১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শনিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

অসাহনীয় গরমে ঘাম কমানোর সহজ উপায় !!!

কোনো কারণ ছাড়াই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ঘাম হলে বুঝতে হবে হাইপারহাইড্রোসিসের সমস্যা রয়েছে। গরমে বা খাটাখাটনিতে শরীরে ঘাম হয়, এটাই স্বাভাবিক। ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণত ব্যায়াম, গরম আবহাওয়া, ভয় বা রাগের কারণে শরীর ঘামার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
তাছাড়া মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, স্থূলতা, শরীরে পুষ্টির অভাবসহ নানান কারণে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে ঘামতে পারে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, জ্বর, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, মেনোপজ ও লিউকোমিয়া ইত্যাদি কারণেও শরীর বেশি ঘাম হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম শরীরের বিভিন্ন জায়গা যেমন হাতের তালু, পায়ের নিচে, বগল, গলা, কপাল, এমনকি মাথার ত্বকেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া এটি স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করে ও ঘামের দুর্গন্ধ বাড়ানোর ঝুঁকি বাড়ায়।
স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ঘরোয়া পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে জানানো হয়।
তবে ঘামের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়লে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার –
ঘাম নিয়ন্ত্রণ করতে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার বেশ কার্যকরী। ত্বকে ব্যবহার করে ঘাম নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি অ্যাপল সাইডার ভিনিগার নিয়মিত খাওয়ার ফলে ত্বকের পিএইচ স্তর ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
প্রথমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্থানগুলো ভালো মতো পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর তুলার বলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার নিয়ে ওই স্থানগুলোতে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিতে হবে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে গোসল করে পাউডার বা ডিউডরেন্ট লাগাতে হবে।
এছাড়া চাইলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খাওয়ার অভ্যাস করলেও অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
সেক্ষেত্রে এক গ্লাস পানিতে ২ টেবিল-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ও ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
বেকিং সোডা –
বেকিং সোডাও শরীরকে অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। বেকিং সোডা প্রাকৃতিক ভাবে শরীরের ঘাম শোষণ করে ও দুর্গন্ধ কমায়। এছাড়া শরীরের যে অংশ বেশি ঘামে সেখানের পিএইচ লেভেলের মাত্রা কমাতেও বেকিং সোডা সাহায্য করে।
পরিমাণমতো পানির সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর এই পেস্টের সঙ্গে পছন্দমতো তিন থেকে চার ফোঁটা সুগন্ধী তেল মিশিয়ে নিয়ে বগলে এবং যে সব জায়গা বেশি ঘামে সেসব জায়গায় লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে উপকার পাওয়া যাবে।
পেস্টটি সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়া বেকিং সোডা ও কর্ন ফ্লাওয়ার একসঙ্গে সমপরিমাণে মিশিয়ে একটি বোতলে সংরক্ষণ করা যায়। তারপর বেশি ঘাম হওয়া স্থানগুলোতে প্রয়োজনমতো এই মিশ্রণ ব্যবহার করা যাবে।
লাল চা –
অতিরিক্ত ঘাম কমাতে লাল চা বেশ কার্যকারী। লাল চা’য়ে থাকা ট্যানিক অ্যাসিড ঘাম প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া লাল চা ঘাম গ্রন্থি সংকোচন করে অতিরিক্ত ঘামানোর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। পাশাপাশি শরীরের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করতেও লাল চা সমান কার্যকারী।
তিন থেকে চার কাপ গরম পানিতে একটি বা দুইটি টি-ব্যাগ ভিজিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর ওই পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে বগল ও গলায় লাগাতে হবে।
তাছাড়া হাত ও পায়ের ঘাম নিয়ন্ত্রণ করতে একই পদ্ধতিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাত ও পা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে, সেক্ষেত্রে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে হবে।
সপ্তাহে একদিন এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে এবং প্রতিদিন দুই থেকে তিনকাপ লাল চা পান করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সাদা চন্দন –
সাদা চন্দনের পাউডার বা গুঁড়া ত্বক শুষ্ক রাখার মাধ্যমে ঘাম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে আছে বিভিন্ন ধরনের এনজাইম যা ত্বকের অতিরিক্ত ঘাম শোষণ করে নেয়। এছাড়া চন্দনের সুগন্ধি ঘাম থেকে তৈরি দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
পরিমাণমতো গোলাপ জলের সঙ্গে এক টেবিল-চামচ সাদা চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এর সঙ্গে অল্প পরিমাণ লেবু মিশিয়ে নিন। তারপর শরীরের যে অংশে বেশি ঘাম হয়, সেখানে পরিষ্কার করে এই পেস্ট লাগিয়ে শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত রাখতে হবে। তারপর হালকা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত নিয়মত এই পেস্ট লাগাতে হবে।
টমেটোর রস –
টমেটোতে আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট যা ঘাম গ্রন্থিকে সংকুচিত করে। তাছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে অতিরিক্ত ঘামানোর প্রবণতা কমিয়ে আনে।
এক সপ্তাহ টানা প্রতিদিন এক কাপ করে তাজা টমেটোর রস খেতে হবে। পরের সপ্তাহ থেকে এক দিন পরপর এককাপ করে টমেটোর রস পান করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
তাছাড়া বেশি ঘাম হয় এমন স্থানগুলোতে টমেটোর রস লাগিয়ে ১০ বা ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিলেই ঘাম কম হবে। ঘাম নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এভাবে গোসল করলে উপকার পাওয়া যাবে।
লেবু –
লেবু প্রাকৃতিক ডিওডরেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা ঘাম থেকে তৈরি দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
এক গ্লাস পানিতে পরিমাণমতো লেবুর রস মিশিয়ে সেটা দিয়ে তোয়ালে ভিজিয়ে সারা শরীর ভালোভাবে স্পঞ্জ করে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে ফেলতে হবে। এভাবে প্রতিদিনই গোসলের আগে গায়ে লেবুর রস মিশ্রিত পানি স্পঞ্জ করে নিতে হবে।
এছাড়া অন্য উপায়েও লেবু দিয়ে ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেক্ষেত্রে সমপরিমাণ লেবুর রস ও বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন ও মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তুলার বলে দিয়ে মিশ্রণটি নিয়ে বেশি ঘামে এমন জায়গাগুলোতে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। একদিন পরপর এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যাবে।
উল্লেখ্য, সূর্যের আলো বা রোদে বের হওয়ার আগে লেবু ব্যবহার উচিত না।

