১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

যৌন উত্তেজনা অনুভবের জন্য সিরাপে মেশানো হচ্ছে ভায়াগ্রা !!!

 উত্তেজনা অনুভবের জন্য বাজারের বেশ কিছু পানীয় বা সিরাপের মধ্যে ব্যাপকভাবে মেশানো হচ্ছে ভায়াগ্রা, যা যৌন সমস্যার ওষুধ হিসেবে অত্যন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসম্পন্ন। পানীয়তে ভায়াগ্রা মেশানোর এই তথ্য উঠে এসেছে দুটি পৃথক ল্যাব পরীক্ষায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পানীয় বা সিরাপ খেয়ে তাৎক্ষণিক মৃত্যুসহ দীর্ঘ মেয়াদে জটিল সব অসুখ হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা হলেই জমজমাট হয়ে ওঠে কারওয়ান বাজারের কিছু ভাসমান ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকান। এগুলোতে যে কয়েকজন পাওয়া যায়, তাদের প্রায় সবাই নিয়মিত ক্রেতা। তাঁদের সবাই জোর দিয়ে বলেন, দোকানগুলোর শক্তিবর্ধক পানীয় কিংবা সিরাপে যথেষ্ট কাজ হয়।

এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD

ওষুধগুলোর কার্যকারিতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় একজন ব্যবহারকারীর কাছে। তিনি বলেন, ‘হয়, কিছুটা হয়।’কী ধরনের কাজ হয় জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘যৌন উত্তেজক।’আরেক ব্যবহারকারী বলেন, ‘এগুলো দিয়া শইল্যের (শরীর) শক্তি হয়। যৌনশক্তি একদম, ব্যাকটি (সব) হয়।’

বাস্তবে ওষুধগুলো কাজ করে কি না, তা গবেষণা করতে মাঠে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগ। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয় বেশ কিছু নমুনা। পরীক্ষা শেষে গবেষকরা বুঝতে পারেন, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিকের নামে এসব পানীয় বা সিরাপে ভয়ংকর মাত্রায় মেশানো আছে ভায়াগ্রা, যেটি কৃত্রিমভাবে যৌনশক্তি বাড়াতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধ হিসেবে পরিচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘আমরা যে কয়টা স্যাম্পল (নমুনা) এনেছি, অধিকাংশের মধ্যেই পেয়েছি। ভায়াগ্রা ২২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এ তো মারা যাবে। এ ধরনের কত মৃত্যু না জানি ঘটছে! আমরা জানি না। আমাদের এখানে রিপোর্টেড হয় না।’

ভায়াগ্রা যখন প্রথম বাজারে আসে, তখন ওষুধটি খেয়ে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। চিকিৎসকরা তাই স্পর্শকাতর ওষুধটি রোগীকে দেওয়ার ক্ষেত্রে বারবার চিন্তা করেন। অথচ এই ভায়াগ্রাই এখন হরহামেশাই মেশানো হচ্ছে শক্তিবর্ধক পানীয় বা সিরাপে। সে সঙ্গে তথাকথিত এনার্জি ড্রিংকসে।

সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ৬২টি ব্র্যান্ডের এনার্জি ড্রিংকসের নমুনার ওপর পরীক্ষা চালিয়ে বেশ কয়েকটিতেই খুঁজে পায় ভায়াগ্রার উপাদান সিলডানাফিল।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘ভায়াগ্রার উপাদান হচ্ছে সিলডানাফিল সাইট্রেট।

তো, এই সিলডানাফিল সাইট্রেট ওই বাসাটির মধ্যে ২৩টার ভেতর পেয়েছি। যাদের হার্টের রোগী বা কিডনির প্রবলেম (সমস্যা) আছে, ডায়াবেটিকস আছে, তাদের জন্য এটা জীবনের ঝুঁকি। তারা মারাও যেতে পারে।’

বয়স্ক মানুষের কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল। কিন্তু অল্প বয়স্ক তরুণ, যাদের প্রাকৃতিকভাবেই যৌন উত্তেজনা অনেক বেশি, তারা যদি এসব ভায়াগ্রামিশ্রিত পানীয় পান করে, তবে তাদের যে কেবল শারীরিক ক্ষতি হবে তা নয়, সে সঙ্গে দেখা দিতে পারে মানসিক বিকৃতি।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক বিভাগের প্রধান বলেন, ‘তার (যুবক) ন্যাচারালি (প্রাকৃতিকভাবে) স্বাভাবিক যে সেক্সটা (যৌনক্ষমতা), তার থেকে বাড়ায়ে দেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ২০ গুণ। সে তখন তার সেক্সুয়াল টেনডেন্সি (যৌন প্রবণতা) বেড়ে যাবে এবং তখন স্বাভাবিক সেন্সটা থাকবে না। সে যেকোনো ধরনের সেক্স ভায়োলেন্স (যৌন সহিংসতা) করবে।’

‘প্রচুর সেক্স ভায়োলেন্স হচ্ছে, ইভ টিজিং হচ্ছে। এটাও কিন্তু তথাকথিত এনার্জি ড্রিংকের ফল বলে আমি মনে করি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘বল বীর্যবান হতে চাই। আমার যৌনক্ষমতা বাড়াতে চাই।

যৌনক্ষমতা কোনো বাড়ানোর জিনিস না। যৌনক্ষমতা এমনিতেই বাড়ে। আপনার যৌনক্ষমতা এমনিতেই ভালো আছে। ’

এত সহজে কীভাবে ভায়াগ্রার উপাদান অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখার ওপরও জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁদের মতে, শক্তিবর্ধক পানীয় কিংবা এনার্জি ড্রিংকসের নামে মানুষকে ভায়াগ্রার মতো একটি স্পর্শকাতর ওষুধ খাওয়ানো যে কেবল প্রতারণা, তা নয়। বরং এটা প্রমাণ করে যে, সমাজের কিছু মানুষের মানসিকতা কতটা বিকৃত হতে পারে। অবস্থা যখন এতটাই শোচনীয়, তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে যদি সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে বলতেই হয়, সাধারণ মানুষ আসলেই অসহায়।

সূত্র: এনটিভি

Comments

comments