কিন্তু তখন কি হয়, যখন আপনার দেহে থাইরয়েড গ্রন্থির সঠিক কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রায় আয়োডিনের ঘাটতি দেখা যায়? কম মাত্রায় আয়োডিন বা অন্য ভাবে বলতে গেলে আয়োডিনের ঘটতির এমন একটি জিনিস যার ফলে হাইপোথাইরয়েডিজম অথবা কিছু ক্ষেত্রে গয়টার বা গলগণ্ড পর্যন্ত হয়। আপনি হয়তো ইতিমধ্যেই জানেন যে, এই দুই অপ্রীতিকর পরিস্থিতিই ব্যাথা ও অসুবিধাজনক ভোগান্তির মতো খুব বড় ধরণের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই কারণেই এটি খতিয়ে দেখা খুবই প্রয়োজন, যে এমন কোনো সতর্কতামূলক লক্ষণ রয়েছে কিনা যা এই ঘাটতির দিকে ইঙ্গিত করছে। তাই, আজ আমরা বোল্ডস্কাই-এ আয়োডিনের ঘটতির এমন কয়েকটি উপসর্গের লিস্ট করেছি, যেগুলিকে কোন অবস্থাতেই আপনার উপেক্ষা করা চলবে না। যদি এই উপসর্গগুলি অল্প কিছু সময়ের জন্য দেখা যায়, তবে হয়তো সেক্ষেত্রে চিন্তার তেমন কোন কারণ নেই, কিন্তু এইগুল যদি স্বাভাবিকের থেকে ব্যাতিক্রম হয় তবে তা আয়োডিনের ঘাটতি বা অন্য কোন অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। প্রথম দিকেই এই ঘাটতি সনাক্ত হয়ে গেলে, তা কারো শরীর ও সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আকাশ-পাতাল তফাৎ আনতে পারে। তাই আসুন, আয়োডিনের ঘাটতির উপসর্গগুলি এইখানে দেখে নেওয়া যাক।

১. ক্লান্তিঃ মাঝেমাঝে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন এটা নিয়মিত হয়ে দাঁড়ায় তখন তা চিন্তার কারণ হতে পারে। প্রতিনিয়ত ক্লান্তি, একজনের দেহে আয়োডিনের নিম্ন মাত্রার ইঙ্গিত হতে পারে।

২. কোষ্ঠকাঠিন্যঃ নিম্ন মাত্রায় আয়োডিন দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতার ওপর খুবই খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব মানুষের আয়োডিনের ঘাটতি রয়েছে, তাদের নিয়মত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে দেখা যায়। আসলে, সাধারণভাবে বলতে গেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন অন্তরনিহিত শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত এবং এটিকে কখনোই উপেক্ষা করা উচিৎ না।

এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD

৩. বিস্ফারিত থাইরয়েডঃ একজন ব্যক্তির শরীরে আয়োডিনের অপর্যাপ্ত মাত্রার কারণে থাইরয়েড বৃদ্ধি পেয়ে, বিস্ফারিত থাইরয়েড এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অবহেলা করলে এই গলগণ্ড বা গয়টারটি ভয়ঙ্কর রকম বড় হয়ে যেতে পারে। তাই আপনি যদি এমন কিছুর সম্মুখীন হন তবে সেটিকে কখনোই হাল্কা ভাবে নেবেন না আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।

৪. মানসিক অসাম্যতাঃ যেসব মানুষের দেহে আয়োডিনের মাত্রার ঘাটতি দেখা যায় তাদের স্ট্রেস লেভেলও বেড়ে যায়, উদ্বেগ ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবসাদও দেখতে পাওয়া যায়। তাই দৈনন্দিন জীবনে আপনি যদি মানসিক অসাম্যতা অনুভব করেন, তখন অবশ্যই আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

৫. ত্বক পুরু হয়ে যাওয়াঃ আয়োডিনের ঘাটতির আরেকটি স্পষ্ট লক্ষণ হল, ত্বকের পুরু হয়ে যাওয়া। এছাড়াও, রুক্ষ, পরতদার ত্বকও কারো কারো ক্ষেত্রে দেহে আয়োডিনের ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে।

৬. অনাক্রমতার অভাবঃ আয়োডিনের ঘাটতি একজনের শরীরের অনাক্রমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। এটি সেই ব্যক্তিকে সাধারণ সর্দি-কাশি বা সংক্রমণের ক্ষেত্রে অতিসংবেদনশীল করে তুলতে পারে।

৭. ওজন বেড়ে যাওয়াঃ কয়েকটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, যে হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়াও আয়োডিনের ঘাটতির একটি বিপদসংকেত হতে পারে, যেহেতু আয়োডিন অনেকগুলি শারীরবৃত্তীয় কাজেই মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আয়োডিনের ঘাটতির এমন কোন উপসর্গ অনুভব করে থাকলে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।