৩০শে ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার

More results...

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

কিশোরীর প্রথম পিরিয়ড…

হঠাৎ স্কুলে জামার পেছনে দাগের উপস্থিতি! এক বিব্রতকর পরিস্থিতি দিয়ে শুরু হয় কিশোরীর প্রথম মাসিক বা পিরিয়ড। অধিকাংশ কিশোরীর এ ব্যাপারে আগে থেকে সঠিক ধারণা না থাকায় বিষয়টি হয়ে ওঠে আরও অস্বস্তিকর।

সাধারণত ১০-১৬ বছর বয়সে প্রথম মাসিক হয়ে থাকে। এখন বলা হচ্ছে, ৯-১৩ বছর। শারীরিক গঠনভেদে বয়সের তারতম্য হতে পারে। এই শারীরিক গঠন শরীরের ফ্যাট ও শরীরের মোট ওজনের রেশিও এর অনুপাতের ওপর নির্ভর করে। অনেকের ৮-৯ বছরে শুরু হয়ে যায়। আবার অনেকের একটু দেরি হতে পারে।

কত দিন থাকে প্রথম মাসিক?

এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD

সাধারণত ৩-৭ দিন। প্রথম ২ দিন রক্তপ্রবাহ একটু বেশি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে মাসিক নিয়মিত নাও হতে পারে। প্রথম ছয় মাস পর্যবেক্ষণ করতে হবে মাসিকের গতিপ্রকৃতি। বলা হয়ে থাকে সম্পূর্ণভাবে মাসিক প্রতিষ্ঠিত হতে দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার কিশোরীর প্রথম মাসিকের কাছাকাছি সময় অবস্থান করছে?

প্রথম পরিবর্তন স্তনের কিছু গঠনগত পরিবর্তন। যৌনাঙ্গে পিউবিক হেয়ারের সূচনা। প্রথম মাসিকের ৬-১২ মাস আগে তরল স্রাব নিঃসৃত হওয়া। অর্থাৎ বয়সন্ধিকালীন শারীরিক পরিবর্তনগুলো শরীরে আসতে শুরু করলেন বুঝবেন সে প্রথম মাসিকের কাছাকাছি অবস্থান করছে।

প্রথম মাসিক হলে কী কী করবেন: 

মেয়ের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। সাধারণত মেয়েরা মায়ের কাছে এসব ব্যাপারে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। প্রথম ঋতুবতী কিশোরীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তার কোন পর্যবেক্ষণ, সমস্যা, অস্বস্তি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। এই সময় প্রচুর মুড সুইং হয়। তাই শারীরিক যত্নের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নটাও জরুরি। ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা

ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা

প্রথম দিনে তাকে কাছে নিয়ে আস্তে আস্তে মাসিকের ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে বলতে হবে। আপনার নিজের জীবনে প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা মেয়ের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। মাসিক হয়ে গেছে মানে দুনিয়ার সবার কাছে এটা বলার দরকার নেই যে, মেয়ে তো বড় হয়ে গেছে, বিয়ের বয়স হয়ে গেছে! আপনার এই ধরনের কথায় আপনার কিশোরী মেয়ে অজানা অস্থিরতায় পড়তে পারে। মাসিক সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা হয়ে গেলে দুইজনে মিলে মাসিকের সময় ব্যবহার জন্য জিনিসপত্র গুছিয়ে ফেলুন। প্যাড টেম্পন মিনিস্ট্রিয়াল ক্যাপের ব্যবহার ও এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটু একটু করে ধারণা দিতে হবে।

অনেকেই কাপড় ব্যবহার করি কিন্তু ব্যবহার বিধি জানি না। মাসিকের কাপড় পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। কিন্তু অনেকেই লজ্জা ও সংকোচে এই কাপড় রোদে দেন না। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে শুকিয়ে কাপড় ব্যবহার করলে পরবর্তীতে মূত্রনালি ও জরায়ুর সংক্রমণ করতে পারে। এছাড়া পুরনো অপরিষ্কার কাপড়ে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। এখান থেকে পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, ফিলোপিয়ান টিউব ব্লক এবং এর ফলশ্রুতিতে বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত হতে পারে। এ সময় প্যাডের সঙ্গে নরম সুতির আন্ডারগার্মেন্ট ব্যবহার করা উচিত। প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা পর পর কাপড় বা ন্যাপকিন পরিবর্তন করা উচিত। তবে প্রয়োজনে যতবার দরকার ততবার পরিবর্তন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্কুলগুলোতে মাসিকবান্ধব টয়লেট থাকার প্রয়োজনীয়তা সীমাহীন।

মায়েরা প্রথম এক বা দুই বছর মাসিকের সময়কাল পর্যবেক্ষণ করে ক্যালেন্ডারে নোট করে রাখতে পারেন। মাসিকের তারিখ মনে রাখার অভ্যাসটি প্রথম দিন থেকেই শুরু হোক। এখন স্মার্টফোন,স্মার্টওয়াচেও পর্যন্ত মাসিকের ক্যালেন্ডার মেথড নির্দিষ্ট করে রাখা যায়।

মাসিককে সহজ করার জন্য প্রথম দিনটি উদযাপন করা যেতে পারে। মেয়ের পছন্দের কোনো খাবারের আইটেম রান্না করে বা নতুন একটি জামা উপহার দিয়ে বিষয়টি সহজ স্বাভাবিক করে তোলা যেতে পারে। সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। খাবার ও বিশ্রাম গ্রহণ এই সময়ে শরীরের ক্ষয়পূরণ করতে অত্যন্ত জরুরি। স্কুলের ছেলে সহপাঠীদের ভেতরে এই বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার বিষয়টি শিক্ষকদের যত্নসহকারে দেখতে হবে।

অতিরিক্ত কিছু পর্যবেক্ষণ!

যদি অতিরিক্ত রক্তপাত হয় সেক্ষেত্রে সমস্যাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। সাধারণত দিনে পাঁচটির বেশি প্যাড সম্পূর্ণভাবে ভিজে গেলে অতিরিক্ত রক্তপাত বলা হয়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। থাকে শরীরে হরমোনের তারতম্য। বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

প্রথম দিন থেকে তলপেটে ব্যথা হতে পারে হালকা উত্তপ্ত প্যাড বা গরম পানির বোতল তলপেটে দিয়ে সেক দিলে কিছুটা উপশম হয়। তবে, ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় মাসিক শুরু হয় কিন্তু বয়সন্ধিকালীন কোন শারীরিক পরিবর্তন থাকে না। আবার অনেক সময় ১৬-১৭ বছর হয়ে গেলেও মাসিক হয় না। অপুষ্টি, সতিচ্ছেদ পর্দা বন্ধ থাকা, জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি কারণে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। মাসিকের সময় বিশ্রাম থাকতে হবে। তবে, তাই বলে সারাক্ষণ শুয়ে বসে থাকা নয়। হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে।

প্রথম মাসিক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক ঘটনা। এটি মোটেও লজ্জার বা গোপনীয় কিছু নয়। আর একটা কথা, প্রথম মাসিক জীবনে দ্বিতীয়বার আসবে না। তাই আসুন আমরা আমাদের রাজকুমারীদের তৈরি করি এই প্রথম এবং তার জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিনটির জন্য।

সূত্র: বাংলা নিউজ

Comments

comments