৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে ফাস্টফুডকে না বলুন !!!

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষ অনেক বেশি আরামপ্রিয় হয়ে উঠছে। মানুষের আয়েশী জীবনের এই ছবি দেখা যায় খাবার-দাবারেও। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে যা ভালো, ভবিষ্যতে তা ভয়ানক হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। বিশেষত খাদ্যগ্রহণে আজকাল আমরা যেভাবে অসচেতনতার পরিচয় দিচ্ছি তাতে করে বড়দের পাশাপাশি স্কুলগামী শিশুরাও ভবিষ্যতে ব্যাপক স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজকাল শিশুরা যেভাবে ফাস্টফুড খাচ্ছে, এদের বয়স ৪০ বছর হবার আগেই হার্ট চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শিশুদের ফাস্টফুডের প্রতি নিরুৎসাহিত করতে অভিভাবক, শিক্ষক, চিকিৎসক, গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক।

রোববার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ: তামাক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

আব্দুল মালিক বলেন, ‘অসংক্রামক রোগের মধ্যে যেমন হার্টের রোগ, ক্যান্সার, ডায়েবেটিস ইত্যাদি একবার হলে তা ক্রনিক ব্যাধিতে পরিণত হয়। এসব ব্যাধিকে প্রতিরোধ করতে হবেঅ’ এজন্য শুধু সরকার নয়, সকল স্তরের জনগণকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেদের সন্তান, পরিবার ও সমাজের জন্য সবাইকে যার যার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকরা যে যার অবস্থান থেকে নৈতিকতার চর্চার করলে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যাবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে। কেউ আইন ভাঙলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ohabitlogo

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সের উপাচার্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্য একটি উন্নয়ন ইস্যু। হেলথ কেয়ার সার্ভিসের মধ্যে বেসিক সার্ভিসগুলোর চার্জ সাধারণ জনগণকে জানাতে হবে। আমাদের দেশের হাসপাতালগুলো যে সার্ভিস চার্জ নিয়ে থাকে তার একটিরও সায়েন্টিফিক বেসিস নেই। ফলে জনগণকে বাড়তি টাকা গুনতে হয়। এ ক্ষেত্রে বেসিক কিছু রোগের জন্য সরকার নির্ধারিত একটি গাইড লাইন থাকতে পারে।’

স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব না- উল্লেখ করে পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘জীবন এবং সম্পদ এ’দুটো রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আমাদের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে দুর্নীতি বড় বাধা।’

তিনি আরো বলেন, ‘সিগারেট, এনার্জি ড্রিংকস এবং ক্ষতিকর ফাস্টফুড উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর সরকার কর্তৃক সিনট্যাক্স (ক্ষতিকর পণ্য বা খাবার উৎপাদনের জন্য আদায়কৃত বিশেষ ট্যাক্স) আরোপ করে রোগ প্রতিরোধের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

সেমিনারে জানানো হয়, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। অর্থাৎ শতকরা হিসাবে এর হার ৪ শতাংশ। এছাড়া তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ প্রতিবছর পঙ্গুত্ববরণ করে এবং ৫৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ অসংক্রামক রোগ। এ অঞ্চলে বছরে প্রায় ৭৯ লাখ মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যায়। বাংলাদেশে ৭০ লাখ ডায়বেটিস রোগী এবং ১২ লক্ষ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে। দেশে প্রতিবছর ২ লক্ষ মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হয় এবং দেড় লক্ষ মানুষ এ রোগে মারা যায় বলে সেমিনারে জানানো হয়।

স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানচেটের তথ্যানুযায়ী, ২০১৩ সালে ১ লাখ ৭৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকের কারণে। ১ লক্ষ ৬ হাজার মানুষ হার্ট অ্যাটাকে এবং ২৮ হাজার মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে মারা গেছে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক জরিপে জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর প্রধান দুটি কারণের মধ্যে অন্যতম একটি হলো হৃদরোগ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলাম। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশের (ডব্লিউবিবি) পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তির সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- দি ইউনিয়নের কারিগরি পরিদর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান শামীম পাটোয়ারী প্রমুখ।

Comments

comments