130

নারিকেল তেল –
এই তেলে আছে লরিক এসিড যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এছাড়া নারিকেল তেলের হালকা সুগন্ধ শরীরকে সারাদিন সজীব রাখতে সাহায্য করবে।
খানিকটা নারিকেল তেল এবং শিয়া বাটার একসঙ্গে নিয়ে মাইক্রোওয়েভে এক মিনিট গরম করতে হবে। এরপর মিশ্রণের সঙ্গে ৩ টেবিল-চামচ বেকিং সোডা ও ২ টেবিল চামচ অ্যারারুট পাউডার দিয়ে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা সুগন্ধী তেল মিশিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। এই মিশ্রণ ডিওডরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
অন্যান্য পরামর্শ –
* সারাদিন বেশি পানি পান করতে হবে। এতে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকবে।
* গোসলের সময় ‘অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল’ সাবান ব্যবহার করতে হবে।
* নাইলন ও পলিয়েস্টার কাপড়ের পোশাক ঘাম শোষণ না করে উল্টো ঘাম আটকে রাখে। তাই সহজেই ঘাম শুষে নেয় এমন কাপড়, যেমন: সুতি ও সিল্কের তৈরি পোশাক পরতে হবে।
* ডিওডরেন্ট বা অন্য ঘাম প্রতিরোধক লাগানোর সময় শরীর ঠিকভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
* মসলাযুক্ত খাবার ঘামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।
* মাথার ত্বককে ঘাম থেকে রক্ষা করতে ‘ড্রাই’ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
* ধূমপান, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন নিলে স্বাভাবিকের চেয়ে শরীর ঘামে বেশি। তাই যতটা সম্ভব এসব পরিহার করতে হবে।
* অতিরিক্ত ঘামের জন্য দায়ী বাড়তি ওজন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
* মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ মানসিক চাপ অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ।
* পানি সমৃদ্ধ তাজা ফল ও শাক-সবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।
* এছাড়া বুকে ব্যাথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা বা হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হলে, সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Comments

comments