায়ুতন্ত্র ডোপামিনের জন্য দেহকে বারবার নির্দেশ পাঠায়।
পর্নের ক্ষেত্রে এটি মনে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে যায়। ফলে পরবর্তীতে বাস্তব জীবনে যখন মানুষ যৌনকর্মে লিপ্ত হয় তখন পর্নোগ্রাফি দেখা, পড়া বা শোনা চিত্র তার অবচেতন মনে আসতে থাকে। মানুষটি তখন বাস্তবের মানুষ নয় বরং পর্নোগ্রাফি দেখা কাউকে চিন্তা করে যৌনক্রিড়ায় সাড়া দেয়।
বারবার পর্নোগ্রাফি দেখার কারনে নতুন নতুন দেহ আর কৌশল দেখতে দেখতে মস্তিষ্ক সেভাবে ভাবতে শুরু করে। ফলে বাস্তব জীবনে সঙ্গীর উপর সে আকর্ষণ অনুভব করে না। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে দেখা ও পড়া বিকৃত ও অনৈতিক সম্পর্কগুলো যেভাবে মস্তিষ্কে গেঁথে যায়, সেখান থেকে বের হয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়ে।
পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ব্যক্তি তাঁর সঙ্গীর কাছে হেয় প্রতিপন্ন হয়। এবং বেশিরভাগ গবেষণা অনুযায়ী পর্নোগ্রাফিতে আসক্তরা ব্যক্তিজীবনে অসুখী হয় বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল।সূত্রঃ ওয়েবসাইট
Related Posts
Comments
comments