বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে হলুদের ব্যাবহার !!!
প্রায় সব রান্নায় হলুদ ব্যবহার করা হয় বলে হলুদকে একটি সর্বজনীন মশলা বলা হয়। তবে শুধু রান্নার কাজেই নয়, সেই প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানান রকম চিকিৎসায় এবং সৌন্দর্যচর্চায়। সর্বজনীন মশলার মতই হলুদের রয়েছে অনেক ধরণের রোগ নিরাময়ের গুণাগুণ।
পেটের যে কোন সমস্যায়: পেটে ব্যথা, পেট খারাপ ইত্যাদির কারণে অসুস্থ থাকেন অনেকেই। উল্টাপাল্টা খাবার কিংবা বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণেই এ সমস্যায় ভোগেন। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ এর মতে ৫০০ মিলি. গ্রাম কাঁচা হলুদ প্রতিদিন ৪ বার খেলে পেটের সকল ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
বাতের ব্যথা উপশমে: একটু বয়স্ক ব্যক্তিরা বাতের ব্যথায় চলাচল করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। এই বাতের ব্যথার চিকিৎসাও হলুদ দিয়ে করা সম্ভব। ৫০০ মিলি. গ্রাম কাঁচা হলুদ দিনে ২ বার খেলে হলুদের ‘কারকিউমিন’ বাতের ব্যথা উপশমে কাজ করে। নিয়মিত খেলে বাতের ব্যথা দূর হবে নিমেশেই।
আয়ু বাড়াতে হলুদ চা: প্রতিদিন ১ কাপ হলুদের চা আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে বলেন ড. আন্ড্রু ওএইল । জাপানের ওকিনাওয়া পৃথিবীর সব চাইতে দীর্ঘায়ু জাতি, তারাও এব্যাপারে একমত। তারা প্রতিদিন পান করেন হলুদ চা। ৪ কাপ পানিতে ১ চা চমচ হলুদ গুঁড়ো ফুটিয়ে নিয়ে এতে আদা এবং মধু মিশিয়ে তৈরি করে পান করুন হলুদের চা প্রতিদিন।
পা মচকানোর ঔষধ: পা মচকানোর প্রাচীন এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয় হলুদ দিয়ে। একটি বাটিতে ১:২ অনুপাতে লবন এবং হলুদ গুঁড়ো নিয়ে একে ঘন পেস্ট করার মত পানি দিন। এরপর এই পেস্টটি মচকে যাওয়া জয়েন্টে লাগান এবং একটি কাপড় দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখুন ১ ঘণ্টা। দেখবেন মচকে যাওয়া জয়েন্টের যন্ত্রণা কমে যাবে।সঙ্গে ফোলাভাবও কমবে। দ্রুত ভালো ফল পেতে সারাদিন এই ব্যান্ডেজটি লাগিয়ে রাখতে পারেন।
লিভারের সুরক্ষায় হলুদ: প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়া লিভার পরিস্কারের মত কাজ করে। অষ্ট্রিয়ার মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি গ্রাজ এর গবেষকগণের মতে এটি। এতে লিভার সিরোসিসের মত মারাত্মক রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। হলুদের ‘কারকিউমিন’ নামক উপাদানের লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।
মাথার খুশকি সমস্যা সমাধানে হলুদ: খুশকি যখন বেড়ে যায় তখন এটি মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে।ইনফেকশনের সৃষ্টি হতে পারে যা নিরাময় অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু হলুদের সাহায্যে সহজে খুশকির সমস্যা সমাধান সম্ভব। নারকেল তেলের সাথে ২/৩ চা চমচ হলুদ মিশিয়ে মাথার ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যাবহারে মাথার ত্বকে পোড়া মোটা খুশকির স্তর দূর হবে ইনফেকশনের কোন ভয় থাকবে না।
ক্যান্সারের চিকিৎসায়: ইউনিভার্সিটি অফ লুইসভিলের গবেষকগণ বলেন, হলুদে রয়েছে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের ক্ষমতা। ‘কারকিউমিন’ নামক একটি হলুদের উপাদান ক্যান্সার জনিত টিউমারের আকার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তারা আরও বলেন,‘কারকিউমিন’ক্যান্সারে আক্রান্ত টিস্যুর সংখ্যা কমাতে সক্ষম।এছাড়া ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এর গবেষকগণ স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধেও হলুদের কার্যকারিতা খুজেঁ পান। তারা কারকিউমিনকে বর্তমানে ২ মিলিমিটার একটি ক্যাপস্যুলের আকার দিয়েছেন যাতে কারকিউমিন রয়েছে ২০০ মিলিগ্রাম।
Related Posts
Comments
comments