টক আর তেতো স্বাদে ভরা আমলকির গুণাগুণ !!!
টক আর তেতো স্বাদে ভরা আমলকি গুণে-মানে অতুলনীয়। ফলটি শুধু ভিটামিন আর খনিজ উপাদানেই ভরপুর নয়, বিভিন্ন রোগব্যাধি দূর করায়ও রয়েছে অসাধারণ গুণ। আমলকির জুস স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ঠেকাতে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও আমলকির জুসের গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, শরীরের সব ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে তা।
ভারতের ফর্টিস-এসকর্টস হাসাপাতালের পুষ্টিবিদ রুপালি দত্ত বলেন, ভিটামিন সি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর মুক্ত মৌলগুলোর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। শরীরের বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করে ত্বক, চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমলকি থেকে সবচেয়ে কার্যকর উপকারিতা পেতে হলে জুস করে খাওয়া ভালো। প্রতিদিন খালি পেটে এই জুস খেলে হজম ভালো হয়, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
* ভারতের ওজন ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গর্জি শর্মার মতে, মুখের ঘায়ের পাশাপাশি সর্দি-কাশি দূর করতে আমলকির জুস দারুণ কাজ করে। দুই চা চামচ আমলকির জুসের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু প্রতিদিন খেলে ঠান্ডা-কাশি দূর হয়। এ ছাড়া মুখের ঘা দূর করতে কয়েক চামচ জুস পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুইবার গড়গড়া করলে উপকার পাওয়া যায়।
* নিয়মিত আমলকির জুস খেলে শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা কমে। অ্যামিনো অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় হৃদযন্ত্র ভালো থাকে।
* ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অ্যাজমা দূর করতে আমলকির জুস কার্যকর।
* ভারতের চিকিৎসকেরা বলেন, আমলকির জুস খেলে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে এবং হজম ভালো হয়।
* আমলকির জুস যকৃতের কাজে সহায়কা করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে পারে।
* ভিটামিন সি এর পাশাপাশি এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে, যার ফলে পুষ্টিকর পানীয় হিসেবে আমলকির জুস খাওয়া যায়।
* আমাদের চুলের গঠনের ৯৯ শতাংশ প্রোটিন। আমলকিতে অ্যামিনো অ্যাসিড ও প্রোটিন আছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে। চুল পড়া ঠেকাতে তাই আমলকি কার্যকর।
* ত্বকের দাগ দূর করতেও আমলকি ফল দেয়। মুখে আমলকির জুস মাখানো হলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়।
কখন, কীভাবে খাবেন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালে আমলকির জুস বেশি কার্যকর। সকালে ২০-৩০ মিলিগ্রাম জুস এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া এর সঙ্গে কিছুটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে রুচি বাড়ে।
আমলকির জুসের সঙ্গে জাম আর করলা মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ ও চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা আমলকির জুসের সঙ্গে ঘৃতকুমারীর নির্যাস মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন। যাঁরা চোখের সমস্যার ভুগছেন বা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে চান, তাঁরা ঘুমানোর আগে আমলকির জুস খেতে পারেন। এতে জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর প্রভাব নষ্ট হয়।